অপসারিত মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর চিঠি – বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম
২৩ সেপ্টেম্বর সৌদি আরবের ৮৪তম জাতীয় দিবসে কূটনীতিকদের সঙ্গে আলাপের এক ফাঁকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার চিঠি নিয়ে কথা উঠেছিল। মনে হলো বেশ আন্তরিকতার সঙ্গেই কয়েকজন কূটনীতিক চাচ্ছিলেন জাতীয় সম্পদ হিসেবে পত্রগুলো মানুষের সামনে তুলে ধরি। ইতিমধ্যে আমাকে লেখা জননেত্রীর বেশ কিছু চিঠিপত্র ‘তারা আমার বড় ভাইবোন’ বইয়ে ছাপা হয়েছে। তাই ভেবেছিলাম কয়েক পর্বে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর গভীর আবেগ মিশ্রিত দেশপ্রেমে ভরা পত্রগুলো জনসম্মুখে প্রকাশ করি। পত্রগুলোতে শুধু আমাকে নিয়ে তার ভাবনাই প্রকাশ পায়নি, তার মর্মবেদনা, অন্তরজ্বালা এবং শান্তি-অশান্তির প্রতিফলনও ঘটেছে। ২৯-৩০ বছর আগের লেখা পত্রগুলো একজন মানুষ হিসেবে, একজন মা, একজন নারী বা বোনের ছবি প্রতি পরতে পরতে ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠেছে। একজন মানুষের যখন নিখাদ দেশপ্রেম থাকে তখনই অমনভাবে লিখতে পারেন। পত্রগুলো একের পর এক তুলে দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মানুষের জীবন কখনো সরলরেখায় সোজা পথে চলে না, উত্থান-পতন লেগেই থাকে। তাই গত পর্বে বড় ভাইকে নিয়ে চরম উত্তেজনায় সেদিকে এগোতে পারিনি। পাঠকের মনে তো প্রশ্ন থেকেই যাবে, তারা তীর্থের কাকের মতো বসে থাকবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঐতিহাসিক চিঠির জন্য। গত কয়েক বছরে পাঠকদের সানি্নধ্য আমায় উজ্জীবিত করেছে। কোনোক্রমেই তাদের বঞ্চিত বা অবহেলা করতে চাই না। তাই গত পর্বে কোনো চিঠি দিতে না পারলেও এ পর্বের শেষে অবশ্যই দেব।
বাংলাদেশের ইতিহাসে মন্ত্রিসভা থেকে বরখাস্ত এই প্রথম। আগেই বলেছি, মন্ত্রিপরিষদের সদস্য পছন্দ করেন বা করার অধিকার অনেকাংশেই প্রধানমন্ত্রীর। একক নেতৃত্ব না থাকলে সার্বিক অর্থে যাকে গণতন্ত্র বুঝায় তেমন হলে দল এবং দলীয় সদস্যরা যখন যাকে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেন, তিনি বয়োজ্যেষ্ঠদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে মন্ত্রিসভার তালিকা করেন। এখন তেমন আলাপ-আলোচনার দরকার বা পরিবেশ নেই, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছেই শেষ কথা। তার পরামর্শে মহামান্য রাষ্ট্রপতি মন্ত্রী নিয়োগ দেন, আবার তার পরামর্শেই নিয়োগের অবসান ঘটান- এটাই বিধান। কোনো মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর আস্থা হারালে কিংবা তাকে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়ার প্রয়োজন হলে অথবা কোনো মন্ত্রী মন্ত্রিসভায় থাকতে না চাইলে তিনি নিজেই মহামান্য রাষ্ট্রপতির উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পদত্যাগপত্র পাঠাতে পারেন অথবা মন্ত্রী পদত্যাগে উৎসাহী না হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানাতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া না দিলে অবাধ্য মন্ত্রীকে অব্যাহতিদানের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করেন। তার সুপারিশে মহামান্য রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর করলে যে কোনো মন্ত্রীর মন্ত্রিত্বের অবসান ঘটে। কোনো মন্ত্রীর পদত্যাগ গ্রহণ আর মন্ত্রীকে অব্যাহতি দেওয়ার মধ্যে গণতান্ত্রিক সভ্য সমাজে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কাউকে মন্ত্রী বানানো যেমন সম্মানের, কোনো কারণে মন্ত্রীর পদত্যাগ করা অনেক ক্ষেত্রে তার চেয়ে বেশি সম্মানের। কিন্তু বরখাস্ত করা, যারা করেন তাদের জন্যও যেমন, যিনি হন তার জন্যও কোনো সম্মানের নয়- যেটি প্রবীণ নেতা লতিফ সিদ্দিকীর ক্ষেত্রে ঘটেছে। তিনি বিতর্কিত হওয়ার পরপরই পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দিলে যেমন ভালো হতো, তেমনি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানালে এবং সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে পদত্যাগ করলে সেটাই হতো বিধিসম্মত। এক্ষেত্রে মন্ত্রী পদত্যাগ করেননি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও পদত্যাগের আহ্বান জানাননি- তাই কোনোটাই ভালো হয়নি। এখন বলার কেউ নেই তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যা করেন সবই ভালো। কিন্তু প্রকৃত ভালো অন্যরকম। নিখুঁত পদক্ষেপের যুক্তিযুক্ত সমালোচনা করতে শত্রুরও যাতে দাঁতভাঙার অবস্থা হয় তাকেই বলে যোগ্যতা।
বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী যার দক্ষতা ও কৃতিত্বের কারণে শত বিপদ-আপদ মসিবতের মধ্যেও আমরা স্বাধীন হয়েছি। সেই বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের পদত্যাগের কথা এখানে আলোচনা করা যায়। তখন আজকের মতো উচ্চাসনের এত দূরে ছিলাম না, খুবই কাছাকাছি ছিলাম। বঙ্গতাজ তাজউদ্দীন আহমদের সঙ্গে সে সময় আওয়ামী লীগের বিরোধ মারাত্দক আকার ধারণ করে এবং এক সময় সব কিছু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে থাকে। কী কারণে জানি না, ঠিক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকীর মতো ইংল্যান্ড বা অন্য কোথাও গিয়ে তিনিও তার নিজের বাজেটের সমালোচনা করেছিলেন। যে কারণে নৈতিকভাবে তার আর মন্ত্রী থাকার সুযোগ ছিল না। এখনকার মতো তখন অত নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটেনি। তাই এক সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাকে পদত্যাগের আহ্বান জানান। খসড়া পদত্যাগপত্র যখন হেয়ার রোডে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন মিরপুর সড়কের গণভবনে অন্যদের সঙ্গে আমিও ছিলাম। গণভবন থেকে বঙ্গতাজের পদত্যাগপত্রের খসড়া দিয়ে যে কাউকে পাঠানো হচ্ছে প্রথম অবস্থায় তা জানতাম না বা বুঝতে পারিনি। তখন এখনকার মতো রাস্তায় ভিড় ছিল না। গণভবন থেকে হেয়ার রোডে যেতে ৭-৮ মিনিটের বেশি লাগত না। তাতে ৩০-৪০ মিনিটে পত্রবাহকের ফিরে আসার কথা। কিন্তু দেড় ঘণ্টা পেরিয়ে যাচ্ছিল। কেউ কেউ বলছিলেন, জনাব তাজউদ্দীন পদত্যাগ করবেন না, করলে এতক্ষণ স্বাক্ষর নিয়ে ফিরে আসত। সময় যতই গড়াচ্ছিল, গণভবনে তাজউদ্দীনবিরোধীরা ততই এটা ওটা বলছিল। এক সময় বিরক্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, অত কথার দরকার কী? যাকে পাঠিয়েছি সে আগে ফিরুক। পদত্যাগ না করলে বরখাস্ত করা যাবে। বঙ্গবন্ধুর কথায় কিছুটা দ্বেষ ছিল, ক্ষোভ ছিল। একটু পরেই স্বাক্ষর নিয়ে ফিরে আসে। সবাই জিজ্ঞেস করেন, এত দেরি হলো কেন? ভদ্রলোক বললেন, বিদেশের এক টিমের সঙ্গে অর্থমন্ত্রীর পূর্ব নির্ধারিত মিটিং ছিল। মিটিং শেষে তার সঙ্গে দেখা করি। পদত্যাগপত্র দিলে তিনি শুধু জিজ্ঞেস করেন এ সম্পর্কে লিডার জানেন? আমি বলি তিনিই পাঠিয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে স্বাক্ষর করে দেন। আমি পদত্যাগপত্র দেওয়ার পর স্বাক্ষর করতে মাননীয় মন্ত্রী এক মুহূর্তও সময় নেননি। অথচ কয়েক মিনিট আগেই কতজন কত রকম কথা বলছিলেন।
আরও অনেক সময় বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বঙ্গতাজ কী করতেন জানি না। কিন্তু পদত্যাগ করে তিনি আর মুখ খুলেননি, ঘরে বসেছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে যারা খুন করেছে, তারা তাকে ছাড়েনি। জেলখানায় জাতীয় নেতাদের সঙ্গে তিনিও নিহত হন। মনে হয় প্রায় তেমন ১৯৯৯ সালের ২৯ আগস্ট সংসদ থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগ ছেড়েছি। ২৪ ডিসেম্বর ‘৯৯-এ ড. কামাল হোসেন ও ভাষাসৈনিক আবদুল মতিনের উপস্থিতিতে ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে এক কনভেনশনের মাধ্যমে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের জন্ম দিয়েছি। নির্বাচন কমিশনে দলটি নিবন্ধিত। তারপরও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, প্রেসিডিয়াম সদস্যের হজ সম্পর্কে বিতর্কিত বক্তব্যের জের আমাদের ওপর দিয়ে যায়। জন্ম থেকেই আওয়ামী লীগ করেছেন, প্রেসিডিয়ামের সদস্য ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন তখন আমরা কেউ না। বিপদে পড়লে ভাই। তিনি আমায় স্বীকারও করেননি। তারপরেও কত চিঠি, কত ফোন ‘আপনার ভাই এটা কী করল? আপনার ভাই অমন বলল কেন?’ জবাব দিতে দিতে জেরবার। যত জবাবই দেই কেউ সন্তুষ্ট নন। শত হলেও মায়ের পেটের ভাই। শেখ রেহানাও মাঝে মাঝে বলে, ইচ্ছা করলেই কি সম্পর্ক অস্বীকার করা যায়? পানি কাটলে কি ভাগ হয়? ওর কথা যে কত ভারী তা এ কদিনে বুঝলাম। যেমনটা মুক্তিযুদ্ধের সময় কত আপনজন মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, সম্পর্ক স্বীকার করতে চায়নি। পানির চেয়ে রক্ত যে ভারী স্বীকার করেনি। কিন্তু আবার বুঝলাম সম্পর্কের মর্যাদা দিলে রক্তের চেয়ে ভারী এ জগতে আর কোনো কিছু নেই।
ধীরে ধীরে জাতীয় বিভাজন আরও মারাত্দক আকার ধারণ করছে। এই সেদিন পিয়াস করিমের লাশ শহীদ মিনারে নিতে দেওয়া হয়নি। এতকাল তাজা মানুষ নিয়ে রাজনীতির টানাহেঁচড়া ছিল, এখন দেখছি মরা মানুষ নিয়েও টানাটানির শেষ নেই। পিয়াস করিম ধীরে ধীরে বিএনপির দিকে ঝুঁকে পড়েছিলেন। তার মৃত্যুতে বিএনপি কিছুটা মর্মবেদনা প্রকাশ করেছে। কিন্তু হঠাৎই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পিয়াস করিমের পক্ষে অমন সক্রিয় হলেন কেন বুঝতে পারলাম না। সাজাপ্রাপ্ত যুদ্ধাপরাধীদের আগামীতে কোনো রাষ্ট্রপ্রধান মাফ করে দিতে পারেন- আর কারও মনে হলো না, তার মনে হলো কেন- এ নিয়েও সন্দিগ্ধ মন প্রশ্ন না করে পারে না। আর বিশেষ করে ১২-১৩ বছরের এক বালক মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে কুমিল্লা শহরে বৈঠক করেছেন- কেউ এমন বললে তো যুদ্ধটাই একটা ছেলেখেলায় পরিণত হয়। যুদ্ধ আর বৈঠক কি এক? দিনে বিএনপি, রাতে আওয়ামী লীগ হওয়া যায়, কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ তো তেমন নয়। শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন অথচ মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করেছেন, আইডেনটিটি কার্ড দিয়েছেন- এসব কথা বাজারে বিকায়? বেঁচে থেকে বড় যন্ত্রণায় পড়েছি। এ তো দেখছি একেবারে পলিসি করে মুক্তিযুদ্ধের মহিমা বরবাদ করা। এসব সিনেমা, থিয়েটারে চলে, প্রত্যক্ষ যুদ্ধে চলে না। পিয়াস করিমের তখন যে বয়স সে বয়সে হানাদার পাকিস্তানির পক্ষেও যেমন কিছু করার ছিল না, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষেও না।
আজ কদিন নয়াপল্টন বিএনপি অফিসের সামনে যে দৃশ্য দেখলাম তাতে রাজনীতির নামে চর দখলের নতুন সংস্করণ ছাড়া আর কী বলা যায়? যেখানে ছাত্রদলের পদ পাওয়ার জন্য এমন মারামারি খুনোখুনি বিশৃঙ্খলা, সেখানে মূল দলের পদাধিকারী হতে কী লঙ্কাকাণ্ডই না হতে পারে। সরকারের পদ পাওয়ার জন্য দেশকে ছারখার করে দিতেও যে পিছপা হবে না- তা তো খুব সহজেই বোঝা যায়। মানুষের কল্যাণে নয়, কোনো জাতীয় দাবি-দাওয়ার জন্য নয়, জাতীয় কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠনের পদ পাওয়ার জন্য এমন উলঙ্গ কর্মকাণ্ড জগত এর আগে কখনো দেখেছে কিনা জানি না। এসব দেখে দেখে জনগণ রাজনীতির প্রতি সন্তানসম ছাত্র-যুবকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে তাদের কোনো দোষ দেওয়া যাবে? মনে হয় দল মত নির্বিশেষে সবার এ ব্যাপারে সময় থাকতে ভেবে দেখা উচিত। রোগী মরে গেলে ডাক্তার ডেকে লাভ কি?
পাঠকদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘৮৬-র প্রথম দিকের একটা পত্র এখানে তুলে দিচ্ছি। সাধারণত তিনি আমায় সব সময় তুমি সম্বোধন করেন। কিন্তু এ পত্রে তুই সম্বোধন করেছেন। পত্রটি ‘৮৬-এর নির্বাচন নিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মনোভাবের প্রকাশ পেয়েছে। পত্রটিতে শুধু নিচে দাগ দেওয়া একটি ‘নাই’ সংযোজন করেছি।
“স্নেহসম্পাদেষু
বজ তোর চিঠিগুলি পরপর পেয়েছি। স্বাভাবিকভাবেই ব্যস্ততার জন্য উত্তর দিতে পারি নাই। দিনরাত পরিশ্রম করতে হচ্ছে।
তোর চিঠি পাওয়ার আগেই আমি আমার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম সেইমত কাজও করেছিলাম কিন্তু যে দেশে আইনের শাসন নাই ন্যায় বিচার নাই সেখানে তো এমন ঘটনা ঘটবেই। যতদূর জানতে পেরেছি সেনাবাহিনীর একটা গ্রুপ নাকি এ ব্যাপারে খুবই অনড় যাই হোক এটাকে আমরা ইস্যু করেছি সেইমত কাজও করছি। সব কিছু নির্ভর করে সমগ্র পরিস্থিতির উপর- সম্পূর্ণ পরিবর্তন না আনতে পারলে কিছুই করা যাবে না। যাদের মনোবৃত্তি এ ধরনের সামান্য নির্বাচনে যারা অংশগ্রহণ করতে দিতে চায় না- সে পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলে আসার কোনো প্রয়োজন নাই। দীর্ঘ ১১ বছর ধরে এ অবস্থায় থাকা যে কী কষ্টকর আমি তা বুঝতে পারি। কষ্ট যখন করছিসই আর একটু অপেক্ষা কর। যেখানে আমার জীবনের নিশ্চয়তা নেই, সেখানে দূরে আছিস অন্ততঃপক্ষে নিরাপদ তো আছিস, আমার যদি কিছু হয় কেউ তো থাকল কিছু করবার সেটাই আমার সান্ত্বনা। মনটাকে ছোট করবি না। ধৈর্য ধর, সব ঠিক হয়ে যাবে।
ছেলে কেমন আছে? বউকে আমার দোয়া দিস। খুব ভালো মেয়ে। ওর যেন কোনো কষ্ট না হয়। চারিদিকে অনেক ষড়যন্ত্র তারই মধ্য দিয়ে কাজ করে যেতে হচ্ছে। খালাম্মাকে দোয়া করতে বলিস। বাচ্চার জন্যে অনেক অনেক আদর রইল। তোর জন্য আমার দোয়া। খোদা তোর মনে শক্তি দিক। শান্তি দিক এই দোয়া করি।
আমি ভালো আছি। নববর্ষের শুভেচ্ছা রইল।
ইতি
আপা”