গোলাম আযমের জানাজায় এত মানুষ কেন? পীর হাবিবুর রহমান
এক. একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দণ্ডিত এবং ১৫ মাসের কারাভোগের মধ্যে ৯২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করা অধ্যাপক গোলাম আযমের জানাজায় এত মানুষের ঢল নামল কেন? স্বাধীনতাবিরোধী যেসব ব্যক্তি ও সংগঠন একাত্তরের সুমহান মুক্তিযুদ্ধকালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বর্বরতার সঙ্গী হয়েছিল তাদের মধ্যে যে ব্যক্তি ও সংগঠনের নাম শীর্ষে আসে তিনি হচ্ছেন গোলাম আযম ও তার দল জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবি গণমানুষের দাবিতে পরিণত হয়েছিল। দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার জায়গায় বছরের পর বছর ঠাঁই নিয়েছিল। ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে গণরায় নিয়ে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে সেই বিচারের কাজ শুরু করেছিলেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সামনে তদন্ত সংস্থার আনা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করে প্রসিকিউটররা যুক্তিতর্কের মাধ্যমে একটি উন্মুক্ত বিচারে অপরাধীদের দণ্ডিত করতে পেরেছিলেন। কিন্তু প্রথম বিচারের রায় থেকে গণজাগরণ মঞ্চ ঘিরে যেসব ঘটনা ঘটে গেছে তার সবটাই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এই বিশাল জনগোষ্ঠীর আকাঙ্ক্ষার পক্ষে যায়নি। প্রবীণ রাজনীতিবিদ হায়দার আকবর খান রনো গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনে এক কলামে লিখেছেন, ‘বিচার করবেন বিচারকরা যে সে রায় দেবে কেন’? শহীদ মিনার পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সেখানে যারা মুক্তিযুদ্ধ দেখেনি জানেও না তারা দাঁড়িয়ে যাকে তাকে স্বাধীনতাবিরোধী বলে রায় দেওয়ার অধিকার কোথা থেকে রাখে? শহীদ মিনার জনগণের সম্পদ, মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনকে যারা মেনে নেননি তারা সেখানে যাবেন না। সেটি দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। রনো সত্যি বলেছেন, সমাজে ফ্রিস্টাইল নৈরাজ্য, পরমতসহিষ্ণুতার অভাব, ভিন্নমতকে দমন-পীড়ন বা রোধ করে রাখার অপচেষ্টা সব মিলিয়ে যে অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে, বিশাল জনগোষ্ঠীর বুকে রাজনৈতিক স্বার্থে দলবাজি, ক্ষমতাবাজির অন্ধ মোহে বিভক্তির যে তিক্ততা তৈরি করা হয়েছে, রাজনীতিতে গণতন্ত্রায়ন ও মূল্যবোধের সংকট তৈরির মাধ্যমে আদর্শহীন রাজনীতিকে লালন করা হয়েছে তার কুফল হিসেবে এত দমন-পীড়নের মধ্যেও, ফেসবুক, ব্লগজুড়ে গালমন্দ আর আস্ফালনের পরও একাত্তরের ঘাতকদের প্রতীক গোলাম আযমের জানাজায় এত মানুষের ঢল নেমেছে।
দুই. গোলাম আযম মারা গেলেও, চিরনিদ্রায় শায়িত হলেও লাখো শহীদের রক্তে রঞ্জিত বাংলাদেশে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত-শিবিরের মিছিল পর্দার অন্তরালে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। শুধু জামায়াত-শিবিরই নয়, জঙ্গিবাদের তৎপরতা প্রতিদিন খবরের শিরোনাম হচ্ছে। এর আগে শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব দেখেছে বিশ্ব। তারও আগে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর রাজপথ কাঁপানো স্লোগান শুনেছে দেশ ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’।
আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের প্রকাশ্য দিবালকে উড়িয়ে দিতে কী নৃশংস গ্রেনেড হামলা চালানো হয়েছে। কী বর্বরোচিতভাবে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়াকে বোমা হামলায় হত্যা করা হয়েছে। সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মতো পার্লামেন্টারিয়েনের ওপর বার বার হামলা চালানো হয়েছে। সিলেটের সাবেক মেয়র বদরউদ্দিন আহমদ কামরানকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। বিরোধী দলে থাকাকালে লাশের বহর টানতে গিয়ে ক্লান্ত হয়েছিলেন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থাকে প্রাতিষ্ঠানিক ও শক্তিশালী রূপ না দেওয়ার কারণে, জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিমূল নড়বড়ে হয়ে যাওয়ায় আজকের বাংলাদেশের অস্থিরতাকে অশনিসংকেত মনে করা হচ্ছে। চিন্তাশীল মানুষেরা উদ্বিগ্ন। যে মহান নেতার হাত ধরে একটি জাতি স্বাধিকার, স্বাধীনতার পথে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে গৌরবের মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে প্রিয় মাতৃভূমির স্বাধীনতা অর্জন করেছিল সেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পরিবার-পরিজনসহ রাতের অাঁধারে হত্যা করে বাংলাদেশকে সামরিক শাসনকবলিত করা হয়েছিল। সেসব শাসন দেশের জন্য, জনগণের জন্য সুখের হয়নি। সামরিক শাসন-উত্তর গণতন্ত্রের ২৩ বছরে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা লালনে ব্যর্থতা ও মানুষকে দেওয়া অঙ্গীকার পূরণ না করার কারণে দেশবাসী হতাশ। ১/১১ কালে সেনা সমর্থিত সুশীল সরকারও চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। আকাশছোঁয়া স্বপ্ন দেখিয়ে দেশের রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীদের হেনস্তা করে জন-অসন্তোষ তৈরি করে সমর্থকদের প্রতি সমাজে অবিশ্বাস তৈরি করিয়ে করুণার বিদায় নিয়েছে। মাঝখানে পিছিয়েছে রাজনীতি, অর্থনীতি আর বিশ্বাস-আস্থা। অনেকগুলো রাষ্ট্র শাসনের ফর্মুলা ৪৩ বছরে ভেস্তে গেছে। স্বাধীনতা-উত্তরকাল থেকে বামপন্থিদের রণকৌশলের নামে কারও সরকারের প্রতি দাসত্ব কারও বা সামরিক শাসকদের কাছে আত্দসমর্পণ সমাজতন্ত্রের রাজনীতিকেও নির্বাসনে পাঠিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত হলেও একমাত্র ধর্মান্ধ রাজনৈতিক শক্তি এখনো সমহিমায় টিকে আছে। পর্যবেক্ষকরা উদ্বিগ্ন, সংসদীয় গণতন্ত্রের রাজনীতি জনমানুষের আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী পথ চলতে ব্যর্থ হলে অদূর ভবিষ্যতে ধর্মান্ধ রাজনৈতিক শক্তির উত্থান ঘটার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বড় বড় রাজনৈতিক দলগুলোর লক্ষ্যহীন আদর্শহীন ও জনগণ এড়িয়ে বিদেশনির্ভর ক্ষমতার রাজনীতির পথ মানুষকে নিষ্প্রাণ করে দিয়েছে। তাই উদ্বেগ আরও বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মান্ধ মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঘটলে আওয়ামী লীগ, বিএনপির যত না ক্ষয়ক্ষতি হবে তার চেয়ে বেশি হবে দেশ ও জনগণের। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গৌরব ধুলোয়ই লুটোবে না, নৈরাজ্য চরম আকার নেবে। দেশে দেশে তা-ই হয়েছে। আমাদের এখানে কি সামরিক শাসক কি নির্বাচিত সরকার- সবাই ধর্মান্ধ গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের মতোন দল জামায়াতকে নিয়ে ক্ষমতার জন্য এক টেবিলে বসেছে, আন্দোলন করেছে। পরকীয়া প্রেম করেছে। বিএনপি জামায়াতসহ ধর্মান্ধ শক্তিকে নিয়ে আন্দোলনই করেনি, সরকারের অংশীদারিত্ব দিয়েছে। রক্তে অাঁকা পতাকা ঘাতকের গাড়িতে তুলে দিয়েছে। বাসরশয্যায় সংসার অনেক দূর টেনেছে। তবু দল দুটি জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়ে এদের প্রশ্নে অভিন্ন অবস্থান নেয়নি! এতে ধর্মান্ধ শক্তির আকার দিনে দিনে বড় হয়েছে।
তিন. মৃত গোলাম আযমের কফিনে একদল ব্লগারের জুতো নিক্ষেপ কিংবা ফেসবুক স্ট্যাটাস কখনই মৌলবাদী শক্তির উত্থান ঠেকাতে পারবে না। ঘৃণার বিপরীতে ঘৃণার প্রকাশ ঘটানো যাবে। সরকার সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গোলাম আযমের জানাজায় বাধা দেয়নি। কারণ আইন অনুযায়ী সব চলে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। আইন সরকারের জন্য নয়, আইন-সংবিধান শুধু শাসকের জন্য নয়, দেশ ও মানুষের জন্য। মানুষের কল্যাণেই তা প্রণয়ন ও প্রয়োগ। একাত্তরের অপরাধের জন্য তার বিচার হয়েছে। সাজা ভোগকালে তিনি ইন্তেকাল করে চলে গেছেন। তার জানাজার মধ্য দিয়ে দেখা গেছে তার রাজনৈতিক আদর্শের যে আদর্শ আমাদের সুমহান মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে তার অনুসারীদের সংখ্যা কতটা বেড়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার হচ্ছে। বিচারে তারা তাদের কৃতকর্মের জন্য, অমার্জনীয় অপরাধের জন্য সাজা ভোগ করছেন। এমনকি জামায়াতে ইসলামী নামে দলটি নিষিদ্ধও হয়তো হচ্ছে। কিন্তু এসবই কি শেষ সমাধান? রাজনৈতিকভাবে জনগণকে নিয়ে যদি আদর্শনির্ভর মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত গণতান্ত্রিক চিন্তা ও চেতনায় পরিপুষ্ট, পরিশীলিত, জুলুম নির্যাতন, দলীয়করণ ও দুর্নীতিমুক্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা দাঁড় করানো না যায় তাহলে এই শক্তিকে রুখে দাঁড়ানো কঠিন। আমাদের রাজনৈতিক ইতিহাসে তরুণরাই প্রতিটি বাঁকে ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে প্রতিরোধে আর পরিবর্তনে। সেই খানে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ রেখে, অছাত্র টেন্ডারবাজ নিয়ন্ত্রিতদের হাতে ছাত্র রাজনীতি দিয়ে গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের সুযোগ তৈরি করে দিয়ে মানুষের আস্থার জায়গা থেকে সরিয়ে দিলে তারা প্রতিরোধ করতে পারবে না। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং মাদ্রাসাগুলোতে তো বটেই ধর্মান্ধ রাজনৈতিক শক্তির বিশেষ করে জামায়াত-শিবিরের সাংগঠনিক তৎপরতা ব্যাপক আকার নিয়েছে। সেই খানে ছাত্রছাত্রীদের হৃদয় জয় করা রাজনীতি থেকে সরে গিয়ে আদর্শহীন অন্ধকারে পথ হাঁটা প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো দিনে দিনে ক্ষয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টিকে উপলব্ধি করে জাতীয় রাজনীতির স্টিয়ারিং যারা নিয়ন্ত্রণ করেন তাদের বোধোদয় না হলে ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর শক্তি বাড়বে, কমবে না। মানুষের আস্থা অর্জনের পথ ছাড়া কোনো পথ নেই। আমাদের রাজনীতির পূর্বসূরি স্বাধীনতা সংগ্রামীরা মুসলিম লীগসহ আইয়ুব খানের আজ্ঞাবহদের শক্তির বিপরীতে আদর্শ, সততা ও নীতিবোধের রাজনীতি নিয়েই জনগণকে সংগঠিত করে গণরায় নেওয়ার মাধ্যমে পরাস্ত করেছিলেন। জনগণকে নিয়েই পরিস্থিতি মোকাবিলা গণতান্ত্রিক রাজনীতির সর্বোত্তম পথ। জামায়াত-শিবির আর ধর্মান্ধরা তাদের আদর্শবোধ নিয়ে মানুষক টানছে অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে বিভক্তি, ক্ষমতার লড়াই, মূল্যবোধহীন দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতি জনগণের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
চার. ছোট্ট দেশ মানুষের চোখ কান খোলা। মুহূর্তের মধ্যে দুনিয়ার খবর চলে আসে প্রযুক্তির উন্নয়নের সুবাদে। সত্যকে আড়াল করার সুযোগ নেই। মিথ্যাকে বার বার বলেও সত্য বানানোর দিন শেষ। কোনোকালেই মিথ্যা জয়ী হয়নি। কোনোকালে জয়ী হবেও না। মানুষ দেখছে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা কী করছেন। কীভাবে রাজনীতিবিদরা রাজনীতিজীবী হয়ে গেছেন। কীভাবে রাজনীতিতে হাঁটাহাঁটি করে রাতারাতি বিত্ত-বৈভবের মালিক হয়ে যাচ্ছেন। মানুষ দেখছে, মানুষ শুনছে, ব্যবসায়ীরা চড়া ব্যাংক সুদ দিয়ে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখছেন না। ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতাই চলছে না কল কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য। প্রশাসনে দলীয়করণের সর্বগ্রাসী রূপ। পরীক্ষা পাসের ফুর্তিতে হারিয়ে যাচ্ছে মেধা। হয় নিয়োগ বাণিজ্য না হয় নিয়োগ দলীয়করণ। দেশের জনগণ ও প্রবাসীরা হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে জীবিকাই নির্বাহ করছে না দেশকে ট্যাঙ্ দিচ্ছে। সেখানে দুর্নীতির মহোৎসব মানুষের বুকে রক্তক্ষরণ ঘটাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনে অস্ত্রবাজি, টেন্ডারবাজি, জেলায় জেলায়, শহর গ্রামে দখলবাজি সর্বত্র কালো থাবা বসিয়েছে। অবৈধ অর্থ উপার্জন ও বিদেশে পাচার স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১/১১-এর ব্যর্থতার কারণে নব্য ও পুরনো লুটেরা সিন্ডিকেট মিলে অনৈতিক উপার্জন নিরাপদ করতে বিদেশে পাচার করছে। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি গণতান্ত্রিক রাজনীতির বিপরীতেই যাচ্ছে। গণতন্ত্রের বিপরীতে কোনো অন্ধকার পথ বা ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীর উত্থান মানুষের কাম্য নয়। গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনার উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে আদর্শ ও মূল্যবোধের রাজনীতির পুনরাবৃত্তি ঘটিয়ে কেবল সব অপশক্তিকে রুখে দাঁড়ানো সম্ভব। কারণ তখন জনগণ রাজনৈতিক শক্তির পাশে থাকবে। অন্যথায় শুধু প্রশাসন দিয়ে দমন নির্যাতন আর ঘৃণা, হিংসা-বিদ্বেষের আক্রোশে নৈরাজ্য তৈরি সম্ভব। প্রতিরোধ সম্ভব নয়। ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর নেপথ্যে কোনো কোনো বিদেশি শক্তিই নয়, তাদের অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যও শক্তিশালী। এই শক্তিকে রুখতে হলে তাই জনগণের আস্থা অর্জনের পথই শেষ পথ। আর এই পথে রাজনৈতিক শক্তির সমঝোতা এবং আদর্শনির্ভর সততা এবং ঐক্যের রাজনীতিই একমাত্র পথ। না হয় কাল গোলাম আযমের জানাজায় মানুষের ঢল দেখা গেছে। আগামীতে হয়তো ধর্মান্ধ শক্তির মিছিলে তাদের অনুসারীদের সে াত দেখতে হতে পারে। তাই রাজনৈতিকভাবে জনগণের আস্থা অর্জনের পথ নেওয়ার এখনই সময়।