নূর হোসেন দিবসে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন এরশাদ!
১০ নভেম্বর শহীদ নূর হোসেন দিবস। এইদিনে বুকে-পিঠে ‘স্বৈরতন্ত্র নিপাক যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’ শ্লোগান লিখে রাজপথে নেমেছিলেন নূর হোসেন। স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নূর হোসেন। আর এ দিনটিকেই গণতন্ত্র দিবস বললেন পতিত স্বৈরাচার হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি করেন।
বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, ‘১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর মহান জাতীয় সংসদে দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে ভাষণ প্রদান করে সামরিক শাসন চির অবসানের ঘোষণা দিয়ে আমি বলেছিলাম, জনগণের প্রত্যাশিত গণতন্ত্রের ভিত আজ রচিত হল। যা কেউ কোনোদিন নস্যাৎ করতে পারবে না। সেই গণতন্ত্র আজও অব্যাহত রয়েছে বলে গণতন্ত্রকামী জনগণের কাছে ১০ নভেম্বর দিনটি গণতন্ত্র দিবস হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। এই দিনে আমি দেশের সকল গণতন্ত্রপ্রেমী জনগণের প্রতি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।’
ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমাদের মহান মুক্তি সংগ্রামের প্রধান লক্ষ্য ছিল স্বাধীনতা অর্জন এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। আমাদের সেই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন আছে এবং চিরকাল থাকবে। কিন্তু গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা ব্যহত হয়েছে। তবে ১৯৮৬ সালের ১০ নভেম্বর আমি যে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করেছি কোনো ষড়যন্ত্র আর তাকে ব্যহত করতে পারেনি এবং দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে পারি এই গণতন্ত্র অনাদিকাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। গণতন্ত্র দিবসে এটাই হোক সকলের অঙ্গীকার।’
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এরশাদ বলেন, ‘আমি বলতে চাই- গণতন্ত্র শুধু একদিনের ভোটের অধিকার নয়, আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনের সকল ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক নিয়ম-নীতি ও আদর্শের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। তৃণমূল পর্যায় থেকে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়াই হচ্ছে ১০ নভেম্বরের মূল মন্ত্র।’
প্রসঙ্গত, সাবেক স্বৈরশাসক এরশাদ ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চলাকালে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে সামরিক শাসন জারি করেন।
স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে ১৯৮৭ সালের ১০ নভেম্বর রাজধানীর জিরো পয়েন্টে শহীদ হন নূর হোসেন। এরপর থেকে এ দিনটি নূর হোসেন দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে।