লাদেন-হত্যার গোপন তথ্য নিয়ে বিপাকে নেভি সিল
আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদার প্রধান ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার পরও যেন মুক্তি মিলছে না মার্কিনিদের। নানা বিষয়ে লাদেনের তাড়া অব্যাহত আছে। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে তাঁকে গুলি করে হত্যার দাবি করা এক নেভি সিল সদস্যের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি একটি তথ্যচিত্র।
বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, ‘দ্য ম্যান হু কিলড ওসামা বিন লাদেন’ শিরোনামে একটি তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছে ফক্স নিউজ। শিগগিরই এটি প্রচার করা হবে। নেভি সিল সদস্যের এভাবে সাক্ষাৎকার দেওয়ার ঘটনায় পেশাগত নীতি-নৈতিকতা লঙ্ঘনের কথা উল্লেখ করে কড়া ভাষায় তা বন্ধে বার্তা দিয়েছেন মার্কিন নেভি সিলের কমান্ডার।
নেভাল স্পেশাল ওয়েলফেয়ার কমান্ডের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল ব্রায়ান লসে সেনাদের উদ্দেশে লেখা চিঠিতে খ্যাতি বা সৌভাগ্যের চিন্তায় গোপনীয় মিশনের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা অগ্রহণযোগ্য বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই জটিল কাজের মূলনীতি হলো, আমি আমার কাজের ধরনের সম্পর্কে প্রচার চালাব না এবং আমার কাজের জন্য কোনো স্বীকৃতি চাইব না।’
এই চিঠির একটি কপি এএফপির হাতে পৌঁছেছে। ৩১ অক্টোবর লেখা ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, খ্যাতি বা আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশায় স্বেচ্ছাচারী বা স্বার্থপরের মতো মূলনীতির বরখেলাপ করা মহৎ এই পেশা, সাহস ও ত্যাগের প্রতি অবমাননার শামিল।’ জনসমক্ষের আড়ালে থাকা এই পেশার মানুষের ‘জীবনব্যাপী অঙ্গীকার ও বাধ্যবাধকতা’। যারা নিয়ম ভঙ্গ করে স্বেচ্ছাচারী হয়ে গোপনীয় তথ্য ফাঁস করে দেয়, তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলেও চিঠিতে সতর্ক করে দেওয়া হয়।
পরিস্থিতি যখন এমন, তখন ফক্স নিউজের মুখপাত্র সার্লি শানাহান বলেন, ‘প্রতিরক্ষা বিভাগ বা অন্য কোনো সরকারি সংস্থা ফক্স নিউজের সঙ্গে “দ্য ম্যান হু কিলড ওসামা বিন লাদেন” তথ্যচিত্রের ব্যাপারে উদ্বেগ জানিয়ে যোগাযোগ করেনি। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী ১১ ও ১২ নভেম্বর এটি প্রচারের প্রস্তুতি চলছে।’
ওই তথ্যচিত্রে কোনো কমান্ডের পরিচয় দেওয়া হয়েছে কি না, মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর পেন্টাগন তা নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে পেন্টাগন বলছে, সব সেনা গোপনীয় তথ্য বাইরে ফাঁস না করার ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ। তারা চাকরিজীবনে তো নয়ই, চাকরি থেকে অবসরে যাওয়ার পরও এসব তথ্য বাইরে প্রকাশ করতে পারবে না।
২০১১ সালের মে মাসে পাকিস্তানে লাদেনের আস্তানায় হামলা চালিয়ে তাঁকে হত্যা করে নেভি সিলের সদস্যরা।