মাদারগঞ্জে দুই শিক্ষকের দ্বন্দ্বে বিদ্যালয়ে তালা

Jamalpur-District-Map_0জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার নলকা শমসের ইউছুফ রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দুই শিক্ষকের দ্বন্দ্বে খেসারত দিচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষকের পদ নিয়ে সহকারী শিক্ষক ফরিদা সুলতানা ও আকলিমা খাতুনের মধ্যে ২০১১ সাল থেকে দ্বন্দ্ব চলছে। এর মধ্যে একজন বিদ্যালয় ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। ফলে প্রায় তিন মাস ধরে সেখানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের পাশে সহকারী শিক্ষক রুমানা জান্নাতের বাড়ির বারান্দায় পাঠদান করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যালয়টিতে চারজন শিক্ষক ও ১১৬ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। শিক্ষকরা হলেন ফরিদা সুলতানা, আকলিমা খাতুন, সুরাইয়া ও রুমানা জান্নাত।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মজিবর রহমান জানান, ফরিদা সুলতানা বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজমের চাচাতো বোন। বারবার ক্ষমতা দেখিয়ে বিদ্যালয়ে তালা লাগিয়ে দিচ্ছেন তিনি। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কয়েকবার বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। তাঁরা বিদ্যালয়ের তালা খুলে দিতে পারেননি।

প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন ওই বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর অবসর নেন। এর পরের দিন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ফরিদা সুলতানাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়। তিনি প্রায় একবছর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু তাঁর চেয়ে শিক্ষাগতযোগ্যতা বেশি থাকায় একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আকলিমা খাতুন ২০১১ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে প্রধান শিক্ষকের পদ দাবি করতে থাকেন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষকের পদ পেতে জামালপুর জজ আদালতে মামলা করেন ফরিদা সুলতানা। ওই মামলায় জয়ী হন আকলিমা খাতুন। গত ৬ আগস্ট ফরিদা সুলতানা ও তাঁর লোকজন বিদ্যালয় ভবনের চারটি কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন। এরপর থেকে আকলিমা খাতুনসহ অন্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ঢুকতে পারছে না।

আকলিমা খাতুন বলেন, ‘আইনি লড়াই শেষে আদালতের মাধ্যমে ন্যায়বিচার পেয়েছি। রায়ের কপি নিয়ে বারবার বিদ্যালয়ে ঢোকার চেষ্টা করেছি। রায়ের কপি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দিয়েছি। কিন্তু ফরিদা সুলতানা ও তাঁর লোকজন বিদ্যালয়ে আমাদের ঢুকতে দেননি।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম রায়ের কপি পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘ফরিদা সুলতানা আবারও হাইকোর্টে রায়ের বিরুদ্ধে রিট করেছেন বলে শুনেছি। কাজেই এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারব না।’

ইউএনও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমি কয়েকবার দু পক্ষকে ডেকে নিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু ফরিদা সুলতানা কোন কথা মানতে রাজি হননি।’

এ ব্যাপারে ফরিদা সুলতানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend