প্রধানমন্ত্রী নতি স্বীকার করতে শুরু করেছেন’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী এতদিনে জনগণের দাবির কাছে নতি স্বীকার করতে শুরু করেছেন। তিনি বুঝতে পেরেছেন জনগণ দেশে দ্রুত আগাম নির্বাচন চায়। তিনি জনগণের এ দাবিকে স্বীকার করে নিয়েছেন। তার এ বক্তব্য সিগনিফিকেন্ট।’
সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর নিয়ে গণভবনে গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে বলা ‘একটি নির্বাচিত সরকার যে কোনো সময় দেশে নির্বাচন দেওয়ার ক্ষমতা রাখে’ বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল এ সব কথা বলেন। এ সময় তিনি সব দলের অংশগ্রহণে দ্রুত নির্বাচনের দাবিও জানান।
এর আগে, নয়াপল্টনে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের নিয়ে এক যৌথ সভা করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা আশা করব, এখন সব দলের অংশগ্রহণে অতি দ্রুত দেশে একটি নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে সরকার।’
তিনি বলেন, ‘জনগণ দেশে একটি দ্রুত নির্বাচন চায়। প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য থেকে বুঝা যায়, তিনি বুঝতে শুরু করেছেন। সে জন্য নির্বাচন নিয়ে তার (প্রধানমন্ত্রী) ওই বক্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলে আমরা মনে করি।’
ফখরুল জানান, সরকার যখনই নির্বাচন দেবে, তখনই বিএনপি নির্বাচনে যাবে। তবে তা হতে হবে সব দলের অংশগ্রহণমূলক একটি সুষ্ঠু নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচন ও আন্দোলনের সব প্রস্তুতি নিয়ে এগোচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রীর সংযুক্ত আবর আমিরাত সফর ব্যর্থ হয়েছে দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আরব আমিরাতে প্রধানমন্ত্রীর সফরের কোনো সফলতা নেই। আমাদের শ্রম শক্তি নিয়োগে কোনো চুক্তি সরকার করতে পারেনি। নারী কর্মী নিয়োগে যে বিষয়টি আগে থেকেই চলছে, এটা নতুন কিছু নয়।’
নারী কর্মী নিয়োগের সমালোচনা করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘নারী কর্মী নিয়োগে বিষয়টি ভাল কিছু নয়। আমাদের এ সব নিরীহ মানুষদের ওপর নানা নির্যাতন হয়। এটি জাতির জন্য লজ্জার বিষয়।’
গণভবনের সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী নিজের স্বভাবসূলভভাবে বিএনপি সম্পর্কে নানা ও অসত্য বক্তব্য প্রদান ও মিথ্যাচার করেছেন বলে অভিযোগ করেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘অধ্যাপক গোলাম আযমের ছেলে আব্দুল্লাহিল আমান আযমী যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা তার ব্যক্তিগত অভিমত। তার এ বক্তব্যের সঙ্গে জামায়াতের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে আমরা মনে করি। তাছাড়া তিনি জামায়াতের কোনো কর্মকর্তা বা সদস্যও নন। আমরা এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে জামায়াতের কোনো বক্তব্য বা প্রতিক্রিয়ার কথা শুনিনি। আমান আযমীর এ বক্তব্যকে আমরা আমলে নিচ্ছি না।’
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা :
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘মহান ৭ নভেম্বর উপলক্ষে কেন্দ্রীয়ভাবে দুই দিনের কর্মসূচি হবে। এ ছাড়া ৫ নভেম্বর থেকে ১৪ নভেম্বর ১০ দিনের কর্মসূচি থাকবে।’
কেন্দ্রীয় কর্মসূচির মধ্যে আছে ৭ নভেম্বর ভোরে দলীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ১০টায় খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা শেরে বাংলা নগরে দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া-ফাতেহা পাঠ এবং ৮ নভেম্বর বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ।
এর আগে, মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে এই যৌথ সভা হয়। এতে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম আবদুল মান্নান, শামসুজ্জামান দুদু, আহমেদ আজম খান, যুগ্ম-মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, গোলাম আকবর খন্দকার, সাখাওয়াত হোসেন জীবন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, খায়রুল কবীর খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সানউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শামীমুর রহমান শামীম, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, অঙ্গসংগঠনের নেতাদের মধ্যে আবদুস সালাম আজাদ, মীর সরফত আলী সুপু, নুরী আরা সাফা, শিরিন সুলতানা, এম এ মালেক, মনির খান, নুরুল ইসলাম খান নাসিম, হুমায়ুন ইসলাম খান, রফিকুল ইসলাম মাহতাব, মিলন মেহেদী, আবদুল আউয়াল খান, হাফেজ আবদুল মালেক, রাজিব আহসান, আকরামুল হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া নারায়াণগঞ্জের সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার, মুন্সিগঞ্জের সভাপতি আবদুল হাই, নরসিংদীর সাধারণ সম্পাদক মাস্টার তোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।