কলকাতা থেকে বাংলাদেশে আসার নতুন ট্রেন, বৈঠক কলকাতায়
বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে কলকাতা থেকে খুলনা পর্যন্ত শেষ বারের মতো যাত্রীবাহী ট্রেন এসেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে। শেষ ট্রেনটিতে এসেছিলেন শুধুই সেনা জওয়ানরা। এই রুট দিয়েই ফের যাত্রীবাহী ট্রেন চালাতে উদ্যোগী হয়েছে দুই দেশের সরকার। বিষয়টি নিয়ে ভারতের রেল বোর্ডের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে শুক্রবারই বাংলাদেশ রেল মন্ত্রণালয়েকের দুই কর্মকর্তা কলকাতায় গিয়ে পৌঁছেছেন।
এ দিন মৈত্রী এক্সপ্রেসে কলকাতা গিয়েছেন রেলের এডিজি (ট্রেন চলাচল) শাহ জহিরুল ইসলাম ও এডিজি (রোলিং স্টক) খলিলুর রহমান। ঢাকায় ভারতের হাইকমিশনের এক অফিসারও গিয়েছেন তাঁদের সঙ্গে। সোম ও মঙ্গলবার দুই দফায় তাঁরা বৈঠক করবেন ভারতীয় রেল বোর্ডের প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন পূর্ব রেলের কর্তারাও। নতুন রুট পেট্রাপোল-বেনাপোল দিয়ে যাত্রিবাহী ট্রেন চালানো এবং গেদে-দর্শনা দিয়ে চালু দু’জোড়া মৈত্রী এক্সপ্রেসের সংখ্যা বাড়ানো নিয়েই এই বৈঠকে আলোচনা হওয়ার কথা।
আপাতত কলকাতা স্টেশন থেকে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট পর্যন্ত চলাচল করে মৈত্রী এক্সপ্রেস। নতুন রুটের এই ট্রেনটির নামও মৈত্রী এক্সপ্রেস রাখারই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে রেল সূত্রের খবর। এই ট্রেনটিও কলকাতা স্টেশন থেকেই ছাড়ার প্রস্তাব রয়েছে। কলকাতার বৈঠকে অভিবাসন দফতর, শুল্ক দফতর এবং সীমান্তরক্ষীদের কেউ থাকছেন না। প্রাথমিক আলোচনা সম্পূর্ণ হলে দিল্লিতে ফের সব পক্ষকে নিয়ে বৈঠক করা হবে। কলকাতা-খুলনা প্রস্তাবিত ট্রেনটিতে চলন্ত অবস্থায় কামরার মধ্যেই যাত্রীদের পাসপোর্ট-ভিসা পরীক্ষার প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে চালু মৈত্রী এক্সপ্রেসে এই পরীক্ষার জন্য সীমান্তের দু’দিকে কয়েক ঘণ্টা করে ট্রেনটিকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। সম্প্রতি এই সময় কিছুটা কমানো হয়েছে।
রেল সূত্রের খবর, সময় কমানোর ফলে গত বছরে (২০১২-১৩ সালে) মৈত্রী এক্সপ্রেসের যাত্রী সংখ্যা এক লাফে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এর পরেই দুই দেশের রেল কর্তৃপক্ষ বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে যশোর হয়ে খুলনা পর্যন্ত নতুন ট্রেন চালাতে আগ্রহী হয়। রেল বোর্ড সূত্রে খবর, বিষয়টি নিয়ে দু’দেশের রেল কর্তাদের মধ্যে ইতিমধ্যেই কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে। তবে ট্রেন তাঁরা চালালেও এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার দু’দেশের স্বরাষ্ট্র ও বিদেশ মন্ত্রকের।
রেল সূত্রে খবর, বনগাঁ সীমান্ত দিয়ে রেল যোগাযোগের পরিকাঠামো প্রায় ১০০ বছর ধরেই রয়েছে। আগে ওই লাইন দিয়ে কলকাতা থেকে উত্তরবঙ্গ ও আসামমুখী ট্রেন চলত। কিন্তু তার পরে দেশ ভাগের পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে এখনো ওই রুটে মালগাড়ি চলে।