পদ্মা সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরু হয়েছে, নদীশাসন চুক্তি আগামীকাল
পদ্মা সেতু নিয়ে মাওয়ায় শুরু হয়েছে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম। আগামীকাল সোমবার পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের নদীশাসন কাজের জন্য ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সাথে আনুষ্ঠানিক চুক্তি হচ্ছে। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে কোরিয়ার সিনো হাইড্রো কর্পোরেশনের সঙ্গে এ চুক্তি স্বাক্ষর হবে। ইতিমধ্যে সেতুর নির্মাণ কাজের জন্য প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ পাইল ফেব্রিকেশন ওয়ার্কশপ নির্মাণ করা হচ্ছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-চীনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ অংশ নেবেন। সন্ধ্যা সাতটায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাাতিক সম্মেলন কেন্দ্রের কার্নিভ্যাল হলে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মাওয়ার পাশে কুমারভোগে সেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে বিশাল ওয়ার্কশপ নির্মাণ কাজ চলছে। চীন থেকে স্টীলের প্লেট এনে এই ওয়ার্কশপে তৈরি হবে সেতুর পাইল। চীনে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হওয়া পাইল ফেব্রিকেশন ওয়ার্কশপটিই কুমারভোগে স্থানান্তর হবে। বিভিন্ন মাল নিয়ে বড় বড় জাহাজ ওয়ার্কশপের পাশে ভেড়ানোর সুবিধার্থে জেটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এই জেটির জন্য কংক্রিটের পাইলও তৈরির কাজ চলছে।
উপরোক্ত তথ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর (মূল সেতু) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, শুক্রবারও মাঝ পদ্মায় মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু করা যায়নি। মাটি পরীক্ষা যন্ত্রের লোড আরও বাড়িয়ে এই কাজ শুরু করতে আরও ৪/৫ দিন লেগে যেতে পারে। তবে তীরে মাটি পরীক্ষার কাজ চলছে।
এদিকে চীনের নানটোংয়ের স্টীল কাটার ফেব্রিকেশন ওয়ার্কশপে ৯০ মিটার করে ১০টি পাইল নির্মিত হচ্ছে। এগুলো টেস্টিং পাইল হিসেবে নির্মাণ করা হচ্ছে। পাইলগুলো সঠিক ধারণক্ষমতা নিতে পারে কি-না এগুলো পিলারস্থলে পাইলিং করে বসিয়ে পরীক্ষার পর প্রয়োজনীয় চাহিদামতো আরও পাইল নির্মাণ করা হবে। শীঘ্রই এসব পাইল দেশে নিয়ে আসা হবে। প্রি-ফ্রেকেটেট স্থাপনাবাহী চতুর্থ শিপমেন্টের জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছার পর এখন কাস্টমসের কার্যক্রম চলছে। শীঘ্রই মালামাল মাওয়া নিয়ে আসা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। প্রি-ফ্রেকেটেট স্থাপনাগুলো চীনেই তৈরি করা হয়েছে। এখন এগুলো এনে সেতুস্থলের দু’পাড়ে স্থাপন করা হবে।
পদ্মা বহুমুখী সেতুর বিশাল কর্মযজ্ঞ এখন মাওয়া ও আশপাশের গোটা এলাকা ছাড়াও পদ্মা নদীতে।
উল্লেখ্য, ৪২টি পিলারের ওপর ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের সর্ববৃহৎ এই সেতুটি নির্মিত হবে। ১৫০ মিটার পর পর এই পিলার। এছাড়া দেড় কিলোমিটার করে উভয়পারে তিন কিলোমিটার সংযোগ সেতুর জন্য আরও ২৪টি পিলার করা হবে। মোট ৬৬ পিলারের জন্য ৬৬ পয়েন্টে মাটি পরীক্ষার প্রয়োজন হচ্ছে। মূল সেতুর ৪২টি পিলারের মধ্যে ডিজাইন করার সময় ১৩টি পয়েন্টে মাটি পরীক্ষা হয়েছে। তাই মূল সেতুর বাকি ২৯ পয়েন্টে এখন মাটি পরীক্ষা করতে হবে। মূল সেতুর ৪০টি পিলারে ৬টি করে ২৪০ এবং দু’পারের দু’টিতে ১২টি করে ২৪টি অর্থ্যাৎ ২৬৪টি পাইল করতে হবে। এরআগে সম্ভাব্য দূর্নীতির অভিযোগে বিশ্বব্যাংক এই প্রকল্পে অর্থায়ন থেকে সড়ে গেলে প্রকল্পের কাজ শুরু হতে গিয়ে বন্ধ হয়েছিল।
সূত্র- বাসস