বরিশালে ‘জিনের বাদশা’ চক্রের ৪ সদস্য আটক
বরিশাল নগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে কথিত ‘জিনের বাদশা’ দুলু মিয়াসহ তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে।
দুলু মিয়া গাইবান্ধা জেলার দেবত্তর গ্রামের বাসিন্দা মৃত গুলজার রহমানের ছেলে। তার সহযোগীরা হলেন- একই জেলার মথুরাপুর গ্রামের কবিরাজ বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মোজাম্মেল হক ইনজল, শৈলেষ চন্দ্র মহন্তর ছেলে সানা চন্দ্র মহন্ত ও পূর্ব সমসপাড়া এলাকার আব্দুস সোবাহান আকনের ছেলে এনামুল হক আকন।
আটকের পর সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের প্রতারণার বিবরণ তুলে ধরেন নগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) সোয়েক আহমেদ পিপিএম।
তিনি জানান, ২৮ অক্টোবর গভীর রাতে পুলিশ সদস্য চান মিয়ার স্ত্রী জোছনা বেগমের মোবাইলে কল দিয়ে নিজেকে জিনের বাদশা পরিচয় দেন দুলু মিয়া। স্বামী ও তার সন্তানের বিপদের আশঙ্কার কথা বলে জোছনা বেগমকে একপর্যায়ে পটিয়ে ফেলেন তিনি।
স্বামী-সন্তানের ভালোর জন্য কি করতে হবে তা জিনের বাদশার কাছে জানতে চাইলে সুযোগ বুঝে জোছনা বেগমকে তার কাছে যে টাকা আছে তা নিয়ে বরিশাল নগরীর লেচুশাহ মাজার এলাকায় আসতে বলেন দুলু মিয়া। স্বামী-সন্তানের ক্ষতি ঠেকাতে স্ত্রী জোসনা বেগম তার কাছে থাকা ১৬ হাজার টাকা নিয়ে হাজির হন ওই স্থানে। এরপর তার হাতে একটি পাত্রে পানি ধরিয়ে দিয়ে ওই টাকা নিয়ে চলে যায় অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তি।
পরের দিন মোবাইল ফোনে আরও টাকা দাবি করে জিনের বাদশা। জোছনা বেগম কাছে টাকা নেই জানালে স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে আসতে বলে দুলু মিয়া। স্বর্ণালঙ্কার না দিলে স্বামী ও তার সন্তানকে গায়েবি পন্থায় মেরে ফেলা হবে বলেও হুমকি দেয় তিনি। এরপর জোছনা বেগম প্রায় তিন লাখ টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে ফের লেচুশাহ মাজার এলাকায় হাজির হলে সেখান থেকে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়। সবকিছু হারিয়ে জোছনা বেগম বিষয়টি স্বামীসহ সবার কাছে জানালে তার স্বামী চান মিয়া পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করেন।
জিনের বাদশার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে পুলিশ জানতে পারে প্রতারক চক্রটি গাইবান্ধায় অবস্থান করছে। এরপর গাইবান্ধার মধুরাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে জিনের বাদশাকে না পেলেও আটক করা হয় তার দুই সহযোগী ইনজল ও এনামুলকে। তাদের বরিশাল এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গাইবান্ধার রাম নাথাপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে জিনের বাদশা দুলু মিয়া ও সানা চন্দ্র মহন্তকে আটক করা হয়।
উপ-পুলিশ কমিশনার সোয়েক আহমেদ জানান, ওই প্রতারক চক্র এক সপ্তাহ আগে জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার সেকান্দার সরদারের স্কুলপড়ুয়া কন্যা শাহীনুর আক্তারকে ফোন করে তার কাছ থেকে দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালঙ্কার লুটে নেয়।