বি গ্রেড অভিনেত্রী পাওলির মূল্য ঢাকায় অনেক চড়া!
কলকাতার পাওলির বলিউডে ‘হেট স্টোরি’তে অভিনয় করা মাত্র তাঁর কদর বেড়ে যায় শত গুণ। তবে সেই কদরটা কিন্তু বলিউডে ঐশ্বরিয়া, রানী কিংবা ক্যাটরিনাদের মতো নয়। মূলত শরীরি আবেদনে পাওলীর দাম বেড়ে যায় অনেক।
সেই পাওলি দাম এখন ঢাকায়। আগমনের দিন থেকেই মিডিয়ার তীক্ষ্ণ নজর ভারতের এই খুল্লামখুল্লা ললনার দিকে। রক্ষণশীল সমাজে অশ্লীলতার মাত্রা ছাড়ানো এই নায়িকা ঢাকায় এসেছেন হাসিবুর রেজা কল্লোলের পরিচালনায় ‘সত্তা’ নামের একটি ছবিতে অভিনয় করার জন্য। শুটিংও চলছে। প্রশ্ন হচ্ছে পাওলির দাম কী সত্যি অনেক?
আপাতদৃষ্টিতে ঢাকার মিডিয়া ও নির্মাতাদের আগ্রহ দেখে তাই মনে হচ্ছে। তার কারণ কী? তাহলে একটু পিছন ফিরে তাকানো যাক।
২০১১ সালের ১৮ মে কান ফিল্ম ফ্যাস্টিভ্যালে প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ছত্রাক’ ছবিতে সহশিল্পী সুদীপ মুখার্জির সঙ্গে যৌনাবেদনময় বিছানার দৃশ্যে পাওলির সেই অভিনয় দেখতে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল দর্শক। কী ছিল সেই দৃশ্যে? যতটুকু দেখা গেছে, সম্পূর্ণ নগ্ন পাওলির ওপর শুয়ে আছেন সহশিল্পী সুদীপ। বিষয়টি শৈল্পিক হলে পুরোটাই অশ্লীল এবং ভারত কিংবা বাংলাদেশী রক্ষণশীল সমাজের জন্য অনৈতিক। কিন্তু পাওলির কাছে সেই দৃশ্য ছিল ডাল-ভাতের মতো। এরপর বলিউডের ‘হেট স্টোরি’।
মাত্র বছর দুয়েক আগের কথা। এই ছবিতে পাওলি দামের এক যৌন দৃশ্য সবাইকে আজও চমকে দেয়। এটি বলিউডে পাওলির প্রথম কাজ। সেখানেই তিনি চিত্রনাট্যের নাটকীয়তা ও ঘটনাচক্রে এক বারবণিতা হয়ে যান। এরপর সবাইকে নিজের শরীরি মহিমায় মুগ্ধ করতে থাকেন। সবাই সেই ফাঁদে পা দেয়। পাওলির আগে বলিউডেরই কোনো নায়িকাই যে কাজ করেননি বাঙালি হয়ে সেই সাহসিকতার পরিচয়টা দিয়েই ফেললেন তিনি। এ ছবিতে অনেকগুলো দৃশ্যে তাকে যৌনসঙ্গমে তো দেখা যায়ই, তাছাড়াও একটি দৃশ্যে টোটাল ব্যাক ওপেন হয়ে পর্দায় হাজির হন পাওলি। কিন্তু এভাবে শরীরের বসন খুলে কোনো লাভ হয়নি। এরপর দুটি মাত্র ছবি পেয়েছেন বলিউডে। তাও দ্বিতীয় গ্রেডের। শেষতক তাকে আবারও কলকাতায় ফিরে আসতে হল। কিন্তু এখানেও তার জন্য অপেক্ষা করছে দ্বিতীয় গ্রেডের ছবি। জিৎ, দেব কিংবা সোহমদের সঙ্গে অভিনয় করার জন্য তাকে কেউ ডাকেনি। ফলে পাওলি হয়ে যান দ্বিতীয় সারির নায়িকা।
এই দ্বিতীয় সারির নায়িকাকে নিয়েই বাংলাদেশে হুলস্থুল পড়ে গেছে। এর আগেও অবশ্য বাংলাদেশে এসেছিলেন পাওলি। গৌতম ঘোষেরই পরিচালনায় ‘মনের মানুষ’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। সেই ছবিটি অবশ্য যৌথ প্রযোজনার ছিল। কিন্তু এবারের ছবিটি সম্পূর্ণ বাংলাদেশী প্রযোজনায়। স্বভাবতই পাওলির দিকে নজর একটু বেশিই। এ ছবিতে আবার পাওলির বিপরীতে অভিনয় করছেন শাকিব খান। সব মিলিয়ে আবারও একটি ককটেলের অপেক্ষায় বাংলাদেশীরা।
কিন্তু প্রশ্ন জেগেছে, বাংলাদেশে এত নায়িকা থাকতে ভারতের অশ্লীল নায়িকাকে নিয়ে কেন বাংলাদেশী নির্মাতা-প্রযোজকদের এত মাতামাতি?
এমন প্রশ্ন দর্শকসহ এফডিসি সংশ্লিষ্ট নির্মাতা, শিল্পী-কলাকুশলীদের। তাদের প্রশ্ন, ভারতীয় দ্বিতীয় গ্রেডের এক নায়িকাকে নিয়ে বাংলাদেশী মিডিয়া এত উচ্ছ্বাস দেখাচ্ছে, অথচ বাংলাদেশের কোনো সুপারস্টারও যদি ভারতে যায় তাদের মিডিয়া কিংবা শিল্প-সংশ্লিষ্ট কোনো ব্যক্তি উঁকি দিয়েও দেখেন না। সংবাদ প্রকাশ তো অনেক দূরের বিষয়। বিষয়টি নিয়ে ভাববার সময় বোধহয় এখনি।