শ্যামনগরে মেয়ের প্রেমিককে পিটিয়ে জখম
আপনার নাতিকে ছাড়িয়ে নিতে হলে টাকা দিতে হবে। আর টাকা না হলে আলোর মুখ দেখতে পাবে না। আমার মেয়ের সঙ্গে প্রেমে করার সাধ মিটিয়ে দেব। তখন আমি বলি আমার কাছে নগদ টাকা নেই। এ কথা শুনেই প্রকাশ্যে রাস্তার উপর কয়েকজন লাঠি দিয়ে বেদম পেটাতে থাকে আমার নাতি নবম শ্রেণীর ছাত্র মারুফ বিল্লাহকে। বাধ্য হয়ে বাড়ি থেকে চেক বই এনে ৫০ হাজার টাকা করে তিনটি চেকে সই করে তাদের দেওয়ার পর তারা চলে যায়। এ সময় মারুফকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করি। আজ সোমবার শ্যামনগর হাসপাতালে এভাবে কেঁদে কেঁদে কথাগুলো বলছিলেন প্রবীণ অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক মফিজ উদ্দিন। এ ব্যাপারে তিনি বাদী হয়ে ইতিমধ্যে শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগও করেছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য টুকুসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নের চণ্ডিপুর গ্রামের আবু মুছার ছেলে নবম শ্রেণির ছাত্র মারুফ বিল্লাহর সাথে একই গ্রামের সাবেক মেম্বার হাবিবুর রহমানের মেয়ে সাথীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৭ অক্টোবর তারা ঘর ছেড়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলা কয়রায় যায়। বয়স কম হওয়ায় সেখানে জনতা তাদের আটক করে থানায় সংবাদ দেয়। সংবাদ পেয়ে কয়রা থানার এসআই ইন্দ্রজিৎ তাদের উদ্ধার করে এবং ২৮ অক্টোবর ওসির নির্দেশে তাদের নিজ নিজ অবিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এরপর সাবেক মেম্বার হাবিবুর ১৫ থেকে ১৬ জনকে সঙ্গে নিয়ে মারুফকে ধরে নিয়ে প্রকাশ্যে রাস্তার উপর পেটাতে থাকে। এ সময় তার নানা মফিজ মাস্টার তাদের কাছে নাতির প্রাণ ভিক্ষা চাইলে তারা তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে টাকা আনতে বলে। এরপর তিনটা চেকে দেড় লাখ টাকা বসিয়ে হাবিবুরের হতে দিলে তারা মারুফকে ফেলে রেখে চলে যায়। তখন তারা মারুফকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ ব্যাপারে কয়রা থানার এসআই ইন্দ্রজিৎ মল্লিক মোবাইল ফোনে বলেন, কয়রার স্থানীয়রা মারুফ এবং সাথীকে থানায় আনার পর আমরা তাদের অবিভাবকদের সংবাদ দেই তাদের অবিভাবকদের হাতে তুলে দিতে। কিন্তু উভয়ের বয়স কম হওয়ায় কয়রা থানার ওসির নির্দেশে সাথীকে তার বাবার কাছে এবং মারুফকে তার নানার কাছে দিয়ে দেই। পরে শুনেছি মেয়েটির বাবা ওই ছেলেকে মারধর করেছে।