মোরশেদ খানের অর্থ পাচার মামলায় জয়েন্ট স্টকের তিন কর্মকর্তাকে তলব
সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিএনপি নেতা এম. মোরশেদ খান ও তার স্ত্রী-পুত্রের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অর্থ পাচার মামলায় জয়েন্ট স্টক কোম্পানির তিন কর্মকর্তাকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার দুদকের উপ-পরিচালক মীর মো. জয়নুল আবেদীন শিবলী এ তলবি নোটিশ পাঠান।
তলবকৃত কর্মকর্তারা হলেন- জয়েন্ট স্টকের সহ-নিবন্ধক রঞ্জিত কুমার রায়, এক্সামিনার অব অব একাউন্টস সিরাজউদ্দিন এবং উচ্চমান সহকারী আবুল কালাম। তলবি নোটিশে তাদের আগামী ৩০ অক্টোবর সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে হাজির হতে বলা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, এম. মোরশেদ খান, স্ত্রী নাসরিন মোরশেদ, পুত্র ফয়সাল মোরশেদ খান স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের হংকং শাখায় ১১টি অ্যাকাউন্ট খোলেন। এর মধ্যে তাদের মালিকানাধীন ফার-ইস্ট টেলিকমিউনিকেশন লিমিটেড’র নামে খোলেন ৭টি অ্যাকাউন্ট। দুটি অ্যাকাউন্ট মোরশেদ খান নিজের নামে এবং দুটি একাউন্ট পুত্র ফয়সালের নামে খোলেন।
বিধি অনুযায়ী, বিদেশে কোনো অ্যাকাউন্ট খোলার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয়। মোরশেদ খান পরিবারের সদস্যরা এ অনুমোদন নেননি। যা অর্থ পাচার আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর গুলশান থানায় মামলা করে দুদক। মামলা তদন্তের শেষ পর্যায়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জয়েন্ট স্টক কর্মকর্তাদের তলব করা হয়।
এর আগে অবশ্য গত ২৬ আগস্ট অর্থ পাচার মামলায় এম মোরশেদ খান ও তার ছেলেকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দুদক।
সেসময় দুদকের জিজ্ঞাসাবাদ শেষে মোরশেদ খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘‘কেবল আইনের প্রতি সম্মান দেখাতেই এখানে (দুদক) এসেছি।’’ অভিযোগের সত্যতা বিষয়ে বলেন, ‘‘আমি আমার বক্তব্য দুদককে বলেছি। দুদক এখন সেটা খতিয়ে দেখবে।’’
দুদকের মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিন কোটি ৯৫ লাখ ৬২ হাজার ৫৪০ মার্কিন ডলার এবং এক কোটি ৩৬ লাখ ৪৫ হাজার ৫৮৩ হংকং ডলার মিলিয়ে মোট ৩২১ কোটি সাত লাখ ৫৩ হাজার ৩৫৯ টাকা পাচার করেছেন।
মামলার এজাহার থেকে আরো জানা যায়, মোরশেদ খানের প্রতিষ্ঠান ফারইস্ট টেলিকম লিমিটেডের মাধ্যমে মোট ১১টি বিভিন্ন ধরনের ব্যাংক হিসাব ব্যবহার করে মোট ৩২১ কোটি সাত লাখ ৫৩ হাজার ৩৫৯ টাকা দেশের বাইরে পাচার করেছেন। এম মোরশেদ খান বিএনপি সরকারের আমলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে এসব অর্থ পাচার করেন। দুদক বিভিন্ন ব্যাংকে ফারইস্ট টেলিকমের নামে চারটি এফডি হিসাব, একটি ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড হিসাব, একটি ইউএসডি কারেন্ট হিসাব ও একটি ইউএসডি সেভিংস হিসাবের খোঁজ পায়। এছাড়া স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের এম মোরশেদ খানের নামে একটি ইউএসডি সেভিংস ও একটি হংকং ডলার সেভিংস হিসাব এবং ওই ব্যাংকেই ছেলে ফয়সালের নামে একটি ইউএসডি সেভিংস ও একটি হংকং ডলার সেভিংস হিসেবে এসব অর্থ লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান মানি লন্ডারিং আইনে এম মোরশেদ খান, তাঁর স্ত্রী নাসরিন খান ও ছেলে ফয়সাল মোরশেদ খানের বিরুদ্ধে মামলা করেন।