জিএসপি-সুবিধা না পেলে টিকফা নিরর্থক: তোফায়েল
টিকফা চুক্তি করলেও বাংলাদেশের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকারমূলক প্রবেশাধিকার সুবিধা (জিএসপি) পাচ্ছে না। এ সুবিধা না পেলে টিকফা চুক্তি নিরর্থক হয়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ‘২৩তম ইউএস ট্রেড শো ২০১৪’ শীর্ষক প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হতে চাইলে জিএসপি-সুবিধা ফেরত পাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ—এমনটা উল্লেখ করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘টিকফা চুক্তি করলেও আমাদের পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি-সুবিধা পাচ্ছে না। আমরা যদি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যেতেই না পারি, তাহলে টিকফা চুক্তি নিরর্থক হয়ে পড়বে।’
বক্তব্যে তোফায়েল আহমেদ দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য রপ্তানিতে বাংলাদেশ কোনো শুল্ক সুবিধা পাচ্ছে না, কিন্তু বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) নিয়ম অনুযায়ী স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের সেই সুযোগ পাওয়ার কথা। জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ অন্যান্য উন্নত দেশ বাংলাদেশকে সেই সুবিধা দিলেও যুক্তরাষ্ট্র তা দিচ্ছে না।
এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রকে শুল্ক সুবিধার ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা বক্তব্যে জিএসপি-সুবিধা, টিকফার ব্যাপারে কিছুই বলেননি।
বক্তব্যে মজীনা বলেন, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার পরিবেশ তৈরিতে সরকারকেই মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। আইনের শাসন, দুর্নীতি দমন, লাল ফিতার দৌরাত্ম্য এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার হুমকি কমাতে পারলে বিনিয়োগ-সহায়ক পরিবেশ তৈরি হবে।
এ ছাড়া তৈরি পোশাক কারখানাগুলোর কর্মপরিবেশ উন্নত করে শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত করতে সরকারকে প্রধান ভূমিকা রাখতে হবে বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশের উন্নয়নে প্রদর্শনীতে অংশ নেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভূমিকার কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মজীনা বলেন, শেভরন, কনোকো-ফিলিপসের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের গ্যাস অনুসন্ধানে ভূমিকা রাখছে। জেনারেল ইলেকট্রনিকস অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে স্বল্পমূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে। বাংলাদেশকে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত রাখতে বোয়িং বাংলাদেশ বিমানকে উড়োজাহাজ সরবরাহ করছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশের উদীয়মান অর্থনীতির উন্নয়নে ভূমিকা রাখছে।
প্রদর্শনীতে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আমেরিকান চেম্বার অব কমার্সের (অ্যামচ্যাম) সভাপতি আফতাব উল ইসলাম, অ্যামচেমের নির্বাহী পরিচালক এ গফুর।
প্রদর্শনী ঘুরে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশীয় বাণিজ্যিক ব্যাংক, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, নির্মাণসামগ্রী ও জেনারেটর সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ক্যাটারপিলার, প্রসাধন সামগ্রীর প্রতিষ্ঠান জনসন অ্যান্ড জনসন, জর্ডানা, কোমল পানীয় প্রতিষ্ঠান পেপসিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আকর্ষণীয় স্টল রয়েছে।
আগামী বুধবার পর্যন্ত এ প্রদর্শনী চলবে। খোলা থাকবে প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত । প্রবেশমূল্য ২০ টাকা।