নতুন ধারায় বিসিএস
আবেদন চলছে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষার। এবারের পরীক্ষার্থীদের জন্য পরামর্শ দিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কর্মরত ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় সম্মিলিত মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকারী রিদওয়ান ইসলা
বদলে গেছে ৩৫তম বিসিএস পরীক্ষার ধরন। এবার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় নতুন যুক্ত করা হয়েছে ভূগোল (বাংলাদেশ ও বিশ্ব), পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং নৈতিকতা, মূল্যবোধ ও সুশাসন। এ ছাড়া পরিবর্তন এসেছে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার বিষয় ও নম্বর বণ্টনের ক্ষেত্রেও। তাই পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে জানা জরুরি।
ইতিমধ্যে হয়তো বিষয়বস্তু সম্পর্কে আপনারা জেনেও গেছেন। নতুন নিয়মগুলোতে চোখ বুলালে একটি বিষয় সুবিধাজনক মনে হবে, তা হলো প্রিলিমিনারি পরীক্ষার জন্য আর আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হবে না। লিখিত পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করলেই প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রস্তুতি হয়ে যাবে। সব বিষয়ের আদ্যোপান্ত পড়তে হবে।
নতুন নিয়মে এবারই যেহেতু প্রথম, তাই অনেকের মধ্যে একটু শঙ্কা হয়তো কাজ করতে পারে। আমি বলব, যতটা সম্ভব এ চাপটা এড়িয়ে চলুন। কারণ, নতুন সিলেবাসভুক্ত প্রতিটি বিষয়েই কিন্তু আগেও প্রস্তুতি নিতে হতো। তাই সিলেবাস পরিবর্তনের বিষয়টিকে চাপ হিসেবে দেখা উচিত হবে না। মনে রাখা দরকার, বিষয়ের কলেবর যেমন বেড়েছে, নম্বরও কিন্তু তেমনি বেড়েছে। তাই এ সুযোগটাকেই কাজে লাগাতে হবে।
বিসিএসের তিনটি ধাপের মধ্যে প্রথমেই হলো প্রিলিমিনারি টেস্ট। নতুন নিয়ম অনুযায়ী প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়, দুই ঘণ্টা সময়ে ১০টি বিষয়ের ওপর মোট ২০০ নম্বরের এমসিকিউ পদ্ধতিতে উত্তর দিতে হবে। এখানে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষেত্রে বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর ওপর নজর দিতে হবে। বাংলা সাহিত্যের প্রধান লেখকদের সব বইয়ের নাম ও বিষয় সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে। এ থেকে প্রশ্ন আসে। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলির জন্য পত্রিকা পড়া জরুরি। পত্রিকার উপসম্পাদকীয় ও কলামগুলো পড়লে অনেক তথ্য জানা যায়, সমসাময়িক ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে ধারণা স্পষ্ট হয়।
এ ছাড়া বাংলাদেশের সংবিধান সম্পর্কে ধারণা থাকা জরুরি। গাণিতিক যুক্তির জন্য অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির গণিত বইগুলো চর্চা করা দরকার। নিয়মিত গণিত চর্চার বিকল্প নেই।
একটু লক্ষ করলে দেখা যাবে, নতুন সংযোজিত বিষয়, যেমন: ভূগোল, কম্পিউটার ও তথ্যপ্রযুক্তি, মানসিক দক্ষতা সম্পর্কে কিন্তু আগেও প্রশ্ন আসত। বর্তমানে শুধু বিষয়বস্তুগুলো আলাদা করে নম্বর বণ্টন করা হয়েছে। অতএব, প্রস্তুতি একইভাবে নিলেই চলবে। পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য নবম-দশম শ্রেণির সামাজিক বিজ্ঞান বইটি বেশ কাজে দেবে।
বিসিএস পরীক্ষায় ভালো করা মূলত নির্ভর করে ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞান ও বাংলা—এ চারটি বিষয়ের ওপর। এ চারটি বিষয় জোর দিয়ে পড়ুন। যে প্রশ্নগুলো কঠিন মনে হবে, সেগুলো একাধিকবার পড়ুন। যদিও নতুন নিয়ম, তবু পরীক্ষায় ভালো করার জন্য বিগত পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সমাধান করে ফেলুন। এতে করে আপনার প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ধারণা জন্মাবে।