৭ খুনের ঘটনায় জড়িত র্যাবের ২৭ সদস্য, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুনের ঘটনার সাথে র্যাব-১১ এর সাবেক অধিকায়ক তারেক সাঈদ ও অপর দুই কর্মকর্তা আরিফ ও এমএম রানা সহ র্যাবের আরো ২৪ সদস্যের সরাসরি সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। ঘটনার সঙ্গে র্যাব সদর দফতরের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততাও পাওয়া যায়নি।
হত্যাকাণ্ডের পর হাইকোর্টের নির্দেশে র্যাব সদর দফতরের পক্ষ থেকে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো, তাদের রিপোর্ট থেকে এ তত্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। রোববার কমিটির পক্ষ থেকে হাইকোর্টে ওই তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়।
গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন কুমার সরকারসহ সাতজন অপহৃত হন। পরে ৩০ এপ্রিল তাদের মরদেহ শীতলক্ষা নদীতে ভেসে ওঠে।
জানা যায়, তারেক সাঈদ, রানা ও আরিফ ছাড়াও আরও ২৪ জন র্যাব সদস্য তাদের নিজেদের বিদ্যা-বুদ্ধি-বিবেক ও সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ত করেছেন বলেই তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
গত ৫ মে হাইকোর্টের বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র দাশ ও বিচারপতি রেজাউল হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে র্যাব-১১ এর ওই তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন এবং র্যাবকে এ বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে গ্রেফতার হন তারেক সাঈদ, রানা ও আরিফ। এর আগেই তিনজনকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরিয়ে এনে সামরিক বাহিনী থেকে অবসরে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে, ৮ মে র্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডিআইজি আফতাব উদ্দিনকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে র্যাব। কমিটির অপর সদস্যরা ছিলেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল খন্দকার গোলাম সারওয়ার, মেজর মোহাম্মদ সাদিক ও এসপি সাজ্জাদ। কমিটি প্রায় সাত মাস ধরে তদন্ত চালিয়ে তাদের রিপোর্ট চূড়ান্ত করেন। এরপর গত ২৩ মে (রোববার) তা হাইকোর্টে দাখিল করেন।
কমিটি এই দীর্ঘ তদন্তকাজে শতাধিক র্যাব কর্মকর্তা ও সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাধারণ মানুষ, প্রত্যক্ষদর্শী, ঘটনার শিকার সাত জনের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে। এছাড়াও সাত জনকে অপহরণের পর খুন করার আগে সেসব স্থানে নিয়ে যাওয়া হয় সেগুলো সরেজমিন পরিদর্শন করে তথ্য ও আলামত নিয়েই তার ভিত্তিতে তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন করে তদন্ত কমিটি।