পীরের নির্দেশে ৩ দিন স্বেচ্ছায় কবরবাস
মানুষ কবরেও থাকতে পারে তাও আবার পীরের নির্দেশে। কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার বাঙ্গালপাড়া ইউনিয়নের রতানি গ্রামে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। গত ৩ দিন কাফনের কাপড় পড়ে কবরে ছিলেন পেয়ারা বেগম (৩০) নামে এক নারী। আরো ৭ দিন তার কবরে থাকার নির্দেশ ছিল। পেয়ারা বেগম ওই গ্রামের মধু মিয়ার স্ত্রী।
মঙ্গলবার বিষয়টি জানাজানি হলে বিকেল ৫টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নির্দেশে তাকে কবর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।
অষ্টগ্রামের ইউএনও মোহাম্মদ মহসীন উদ্দিন সংবাদমাধ্যমকে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, কথিত এক পীর কামরুল হাসানের নির্দেশে গত রোববার থেকে কবর খুঁড়ে পেয়ারা বেগম কবরের ভেতর অবস্থান করছিলেন। বিষয়টি জানতে পেরে তাকে উদ্ধার করতে ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে পুলিশ তাকে কবর থেকে বের করে আনে।
এ বিষয়ে পেয়ারা বেগমের স্বামী মধু মিয়া জানান, পীরের আদেশেই সব হচ্ছে। তার স্ত্রী খুব পীরভক্ত। তাদের পীর কামরুল হাসানের বাড়ি হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার গোডামবাড়ি গ্রামে।
মধু মিয়া অভিযোগ করেন, বিকেলে অষ্টগ্রাম থানার পুলিশ এসে তার স্ত্রীর আল্লাহর আশেকের ধ্যান বন্ধ করে দিয়ে কবর থেকে তুলে এনেছে।
তিনি আরো জানান, কবরে তার স্ত্রী রোজা থাকতেন। তাকে প্রতিদিন ইফতারের সময় ছোট্ট একটি পাইপ দিয়ে খাবার হিসেবে ২৫০ গ্রাম দুধ দেওয়া হতো। পীরের নির্দেশ ছিল মহররমের প্রথম ১০ দিন কবরে বসবাসকালে তার স্ত্রীকে আগুনের সাহায্যে তৈরি কোনো খাবার দেওয়া যাবে না।
এ বিষয়ে কথিত পীর কামরুল হাসানের (২৫) সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে পীর সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমি পেয়ারা বেগমকে বলে দিয়েছি মহরমের ১০ দিন কবরে থাকার জন্য। প্রতিদিন তাকে ইফতারের সময় ২৫০ গ্রাম দুধও খেতে বলেছি।
কি জন্য কবরের নিচে থাকতে বলেছেন এমন প্রশ্নের জবারে কথিত পীর কামরুল বলেন, এ বিষয়ে আপনি জেনে কি করবেন? সব কথা সবাইকে বলা যায় না।
পেয়ারা বেগমের কাফনের কাপড় পরিধানের নির্দেশ সম্পর্কে কথিত পীর বলেন, আমি জয়নাল আবেদীন নবীর বংশধর, আমি যা বলি তাই ঠিক।