দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তার সম্পর্কে তৎকালীন আইজিপি নূরকে প্রশ্ন করুন: সাবেক সেনা কর্মকর্তা ফজলুল বারী
ওয়ান-ইলেভেনের সময় দুই নেত্রীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ কে দিয়েছিল, সে বিষয়ে জানতে তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদকে প্রশ্ন করতে বলেছেন সেসময়ের আলোচিত সেনা কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) চৌধুরী ফজলুল বারী।
সম্প্রতি টেলিফোনে আলাপকালে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ এখনো গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। তাকে কে নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রশ্ন করলে জানতে পারবেন। এখনো সময় আসেনি সব কথা বলার। তবে সময় হলে বলব।
তিনি বলেন, অনেকে আমার ওপর দোষারোপ করেন, নিজেরা অনেক কিছু করেছেন। দুই নেত্রীর প্রতি আমার সম্মান সবসময় ছিল। তাদের বিরুদ্ধে কোনো অপপ্রচারকে আমি প্রশ্রয় দিইনি। এমনকি একজন নেত্রীর বিপক্ষে একটি পত্রিকা ব্যক্তিগত বাজে সংবাদ পরিবেশন করায় সেই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়েছিলাম। এ নিয়েও অনেক মিথ্যাচারের শিকার হয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ওয়ান-ইলেভেন নিয়ে সঠিক ইতিহাস কেউই তুলে ধরেননি। আমাকে ঘিরে যত অপপ্রচার, বাস্তবতা তা ছিল না। এখনো সংশ্লিষ্ট সবাই জীবিত রয়েছেন। তাই চিন্তা করছি, ওয়ান-ইলেভেন নিয়ে সত্যটাই তুলে ধরব। সেদিন পেশাদার কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব ও নির্দেশ পালন করেছি। আমাকে সরিয়ে দেওয়ার পরও প্রতিবাদ জানাইনি। সেদিন যদি আমি ঘুরে দাঁড়াতাম তাহলে হয়তো আজকের ইতিহাস অন্যরকম হতো।
চৌধুরী ফজলুল বারী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের একটি শহরে বাস করছেন। ওয়ান-ইলেভেন শেষে চাকরি হারানোর পর যুক্তরাষ্ট্রে কঠিনভাবে জীবন শুরু করেছিলেন তিনি। সেখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে অনেকটা বিপাকে পড়েন। শুরুতে নিউইয়র্কে পিজা দোকানে কাজ করতেন। বাড়ি বাড়ি পিজা পৌঁছে দেওয়ার তার ছবিও পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এখন কী করছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রতিদিন ৩০০ কিলোমিটার গাড়ি ড্রাইভ করে ওষুধ পৌঁছে দেন নির্ধারিত ঠিকানায়। একটি ওষুধ কোম্পানিতে কাজ করেন।
সেনাবাহিনীতে থাকাকালীন নিজ অবদানের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিডিআরে (এখন বিজিবি) চাকরি করতাম। রাজশাহীর মানুষ এখনো স্মরণ করে। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছি। চোরাচালানের বিরুদ্ধে নিয়েছিলাম কঠোর ব্যবস্থা। র্যাব প্রতিষ্ঠায় পালন করেছি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ছিলাম।
ওয়ান-ইলেভেনের সময় বঙ্গভবনে যাওয়া নিয়ে বলেন, আমি যে দায়িত্বে ছিলাম, তার ডিজি দেশের বাইরে ছিলেন। আমি ছিলাম ভারপ্রাপ্ত। তিন বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে বঙ্গভবনে গিয়েছিলাম। ওয়ান-ইলেভেনের পর চেষ্টা করেছি সততা-নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করতে। সেদিন যারা অসততার সঙ্গে ছিলেন, আজ তারাই ভালো আছেন। আমার জন্য আমার পুরো টিম সততা নিয়েই কাজ করেছিল। পরে তারাও ভিকটিমাইজ (ক্ষতিগ্রস্ত) হয়েছিল। আমাদের সামনে ছিল দেশ।
তথ্যসূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন