মুলতবি হয়ে গেল ফেলানী হত্যার বিচার
পশ্চিমবঙ্গের কুচবিহার জেলার বিএসএফ-এর আদালতে শুরু হওয়া বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী খাতুন হত্যার পুনঃবিচার মুলতবি হয়ে গেল।
গত ১৭ নভেম্বর ফেলানীর বাবার সাক্ষ্য শেষে আদালত মুলতবি ঘোষণা করা হয়। তবে বিএসএফর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বিষয়টি জানানো হয়েছে।
পুনরায় আদালতের কার্যক্রম কবে থেকে শুরু হবে এ ব্যাপারে বিএসএফ কোনো তথ্য জানায়নি।
গত ১৭ নভেম্বর থেকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে ওই জেলার সোনারিতে ১৮১ নং বিএসএফ-এর কেন্দ্রীয় ব্যাটেলিয়নের বিশেষ আদালতে বিচার ট্রাইব্যুনাল বসে।
সাক্ষ্য দিতে বাংলাদেশ থেকে আসেন ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম, কুডিগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট এস.এম.আব্রাহাম লিংকন এবং কুড়িগ্রাম ৪৫ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) এর ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মেজর হেমায়েতুল ইসলাম।
ওইদিনই আদালতে সাক্ষ্য দেন নিহত ফেলানীর বাবা। আদালতে সাক্ষ্য দিতে গিয়ে তার মেয়ের হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার দাবি করেন তিনি।
এরপর দিনই দেশে ফেরত যান নুরুল ইসলাম সহ বাংলাদেশ থেকে আগত ওই প্রতিনিধি দলটি। এরপরই আদালত মুলতবি হয়ে যায়।
বিএসএফ ডিআইজি (কুচবিহার সেক্টর) ডিএস সান্ধ্যা মুঠোফোনে শুক্রবার বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত এই মামালার কোনো নিষ্পত্তি হয়নি। আদালত যখন রায় দেবে তখন গণমাধ্যমকে জানানো হবে।’
তিনি আরও বলেন ‘আদালত মুলতবি হয়ে যাওয়ায় এই মুহুর্তে ফেলানীর বিচারপ্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে।’ তবে বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন বলে মূলতবির কারণ সম্পর্কে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর সীমান্তে কিশোরী ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে বিএসএফ ১৮১ ব্যাটালিয়নের চৌধুরীহাট ক্যাম্পের এক সদস্য।
বিএসএফ গুলিতে মৃত্যুর পর ফেলানীর মরদেহ দীর্ঘ সময় কাঁটাতারে ঝুলে থাকে। এরপর বাংলাদেশ সরকার তীব্র ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়ে এই ঘটনায় ন্যায় বিচার দাবি করে ভারতের কাছে।
গত বছরের ৫ সেপ্টেম্বর ওই আদালত উপযুক্ত প্রমাণ না পাওয়ায় অমিয় ঘোষকে ‘নির্দোষ’ বলে সাব্যস্ত করে।
কিন্তু বিএসএফের বিশেষ আদালত ফেলানী হত্যায় অভিযুক্ত বিএসএফ কনস্টেবল অমিয় ঘোষকে ‘নির্দোষ’ সাব্যস্ত করায় বাংলাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
বিএসএফ-এর নিজস্ব আদালতের রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন ফেলানীর বাবা-মা। এরপর গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই এই মামলার পুনর্বিচারের সিদ্ধান্তের কথা জানায় বিএসএফ।
এরপর চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর প্রথম এই মামলার পুনর্বিচার শুরু হয়। সাক্ষ্য দিতে আসেন ফেলানীর বাবা সহ তিন সদস্যের এক প্রতিনিধি দল। কিন্তু মামলা চলার ৫ দিন পরেই ওই আদালত মুলতুবি হয়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ থেকে আগত প্রতিনিধি দলটিকে সে দেশে ফিরে যেতে হয়। দ্বিতীয় দফায় গত ১৭ নভেম্বর ফের এই মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়।