কোয়েল পাখি পালনে সেলিনা বেগমের সাফল্য
দারিদ্রতা থেকে মুক্তির জন্য সে এবং তার পরিবার বিভিন্ন সংস্থার কাছে সাহায্যের জন্য ছুটে যায়। কিন্তু তিনি অত্র এলাকায় অন্যান্য সংস্থা থেকে আশানুরূপ সহযোগিতা না পেয়ে সে হতাশায় দিন কাটাচ্ছিল। স্বামী ও ছেলেকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে দিনাতিপাত করছিলেন এখন স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য দারিদ্রতার সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে যাচ্ছেন তিনি। কথাগুলো এক নিঃশ্বাসে বললেন সেলিনা বেগম। তার বাড়ি জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের গোবিন্দনগর পশ্চিমপাড়া গ্রামে।
হতদরিদ্র থেকে নিজেকে মুক্ত করে ২০০৯ সালে সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (এসডিএফ) গ্রামটিতে দারিদ্রমুক্ত করার জন্য কার্যক্রম শুরু করে। সে গোবিন্দনগর পশ্চিমপাড়া গ্রাম সমিতির অতিদরিদ্র পরিবার হিসেবে চিহ্নিত হয়। অতিদরিদ্র ৮নং জীবিকায়ন গ্রুপের সদস্যা হিসেবে নাম অন্তর্ভূক্তির মাধ্যমে সঞ্চয় কার্যক্রম শুরু করে। তার আত্মবিশ্বাস ও সংগঠনের জন্য কঠোর পরিশ্রমের কারণে সে ভিসিও’র লিডার নিযুক্ত হন। সে স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য স্বাবলম্বী তহবিল থেকে ১ম দফায় ১২ হাজার ও ২য় দফায় ২৫ হাজার) টাকা ঋণ নেয়।
সে স্বল্প খরচে কম ঝুঁকিতে বেশি লাভজনক হিসেবে কোয়েল পাখির চাষ বেছে নেন। প্রথমে সে ১২ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে বগুড়া থেকে মাত্র ২৫ দিন বয়সের ৩শটি কোয়েল পাখির বাচ্চা সংগ্রহ করে। ২০ দিন লালন-পালন করার কোয়েল পাখিগুলোর বয়স ৪৫ দিন হওয়ার পর ডিম দিতে শুরু করে। এভাবে সে ৩শটি কোয়েল পাখির বাচ্চা থেকে দৈনিক ২শ ৪০ থেকে ২শ ৭০টি ডিম পেত। প্রতিটি ডিম ২ টাকা ৫০ পয়সা দামে বিক্রি করে ৬শ থেকে ৬শ ৭৫ টাকা দৈনিক আয় করত। দৈনিক কোয়েল পাখির জন্য ৩শ টাকা ব্যয় করতো। এ অবস্থায় সে তার আবারো ১ হাজার ৪শ টি কোয়েল পাখির বাচ্চা নিয়ে আসে। আগের ৩শ ও পরের ১ হাজার ৪শ টি কোয়েল পাখি মিলে মোট ১হাজার ৭শটি কোয়েল পাখি পালন শুরু করে। তার মধ্যে ৪০টি বাচ্চা মারা যায় এবং ৬শ ৬০টি কোয়েল পাখি পুরুষ হওয়ায় সেগুলো ৫০ টাকা দরে প্রতিটি বিক্রি করে। বর্তমানে তার খামারে ১ হাজার কোয়েল পাখি রয়েছে। এগুলো থেকে দৈনিক ৫শ থেকে ৫শ ৫০টি ডিম পায়। প্রতিদিন ১ হাজার ২শ ৫০ থেকে ১ হাজার ৩শ ৭৫ টাকার ডিম বিক্রি করে। এখান তার ইচ্ছা শুধু ডিম বিক্রি নয়Ñ ডিম থেকে বাচ্চা ফুটানোর মাধ্যমে ওই গ্রাম সংগঠনের এবং অঞ্চলের মানুষদের মাঝে কোয়েল পাখি চাষে উদ্বুদ্ধ করণের মাধ্যমে দারিদ্রতা দূরীকরণ।
যমুনা সার কারখানায় নকল কেমিকেল সরবরাহ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের
যমুনা সারকারখানায় নকল কেমিকেল সরবরাহ করায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতারণার মালা দায়ের করা হয়েছে। এ মামলায় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স আপন ইমপোর্ট সেন্টারের সত্ত্বাধিকারী স্বপন কুমার দত্ত ও ম্যানেজার মাহবুব উল্লাহকে বিবাদী করা হয়। নকল এ কেমিকেল প্যারাফরমাল-ডিহাইড সরবরাহ করে ২ কোটি ৩৩লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় জেএফসিএল ও বাংলাদেশ কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কর্পোরেশন (বিসিআইসি)-তে তোলপাড় চলছে। এ ঘটনায় কারখানার উপ-ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন বাদী হয়ে গত সোমবার জামালপুর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঈনুদ্দিনের আদালতে প্রতারণা মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিসিআইসি’র চেয়ারম্যানকে তদন্তপূবক প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেছেন। কারখানা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১০ জানুয়ারী আন্তর্জাতিক দরপ্রত্রের মাধ্যমে ১০০৮ মে.টন প্যরাফরমাল-ডিহাইড-এর জন্য দরপত্র আহ্বান করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঢাকায় অবস্থিত মেসার্স আপন ইমপোর্ট সেন্টার দরপত্রে অংশ গ্রহণ করে সর্বনিম্ন দরদাতা নির্বাচিত হলে কর্তৃপক্ষ উক্ত প্রতিষ্ঠানকে প্যারাফরমাল-ডিহাইড সরবরাহের কার্যাদেশ প্রদান করে। সেই মোতাবেক গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর প্রথম দফায় কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে ২৮২ মে.টন নকল প্যারাফরমাল-ডিহাইড সরবরাহ করে ২কোটি ৩৩লাখ টাকার বিল হাতিয়ে নেয় মেসার্স আপন ইমপোর্ট সেন্টার কর্তৃপক্ষ। কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের নিজস্ব ল্যাবে ওই নকল কেমিকেলে কোন প্রকার প্যারাফরমাল-ডিহাইড খুঁজে না পেয়ে নকল কেমিকেল ফেরত নিয়ে টেন্ডারের শর্ত অনুযায়ী সঠিক কেমিকেল সরবরাহের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও ঠিকাদার কোন কর্ণপাত করেননি। পরে বাধ্য হয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ মেসার্স আপন ইমপোর্ট সেন্টার-এর স্বত্বাধিকারী স্বপন কুমার দত্ত, ম্যানেজার মাহবুব উল্লাহকে বিবাদী করে মামলা দায়ের করেন। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, কারখানায় নকল কেমিকেল প্যারাফরমাল-ডিহাইড সরবরাহ করায় তাদের বিরুদ্ধে প্রতারণা মামলা দায়ের করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বিসিআইসি কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এ মামলা দায়ের করা হয়েছে।