প্লান্টার ফ্যাসাইটিস – ঘুম থেকে উঠেই গোড়ালি ব্যথা!
গোড়ালির মোটা পর্দা বা ব্যান্ড আকৃতির কলায় নানা কারণেই প্রদাহ হতে পারে। সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের বেশি হয় এই সমস্যা।পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা হলে, বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে উঠে মেঝেতে পা ফেলতে সমস্যা হলে চিকিৎসকেরা একে বলেন প্লান্টার ফ্যাসাইটিস। পায়ের পাতার নিচে যে প্লান্টার ফাসা নামে মোটা পর্দা রয়েছে, তাতে প্রদাহ হলে এই সমস্যা হয়। প্লান্টার ফ্যাসাইটিস দৌড়বিদ ও অ্যাথলেটদের মধ্যে প্রায়ই দেখা দেয়, তবে অতিরিক্ত ওজন ও জুতার অসংগতি এর প্রধানতম কারণগুলোর মধ্যে পড়ে।
কেন হয় গোড়ালি ব্যথা
গোড়ালির মোটা পর্দা বা ব্যান্ড আকৃতির কলায় নানা কারণেই প্রদাহ হতে পারে। সাধারণত ৪০ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের বেশি হয় এই সমস্যা। এ ছাড়া কিছু বিষয় এর ঝুঁকি বাড়ায়। যেমন:
—দীর্ঘ সময় ধরে গোড়ালিতে চাপ পড়ে এমন কোনো কাজ এর ঝুঁকি বাড়ায়। যেমন ব্যালে নাচ, ম্যারাথন দৌড় বা অ্যারোবিক নাচ।
—অতি ওজন বা স্থূলতা পায়ের ওপর অতিরিক্ত ভরের সৃষ্টি করে। এই চাপ গিয়ে পড়ে পায়ের পাতার কলাসমূহের ওপর। ফলে শুরু হতে পারে ব্যথা।
—কারও কারও পায়ের বাঁক অস্বাভাবিক থাকে, তাঁরাও এই ঝুঁকির মধ্যে পড়েন।
—যাঁরা দিনের বেশির ভাগ সময় দাঁড়িয়ে কাজ করেন, যেমন কারখানার শ্রমিক, শিক্ষক—তাঁদেরও দীর্ঘ সময় গোড়ালিতে ওজন নেওয়ার কারণে প্রদাহ হতে পারে। খালি পায়ে শক্ত কাজ করাও ভালো নয়।
কিছু নিয়ম মেনে চলুন
গোড়ালির ওপর চাপ কমাতে কিছু নিয়মকানুন মেনে চলা উচিত।
—ওজন কমান। পায়ের যেকোনো ব্যথা কমাতে এটি কার্যকর।
—উঁচু হিলের ও শক্ত সোলের জুতা পরিহার করুন। নিচু বা মাঝারি হিলের জুতা বেছে নিন, যার সুকতলা যথেষ্ট নরম কিন্তু মজবুত, পায়ের বাঁককে যথেষ্ট পরিমাণে সাপোর্ট দেবে ও নমনীয়তা বজায় রাখবে। খালি পায়ে শক্ত মেঝেতে কাজ করবেন না।
—দৌড়বিদেরা বারবার জুতা পাল্টান। বলা হয় একটি জুতা ৫০০ মাইল হাঁটা বা দৌড়ানোর পর ফেলে দিতে হবে।
—পায়ের কিছু স্ট্রেচিং ব্যায়াম শিখে নিন।
—যদি ব্যথা হয় তবে ওই সময় হাঁটাহাঁটির পরিবর্তে সাঁতার বা সাইক্লিং ধরনের ব্যায়াম বেছে নিন, যাতে গোড়ালির ওপর ভর দিতে না হয়। পায়ের পাতার নিচে ও গোড়ালির নিচে দিনে তিন চারবার আইস প্যাক ব্যবহার করলে আরাম পাবেন। একটা বরফের দলা বা ডিপ ফ্রিজে রাখা একটি বোতল পায়ের নিচে বারবার রোল করতে পারেন।
সাধারণ এসব চিকিৎসা ও ব্যথানাশকে ফল না হলে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আপনার হয়তো ফিজিক্যাল থেরাপি, ইনজেকশন বা এমনকি শল্যচিকিৎসারও প্রয়োজন হতে পারে। মায়ো ক্লিনিক