পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহারে নির্মাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে: ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ
পাইরেটেড সফটওয়্যারের ছড়াছড়ি সারা বিশ্বে। বাংলাদেশের দিকে তাকালে এর সংখ্যা প্রায় আকাশচুম্বী। কিছু কর্পোরেট অফিস, ব্যাংক ছাড়া মোটামুটি সবাই পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার করে। এ নিয়ে খবর বাংলা ২৪.কম-কে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও বাংলাদেশ কপিরাইট এ্যান্ড আইপি ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ।
খবর বাংলা ২৪.কম: বাংলাদেশে লাইসেন্স সফটওয়্যারের বর্তমান অবস্থা কী?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: বাংলাদেশে বেশি ব্যবহার হয়ে থাকে মাইক্রোসফটের এমএস অফিস, ওরাকল এবং বিভিন্ন অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার। অরিজিনাল সফটওয়্যারের দাম অনেক বেশি হওয়ায় তেমন আর কোনো সফটওয়্যারই আমাদের দেশে অরিজিনাল ব্যবহার হয় না।
খবর বাংলা ২৪.কম: বাংলাদেশে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার বন্ধ করা যাচ্ছে না কেন?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: প্রথমত- শক্তভাবে আইন প্রয়োগ হচ্ছে না, দ্বিতীয়ত- সচেতনতার অভাব এবং পাইরেটেড সফটওয়্যার কিনে পয়সা বাঁচাতে হবে- এমন মন-মানসিকতার কারণে পাইরেটেড সফটওয়্যার ব্যবহার বন্ধ হচ্ছে না। আইনশৃংখলা রক্ষাকারীবাহিনীও এ ব্যাপারে অনেকটা উদাসীন।
খবর বাংলা ২৪.কম: পাইরেটেড সফটওয়্যার প্রতিরোধের উপায় কী? এ ক্ষেত্রে আপনাদের ভূমিকা কী?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: সর্বপ্রথম আইন মেনে চলতে হবে। সফটওয়্যার কেনার টাকা না থাকলে নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা সফটওয়্যার নির্মাতার অনুমতি নিয়ে সফটওয়্যার ব্যবহার করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে এর ব্যবহার অবৈধ হবে না।
খবর বাংলা ২৪.কম: লাইসেন্সড সফটওয়্যার বিক্রি বৃদ্ধি করার জন্য আপনারা কি কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে আমরা স্টিকার, লিফলেট বিলি করেছি। এছাড়া পুলিশ-র্যাবসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারীবাহিনীকে এ ব্যাপারে প্রশিক্ষণ দিয়েছি যাতে করে তারা পাইরেটেড সফটওয়্যার বিক্রেতাদের আইনের আওতায় আনতে পারে। পুলিশ-র্যাব ছাড়াও ম্যাজিস্ট্র্যাট, জেলা জজদেরও আমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছি।
খবর বাংলা ২৪.কম : বাংলাদেশে লাইসেন্স সফটওয়্যারের মূলত গ্রাহক কারা?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজ, প্রাইভেট ব্যাংকগুলোই মূলত লাইসেন্স সফটওয়্যারের গ্রাহক। আমি মনে করি, বাংলাদেশের সব সরকারি কার্যালয়, এমনকি সংস্থাগুলোকেও লাইসেন্স সফটওয়্যারের অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।
খবর বাংলা ২৪.কম : আপনাদের কাছে কি লাইসেন্সড সফটওয়্যারের কোনো পরিসংখ্যান আছে?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: পরিসংখ্যানের কাজ করে নির্দিষ্ট কিছু সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠান। সঠিক তথ্যের জন্য সংশ্লিষ্ট গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর আরও নিখুঁতভাবে কাজ করতে হবে। পুরোপুরিভাবে সঠিক তথ্য দেয়া কঠিন। তবে বলা যায় বাংলাদেশে মোট যত সফটওয়্যার ব্যবহৃত হচ্ছে, তার শতকরা ৯০ ভাগই পাইরেটেড। বাকি ১০ শতাংশ সফটওয়্যার লাইসেন্সড।
খবর বাংলা ২৪.কম : দেশে লাইসেন্সড সফটওয়্যারের বিকাশে ক্রেতা-বিক্রেতা- কার কি দায়িত্ব?
ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ: যারা ক্রয় করে এবং যারা বিক্রয় করে- তাদের এধরনের কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে। সরকারকে আরও বেশি এ ব্যাপারে দৃষ্টি দিতে হবে। পাইরেটেড সফটওয়্যার বিকিকিনির ফলে যারা কষ্ট করে সফটওয়্যার তৈরি করে, তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে আমাদের অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। দেশের তরুণ সমাজ প্রয়োজনীয় অনেক সফটওয়্যার ও অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। পাইরেসির কারণে কোনোভাবেই এ অগ্রযাত্রায় বাধা পড়তে দেয়া যাবে না।