সাবেক আইজিপি কাইয়ুমকেও দুদকের দায়মুক্তি পুলিশের অবৈধ সম্পদ নথিভুক্তিতেই নিষ্পত্তি
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে বার বার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
পুলিশের ছোট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার নজির থাকলেও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বেলায় তা একেবারেই কম। পুলিশের বড় কর্মকর্তাদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বেশিরভাগ অভিযোগই নথিভুক্তির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে। দুদক সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।
তবে কমিশনের দাবি, পুলিশের অভিযুক্ত বড় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য-প্রমাণ না থাকায় তাদের অভিযোগ নথিভুক্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুদকের এক কর্মকর্তা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘পুলিশের অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধানে বরাবরই ব্যর্থতার পরিচায় দিয়ে আসছে দুদক। তদবির ও স্বজনপ্রীতির কারণে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুসন্ধান ও তদন্ত অধিকাংশই আলোর মুখ দেখে না। কালেভদ্রে পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। আর মামলা হলেও তদন্তে তা আর গতি পায় না। অধিকাংশ অভিযোগই নথিভুক্ত করে নিষ্পত্তি করা হয়।’
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) বিভিন্ন সময় প্রকাশিত জরিপে পুলিশ ও রাজস্ব কর্মকর্তারা দুর্নীতির শীর্ষে বলে চিহ্নিত হলেও এদের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বেশিরভাগ অনুসন্ধান ও তদন্তই অগ্রসর হয় না।
জানতে চাইলে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘ক্ষমতাসীনদের ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ দুদকের ওপর আগের থেকেই রয়েছে। কমিশনের নেতৃত্বে আরও দৃঢ়তা দরকার। সর্বোপরি দুদককে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপমুক্ত রাখতে হবে। তা না হলে দুদক তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হবে।’
দুদক চেয়ারম্যান মো. বদিউজ্জামান দ্য রিপোর্টকে জানান, ‘সুনিদিষ্ট অভিযোগে থাকলে কমিশন কাউকে ছাড় দিচ্ছে না। স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে বর্তমান কমিশন কাজ করছে।’
দুদক সূত্র জানায়, সম্প্রতি অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে সাবেক আইজিপি মো. আব্দুল কাইয়ুমকে অব্যাহতি দিয়েছে দুদক। গত বছরের শেষের দিকে তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নামে দুদক। দীর্ঘ প্রায় এক বছর অনুসন্ধান শেষে সাবেক ওই আইজিপির বিরুদ্ধে কোনো অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ না পাওয়ায় কমিশন এ অভিযোগটিও নথিভুক্তির মাধ্যমে নিষ্পিত্তি করেছে। দুদকের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহিম অভিযোগটি অনুসন্ধান করেছেন।
এর আগে পুলিশের সাবেক আইজি এবং বর্তমান যুব ও ক্রীড়া সচিব নূর মোহাম্মদকে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে রেহাই দিয়েছে দুদক। একইভাবে রেহাই পেয়েছেন সিআইডির সাবেক পুলিশ সুপার এম রফিকুল ইসলাম, রাজধানীর রমনা থানার সাবেক ওসি শিবলী নোমানসহ আরও অনেকে। এ ছাড়া ঘুষ কেলেঙ্কারি থেকে ঢাকা মহানগর ডিবির ডিসি মোল্লা নজরুলকেও দায়মুক্তি দিয়েছে দুদক।