রানাকে ভোলেননি হোয়াটমোর
মানজারুল ইসলাম রানা যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপ দলে সুযোগ পেতেন—কী হতো? কী হতো তবে?
অনেক কিছুই হতে পারত। অন্তত ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনাটা নাও ঘটতে পারত। ভবিষ্যতে কী ঘটবে—এটি অজানা বলেই বর্তমানের হাতে সঁপে দিতে হয় সবাইকে। রানাও দিয়েছিলেন। কিন্তু ২২ বছর বয়সেই তাকে চলে যেতে হবে মর্ত্যলোক ছেড়ে—এটা কে ভেবেছিল? কেউ কি ভেবেছিল, রানা হয়ে যাবেন ইতিহাসে সবচেয়ে কম বয়সে মারা যাওয়া টেস্ট ক্রিকেটার? ২০০৭ সালের ১৬ মার্চ, খুলনার উপকণ্ঠে ডুমুরিয়ায় মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হন রানা। মৃত্যুর সময় বয়স ছিল মাত্র ২২ বছর ৩১৬ দিন।
২০০৭ বিশ্বকাপের সময় বাংলাদেশের কোচ ডেভ হোয়াটমোর, অধিনায়ক হাবিবুল বাশার। দুজনের ভূমিকা বদলেছে। তবে দুজনই এখন খুলনায়। হোয়াটমোর গিয়েছেন ধারাভাষ্য দিতে, হাবিবুল দলের নির্বাচক হিসাবে। খুলনায় খেলা হলে অবধারিতভাবে জীবন্ত হয়ে ওঠে মানজারুল স্মৃতি। এ শহরটায় আগেও এসেছেন হোয়াটমোর। তবে মানজারুল চলে যাওয়ার পর এই প্রথম। স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশ দলের সাবেক কোচের স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েছেন প্রয়াত শিষ্যের কথা মনে পড়ে।
হাবিবুল তাকে আগেই বলেছিলেন রানার কবর দেখাতে নিয়ে যাবে। আজ বেরিয়ে পড়লেন অন্যলোকে চলে যাওয়া শিষ্যের জন্য প্রার্থনা করতে। হাবিবুল তো ছিলেনই, হোয়াটমোরের সঙ্গে ছিলেন প্রধান নির্বাচক ফারুক আহমেদ, মিনহাজুল আবেদীন ও ধারাভাষ্যকার আতাহার আলী খান। জিয়ারত করা হলো রানার কবর। ‘যেখানে থাকো, ভালো থেকো’—হোয়াটমোরের মনের ভাষা হয়তো এমনই ছিল।
এরপর রানার বাড়িতে যান সবাই। মা জামিলা খাতুনের সঙ্গে দেখা করেন। মায়ের চোখে অশ্রু টলমল। অশ্রু সংক্রামিত করে অন্যদেরও। অতিথিরা যান রানার ঘরে। সব আগের মতোই ছিমছাম গোছানো। ওয়ার্ডরোবের ওপর হেলমেট, ছোট-বড় কয়েকটা ট্রফি। সংবর্ধনায় পাওয়া বিশাল একটা প্লেট। বিষণ্ন মনে নিস্পলক অতিথিরা চেয়ে থাকেন রানার রেখে যাওয়া স্মৃতিগুলোর দিকে। শুধু রানাই নেই!
হাবিবুল বললেন, ‘খুলনায় আসলে রানার বাসায় যাওয়া হয়। ওর মায়ের সঙ্গে দেখা করে আসি। এবার হোয়াটমোরও বললেন, যেতে চান রানার বাসায়। এরপর আজ সবাই গেলাম। ওর কথা মনে পড়লে মনটা আবেগাকক্রান্ত হয়ে পড়ে।’