সংসদীয় কমিটির সুপারিশ আমলে নেয় না কেউ
সংসদীয় কমিটির শুপারিশ আমলে নেয় না কোন প্রতিষ্ঠানই। বিশেষ করে অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদের সংসদীয় কমিটিগুলোর সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু নথি চালাচালি করে কিন্তু এতে কোন কাজ হয় না।
মাঝে মধ্যে সংসদীয় কমিটি দিনক্ষণ বেঁধে দিলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সংসদীয় কমিটির সুপারিশ সত্ত্বেও আট বছরে ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি মন্ত্রণালয়। এতে সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার সচিবের দৃষ্টি আকর্ষণ করে কমিটির বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়। কমিটির ষষ্ঠ বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের এ চিত্র পাওয়া যায়।
সংসদ সচিবালয় সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদের ৫০টি সংসদীয় স্থায়ী কমিটি রয়েছে। এর মধ্যে সাতটি কমিটি সংসদ-সংশ্লিষ্ট। ‘সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’, ও ‘সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’ সাংবিধানিকভাবে সরকারের জবাবদিহি নিশ্চিত করে। সংসদীয় রাজনীতিতে ‘সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটি’ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এ ছাড়া ‘অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটি’সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয়-সংশ্লিষ্ট কমিটি সরকারের নীতি বাস্তবায়নে প্রশাসনের কার্যক্রম তদারকি করে থাকে। কার্যপ্রণালী বিধির ২৪৭ ও ২৪৮ ধারা মোতাবেক কমিটিগুলো সরকারি কাজের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে থাকে।
সুপারিশ আমলে নিচ্ছে না কেউ : কাজী কেরামত আলীর সভাপতিত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সরকারি প্রতিশ্রুতি সম্পর্কিত কমিটির নবম বৈঠকে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ধীরগতিতে কমিটি সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
বৈঠক সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদের শেষ অধিবেশন পর্যন্ত সময়ে সংসদের ফ্লোরে প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রী প্রদত্ত প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সফলতা দেখাতে পারেনি রেল মন্ত্রণালয়। ড. মো. আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্ব অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ব্যাংকিং খাতসহ হলমার্ক কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তারা এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিযুক্তদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে সংসদীয় কমিটি।
এদিকে সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি শওকত আলী বলেন, ‘সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠায় কমিটিগুলো নিজ নিজ সাধ্যমতো চেষ্টা করছে। আমরা আমাদের তৎপরতার সুফলও পাচ্ছি। বেসিক ব্যাংকের অনিয়ম ইত্যাদি বিষয়ে আমরা দুটি সভা করেছি’।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বৈঠকে যোগ দিয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। আমাদের প্রচেষ্টাকে সব মহল গুরুত্বসহকারে দেখছে। এখন পর্যন্ত কোনো পর্যায় থেকে বিরূপ পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। আমলে না নেওয়ার মতো ঘটনাও এখনো ঘটেনি।’