ধানমন্ডিতে নারী চিকিৎসককে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
রাজধানীর ধানমন্ডিতে গতকাল বৃহস্পতিবার শামারুখ মাহজাবিন (২৬) নামের একজন নারী চিকিৎসককে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ হত্যার ঘটনায় শামারুখের শ্বশুর যশোর-৫ আসনের সরকারদলীয় সাবেক সাংসদ খান টিপু সুলতান, তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক জেসমিন আরা, ছেলে হুমায়ুন সুলতানকে আসামি করে গতকাল রাতে ধানমন্ডি থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শামারুখের বাবা মো. নুরুল ইসলামের করা মামলায় শামারুখকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।
রাতে পুলিশ শামারুখের স্বামী হুমায়ুন সুলতানকে গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে হুমায়ুন সুলতান হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শামারুখের স্বজনেরা বিপর্যস্ত থাকায় তাঁদের সন্দেহ করেছে।
শামারুখ হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। সম্প্রতি তিনি ওই হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেন। তিনি তাঁর শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে ধানমন্ডি ৬ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বরে কেয়ারি তাজ নামের বহুতল ভবনের তিনতলায় থাকতেন।
গতকাল সন্ধ্যায় শামারুখের মৃত্যুর খবরে তাঁর স্বজন ও সহপাঠীরা গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভিড় করেন।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় শামারুখকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে নেওয়া হয়। জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক রেজাউল করিম জানান, শামারুখকে বেলা আড়াইটার দিকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে।
শামারুখের বাবা যশোরের ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম বলেন, দেড় বছর আগে টিপু সুলতানের বড় ছেলে হুমায়ুন সুলতানের সঙ্গে শামারুখের বিয়ে হয়। বিয়ের আগে টিপু সুলতান বলেছিলেন, ‘তাঁর ছেলে ব্যারিস্টার। কিন্তু পরে তাঁরা জানতে পারেন, হুমায়ুন ব্যারিস্টার বা উকিল কোনোটিই নয়। তাঁর ছেলে বেকার বলে শামারুখকে দিয়ে বাসার ঝিয়ের কাজ করাতেন টিপু সুলতান ও তাঁর স্ত্রী। একই সঙ্গে শামারুখের ওপর নির্যাতন করতেন তাঁরা।
নুরুল ইসলাম বলেন, গতকাল দুপুরে টিপু সুলতান তাঁকে ফোন করে বলেন, ‘বেয়াই, ঢাকায় আসেন, আপনার মেয়ে ঘুমের বড়ি খেয়েছে। টিপু সুলতান পরে তাঁর ছেলে হুমায়ুনকে দিয়েও কথা বলান।’
ধানমন্ডি জোনের জ্যেষ্ঠ সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
গতকাল রাতে কেয়ারি তাজে গেলে নিরাপত্তাকর্মীরা ওই বাসায় যেতে দেননি।
রাতে ধানমন্ডি থানায় শামারুখের স্বামী হুমায়ুন সুলতান প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশকে লিখিত জানাতেই তিনি থানায় এসেছেন। শামারুখকে হত্যার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, ‘তারা (শামারুখের পরিবার) মানসিক বিপর্যস্ত থাকায় হয়তো তাঁদের সন্দেহ করছে। এ নিয়ে আমি কথা বলতে চাই না।’
শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম যশোর শহরের বিমানবন্দর সড়কের স্থায়ী বাসিন্দা। দুই ভাইবোনের মধ্যে শামারুখ ছোট ছিলেন।