জাসাস ছাড়লেও বিএনপি ছাড়ছেন না জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি
দেশের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনীরা ন্যান্সি বিএনপির অঙ্গসংগঠন জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন। তবে ন্যান্সি জানান, জাসাস পদ থেকে সরে দাঁড়ালেও বিএনপির রাজনীতিতে সক্রিয় সমর্থক হয়েই থাকবেন। এ সময় তিনি আরও জানান, রাজনীতি করার জন্য পদ জরুরি নয়।
তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি লিখেছেন, একজন মানুষের জ্ঞান মাপার জন্য যেমন তার সার্টিফিকেট জরুরি নয়, ঠিক তেমনি মন থেকে একনিষ্ঠভাবে রাজনীতি করার জন্যও পদ কোনো জরুরী বিষয় নয়৷ আজ বাংলাদেশের আকাশে বাতাসে শুধু পদের ধ্বনি শুনা যাচ্ছে!! কেমন??!! তা আমাকে হয়তো আর বিস্তারিত বলতে হবেনা। কারণ পত্র পত্রিকা আর সোস্যাল মিডিয়ার কল্যানে সবাই তা দেখতে পাচ্ছেন। আর এটিও হয়তো দেখতে পেয়েছেন যে যারা পদ পদ করে রাস্তায় হাত উচু করে চিৎকার করছে তারা কারা?
দুদিন আগেই ফেসবুকে দেখলাম একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে বিএনপির আন্দোলনের ভেতর আওয়ামীলীগের কর্মী!! তাহলে বুঝুন অবস্থা আসলে কারা করছে পদের জন্য আন্দোলন?? হ্যাঁ আমি বলছিনা যে সেখানে বিএনপির কর্মী নেই বা পদের জন্য আন্দোলন করছে না। আন্দোলন হচ্ছে, তবে তা প্রকৃতপক্ষে দলকে সমালোচিত করার জন্য একটি মহলের উস্কানিতে হচ্ছে বলেই আমি মনে করি।
পদের জন্য আন্দোলন আর লেজে ধরার ঘটনা আজ নতুন নয়। আর শুধু যে বিএনপিতেই পদ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে তা কিন্তু নয়। মনে আছে, ৭৫ এ ট্যাংকের উপর উঠে যারা নেচেছিল আর চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজাতে চেয়েছিল তারা কিভাবে পরবর্তিতে শুধু পদ নয় মন্ত্রিত্বও পেয়েছে।
৮১ তে নেত্রীর হাতে পায়ে তৈল মালিশ করে কিভাবে দলে জায়গা করে নিয়েছিলো আজকের তথাকথিত জনৈক মন্ত্রী। আবার কোন দলের নেতা ২০০১ এ নিজের দল থেকে নমিনেশন না পেয়ে দুঃখে কষ্টে দল ত্যাগ করে বেগম জিয়ার হাতে পায়ে ধরেছিলো বিএনপিতে জায়গা করে নেওয়ার জন্য। আর পদ/মন্ত্রিত্ব পাবার জন্য কে কার হাতে পায়ে ধরেছে সেটিও মানুষ ভুলে যায়নি৷ সুতরাং এটি নিয়ে এত আহামরি করার কিছুই নেই।
ভাবছেন পদ নিয়ে হঠাৎ কেন আমি এত কথা বলছি?? আপনারা জানেন গত ১১/০৯/২০১৪ আমি জাসাস মহানগর দক্ষিন এর সহ সভাপতি হবার মাধ্যমে বিএনপির রাজনীতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে যোগ দেই। তারপর থেকেই একটি মহল এই ব্যাপারটি নিয়ে অনেক উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে আসছেন৷ অনেক আওয়ামী নেতা কর্মীকে দেখেছি তারা বলেছে আমি পদের জন্যই বিএনপিতে যোগ দিয়েছি। অনেক আপত্তিকর মন্তব্যও করেছে অনেকে।
আবার কিছু কিছু অনলাইন হলুদ মিডিয়াকে দেখেছি আমার পদ পাওয়া এবং রাজনীতিতে যোগ দেওয়া নিয়ে এমন অনেক ভিত্তিহীন খবর তারা রসালো হেডলাইন দিয়ে প্রচার করেছে। যার কোনো সঠিক তথ্য আদৌ তাদের কাছে নেই এবং তারা দিতে পারবে না৷ তাদের উদ্দেশ্য হলো আমার নামে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে আমাকে এবং তার সাথে দলকে সমালোচনায় জড়ানো৷ এটি ছাড়া আর কিছুই নয়।
তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলতে চাই- রাজনীতি সম্পর্কে জ্ঞান হবার পর থেকেই আমি বিএনপির রাজনীতি করি। বাংলাদেশে ধানের শীষে ভোট দেওয়া যত ভোটার আছে তারাও আমার মতই বিএনপি করে। তাদের যেমন রাজনীতি করার ক্ষেত্রে বা ধানের শীষে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো ধরনের সাংগঠনিক পদের দরকার হয়নি/নেই, ঠিক তেমনি আমিও মনে করি আমারও রাজনীতি করার জন্য কোনো ধরনের পদের দরকার নেই।
আমার যে পদের লোভ বা প্রয়োজনন নেই তার একটি প্রমান হলো, আজ (২১/১০/২০১৪) আমি আমার যে বর্তমান পদটি ছিলো সেটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। অর্থাৎ এই মুহুর্তে আমি আর জাসাসের ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সহ সভাপতি পদে নেই।
কিন্তু হ্যাঁ…..পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছি তাই বলে এটি ভাবার কোনো সুযোগ নেই যে আমি রাজনীতি বা বিএনপি থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আমি বিএনপির রাজনীতি অতীতে করে এসেছি, এখনো মনে প্রাণে করি এবং আমি ব্যাক্তি ন্যান্সিকে আল্লাহ যতদিন বাঁচিয়ে রাখবে ততদিন-ই আমি বিএনপির রাজনীতি করবো।
যারা বলেন বিএনপিতে কর্মীরা পদের জন্য রাজনীতি করে তাদের বলছি, চিলে কান নিয়ে গেছে টাইপের মিথ্যা সমালোচনায় অযথা সময় নষ্ট না করে দেশ এবং দশের জন্য কিছু করার চেষ্টা করুন। এতে নিজের যেমন ভালো হবে তেমনি দেশের কিছুটা হলেও মঙ্গল হব।
সবাইকে ধন্যবাদ।