স্ত্রী হত্যায় টিপুর ছেলে ৩ দিনের রিমান্ডে
হলি ফ্যামিলির চিকিৎসক শামারুখ মাহজাবীন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া তাঁর স্বামী হুমায়ুন সুলতানের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আনোয়ার সাদাত আজ রোববার এ আদেশ দেন।
শামারুখের স্বামী হুমায়ুন যশোর-৫ আসনের সরকারদলীয় সাবেক সাংসদ খান টিপু সুলতানের ছেলে। স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন হুমায়ুন।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে শ্বশুর খান টিপু সুলতানের ধানমন্ডির বাসায় শামারুখের রহস্যজনক মৃত্যু হয়। মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করার অভিযোগ এনে ওই রাতেই শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় হুমায়ুন, তাঁর বাবা খান টিপু সুলতান ও মা জেসমিন আরাকে আসামি করা হয়েছে। ওই দিন রাতে হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরদিন শুক্রবার সকালে হুমায়ুনকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ডের শুনানির জন্য আজ (রোববার) দিন ধার্য করেন আদালত। আজ শুনানি শেষে আদালত হুমায়ুনের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেছেন, তদন্তে হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে খান টিপু সুলতান ও তাঁর স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করা হবে।
স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে শামারুখকে বিভিন্ন অজুহাতে খান টিপু সুলতান ও তাঁর স্ত্রী নির্যাতন করে আসছিলেন।
নুরুল ইসলামের অভিযোগ, খান টিপু সুলতান, তাঁর স্ত্রী জেসমিন আরা ও ছেলে হুমায়ুন সুলতান পরস্পর যোগসাজশে পরিকল্পিতভাবে শামারুখকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। মামলা করার পর থেকে খান টিপু সুলতানের পক্ষ থেকে তাঁকে ভয় দেখানো হচ্ছে।
স্বজনদের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে শামারুখকে বিভিন্ন অজুহাতে খান টিপু সুলতান ও তাঁর স্ত্রী নির্যাতন করে আসছিলেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে শামারুখের লাশের ময়নাতদন্ত হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রভাষক সোহেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেছেন, মরদেহের ঘাড়ের অংশবিশেষ পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের হিস্টোপ্যাথলজিক্যাল পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।
শামারুখ হলি ফ্যামিলি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস পাস করেন। সম্প্রতি তিনি ওই হাসপাতালে ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেন। তিনি তাঁর শ্বশুরের পরিবারের সঙ্গে ধানমন্ডি ৬ নম্বর সড়কের ১৪ নম্বরে কেয়ারি তাজ নামের বহুতল ভবনের তিনতলায় থাকতেন।
শামারুখের বাবা নুরুল ইসলাম যশোরের ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির সহকারী প্রকৌশলী। তিনি যশোর শহরের বিমানবন্দর সড়কের স্থায়ী বাসিন্দা। দুই ভাইবোনের মধ্যে শামারুখ ছোট ছিলেন।