নববধূ ঘরে এলে কাজের স্পৃহা বেড়ে যাবে: রেলমন্ত্রী
আগামী ৩১ অক্টোবর শুক্রবার ৬৭ বছরের একাকিত্বের জীবন অবসান ঘটিয়ে বিয়ের পিঁড়িতে বসে আনুষ্ঠানিকভাবে সংসার জীবন শুরু করতে যাচ্ছেন রেলমন্ত্রী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম আহবায়ক মুজিবুল হক মুজিব। পরিশীলিত রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত ও চৌদ্দগ্রাম থেকে তিন তিন বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মুজিবুল হকের এই বিয়ে নিয়ে শুধু কুমিল্লা নয় ৫৫ হাজার ৫শ ৯৮ বর্গমাইলের এই বাংলাদেশেই এখন এক আলোচিত ঘটনা হিসেবে দেখা দিয়েছে। তাই স্বাভাবিক কারণেই রেলমন্ত্রীর এই বিয়ের খুঁটিনাটি নিয়েও পাঠকের জানার কৌতুহল বেড়ে গেছে ব্যাপকভাবে। পাঠকের জানার আগ্রহের দিকটি বিবেচনা করেই দৈনিক আমাদের কুমিল্লা গতকাল বুধবার সকালে ঢাকা মিন্টু রোডস্থ রেলমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে মন্ত্রীর মুখোমুখি হয়। খবর বাংলা২৪.কমের পাঠকদের জন্য রেলপথ মন্ত্রীর একান্ত আলাপচারিতাগুলো হুবহু নিচে দেওয়া হল।
প্রশ্ন: সকল জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে আগামী ৩১ অক্টোবর আপনি বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন- এই মুহূর্তে আপনার অনুভুতি কেমন?
মুজিবুল হক মুজিব: অবশ্যই ভাল লাগছে। আপনারা দোয়া করবেন আমি যাতে সুখি হতে পারি। একজন মুসলমান হিসেবে ধর্মীয় রীতিনীতি মেনেই আল্লাহর মেহেরবানীতে আমি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে যাচ্ছি।
প্রশ্ন: হঠাৎ একদিন দেখা, দেখা থেকে ভাল লাগা পরে পরিণয়: আসলে সত্যি করে বলবেন কি হবু বধূ হনুফা আক্তার রিক্তার কোন দিকটি আপনার ভাল লেগেছে?
মুজিবুল হক মুজিব: পর্দানশীন, মার্জিত এবং নামাজি হওয়ার কারণে তাকে আমার ভাল লেগেছে।
প্রশ: বাংলাদেশের ইতিহাসে আপনিই একমাত্র ব্যক্তি যিনি মন্ত্রী থেকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন। ফলে শুধু কুমিল্লা নয় সারা দেশেই ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?
মুজিবুল হক মুজিব: একজন মন্ত্রী বিয়ে করবে বিষয়টি আলোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। এটাকে আমি নেতিবাচক হিসেবে দেখছি না। কিন্ত দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ এই বিয়ে নিয়ে উভয় পরিবারের কাছে অনেক মিথ্যা কথা ছড়াচেছ যা নোংরামীর পর্যায় পড়ে। এটা ঠিক না। এই সমস্ত মিথ্যা কথা বলে যারা সুখানুভব করছে তাদের কে এ পথ থেকে বিরত থাকার আহবান জানাচ্ছি। কারণ, আমাদের মহান আল্লাহ পাকও গিবত পছন্দ করেন না।
প্রশ্ন: আপনার সারাটা জীবন ব্যয় হচ্ছে রাজনীতি করে। বিয়ের পর ভাবীকে কি রাজনীতিতে আনার কোন উদ্যোগ নেবেন ?
মুজিবুল হক মুজিব: না । রাজনীতি সে করবে না।
প্রশ্ন: আপনি এত দিন ছিলেন সংসদ ভবন হোস্টেলে। আপনার কাছে সাধারণ জনগণ সহজেই যেতে পারত। এখন সংসারী হওয়ার কারণে মন্ত্রী পাড়ায় এলেন। এলাকার জনগণ তো আগের মতো আপনার কাছে আসতে পারবে না। কারণ, এখানে নিয়মের কিছুটা কড়াকড়ি আছে।
মুজিবুল হক মুজিব: না। কথাটি ঠিক না। আমি এখানে আসার পর আমার এলাকার জনগণের আসা যাওয়া আরো বেড়ে গেছে।
প্রশ্ন: অনেকে বলছে সংসার জীবন শুরু করার পর আপনার এলাকার সাধারণ জনগণ আপনাকে আগের মত আর কাছে পাবে না এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কী ?
মুজিবুল হক মুজিব: দেখুন, আমি মুজিবুল হক একজন কৃষকের ছেলে। চৌদ্দগ্রামের আমার আপামর জনসাধারণের কারণেই আজ আমি গত তিন বার এমপি হয়েছি, জাতীয় সংসদের হুইপ হয়েছি, মন্ত্রী হয়েছি এবং মন্ত্রী সভায় এখনো আছি। সুতরাং আমি বিয়ে করার পর আমার জনগণকে আমি ভুলে যাব এটা আপনি কীভাবে বললেন? চৌদ্দগ্রামের মাটি ও মানুষ আমার রক্তের সাথে মিশে আছে। শুধু চৌদ্দগ্রাম নয় আমার এই দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আমার কাছে যারাই তাদের সমস্যা নিয়ে এসেছে আমি চেষ্টা করছি এবং এখনো করছি সাধ্যমত সবার উপকার করার। সুতরাং জনগণই আমার প্রথম এবং শেষ ঠিকানা।
প্রশ্ন: আপনি কি মনে করেন না বিয়ের পর আপনার সামগ্রিক কার্যক্রমে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটতে পারে?
মুজিবুল হক মুজিব: প্রশ্নই আসে না। নববধূ ঘরে এলে আমার কাজের স্পৃহা আরো বেড়ে যাবে এবং জনগণের কল্যাণে আরো বেশী নিবেদিত হয়ে কাজ করতে পারব ইনশাল্লাহ।
প্রশ্ন: আপনি সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন অসংখ্য লোক আপনার ড্রয়িং রুমে আবার যখন ঘুমাতে যান তখনো অসংখ্য লোকের সাথে কথা বলেই আপনাকে বেডে যেতে হয়। গোটা রাজনৈতিক জীবনেই আপনার এভাবে চলে আসছে। আপনার নব বধূ এই বিষয়টি কীভাবে নিতে পারে বলে আপনি মনে করেন?
মুজিবুল হক মুজিব: আশা করি একজন শিক্ষিত মেয়ে হিসেবে সে এটা বুঝবে। আমি তাকে বুঝিয়ে বলব। এবং আমার সার্বিক কর্মকাণ্ডে সে সহযাত্রীর ভূমিকা পালন করবে বলে বিশ্বাস করি।
প্রশ্ন: বিয়ের পর কোথায় হানিমুনে যাবেন বলে ঠিক করেছেন?
মুজিবুল হক মুজিব: এখনো ঠিক করিনি।
প্রশ্ন: আচ্ছা জীবনের এই পর্যায়ে এসে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলেন, বিষয়টি একটু খুলে বলবেন কি?
মুজিবুল হক মুজিব: সত্যি কথা হচ্ছে, জীবনের এই পর্যায়ে এসে আমি উপলদ্ধি করলাম, বিয়ে মানুষের জীবনকে পূর্ণতা দেয়। একা থাকা যায় না। জীবনের একটা সময় এসে সঙ্গীর প্রয়োজন হয়। তাই এ সিদ্ধান্ত।
প্রশ্ন: চৌদ্দগ্রামের জনগণসহ আপনার শুভানুধ্যায়ীদের উদ্দেশ্যে এই মুহূর্তে আপনার বক্তব্য কী?
মুজিবুল হক মুজিব: আমার সবার উদ্দেশ্যে একটাই বক্তব্য, আমার নতুন জীবন শুরুতে সবার কাছে আমি দোয়া চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
প্রশ্ন: সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
মুজিবুল হক মুজিব: আপনাকেও ধন্যবাদ জানাই।
– See more at: http://www.priyo.com/2014/10/23/114540.html#sthash.Ci88ZKAn.dpuf