ভুঁয়াপুরের ৫৫ বীর মুক্তিযুদ্ধার ৪৩ বছর পর জামালপুরের কামালপুর ৭১-এর রণাঙ্গনের পরিদর্শন

Babul-Chistyজামালপুরের ধানুয়া-কামালপুর রনাঙ্গনে ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণকারী টাঙ্গাইল জেলার ভুঁয়াপুর উপজেলার ৫৫জন বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর গত ২২নভেম্বর শনিবার কামালপুর রনাঙ্গন ও বধ্যভুমি পরিদর্শন করেছেন। এ উপলক্ষে বকশীগঞ্জ উপজেলা এবং কামালপুর ইউনিয়ন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের পক্ষ থেকে ওইদিন বিকালে কামালপুর হাইস্কুল মাঠে টাঙ্গাইল জেলার ভুঁয়াপুর থেকে আগত ৫৫জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা দেয়া হয়। বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্র্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ হোসেন খান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ কেন্দ্রিয় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক বকশীগঞ্জের কৃতি সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল হক চিশতি বাবুল। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বকশীগঞ্জের উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুর রৌফ তালুকদার, বকশীগঞ্জ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান ও ভুয়াপুরের বাসিন্দা সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল লতিফ খান, আব্দুল জলিল খান, কামালপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল প্রমুখ। এছাড়া ওই দিন বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জনক আতিথেয়তা সাথে সম্মাননা পুরস্কার প্রদান করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। উল্লেখ্য, টাঙ্গাইল জেলার ভুঁয়াপুর উপজেলার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধ আব্দুল লতিফ খান ও আব্দুল জলিল খান’র নেতৃত্বে মোট ৫৫জন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে স্বাধীনতার ৪৩ বছর পর গত ২২নভেম্বর শনিবার ধানুয়া-কামালপুর ৭১এর রনাঙ্গন ও বধ্যভুমি পরিদর্শন করতে আসেন। তারা ৭১’র মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কামালপুর এলাকার ৩২টি বাঙ্কার ও পাকহানাদার বাহিনীর সৃষ্ট ২৮টি বধ্যভুমি পরিদর্শন করেন। এসময় তাদের সাথে যুদ্ধ ক্ষেত্রে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি স্মৃতিচারনণ করতে গিয়ে অনেকেই কান্নায় আবেগ আপপ্লুত হয়ে পড়েন। ভুয়াপরের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ খান, আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম, ফরমান আলী ও নয়া মিয়ার সাথে কথা বলে জানাযায়, তারা ১৯৭১সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সারা দিয়ে তৎকালিন ১৩৫ জন ছাত্র এসএসসি পরীক্ষা না দিয়ে ভুয়াপুর থেকে যমুনা নদী পথে নৌকা যোগে দেওয়ানগঞ্জের মানকের চর পৌছেন। পরে সেখান থেকে পায়ে হেটে কামালপুর হয়ে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের মহেন্দ্রগঞ্জ পৌঁছেন। তারা মুক্তিযুদ্ধের ১১নং সেক্টরের অধীনে অংশ গ্রহন করে ভারতের তোরা পাহাড়ে যুদ্ধের ট্রেনিং শেষে ধানুয়া-কামালপুর এলাকায় পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে কমপক্ষে ৬ বার সরাসরি সম্মুখ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। কামালপুর যুদ্ধকালীন সময়ে ক্যাপ্টেন সালাউদ্দিনসহ তাদের সাথী ২২জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন বলে জানান। পরে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বে প্রায় ৬ হাজার মুক্তিযোদ্ধা একত্রিত হয়ে টাঙ্গাইল জেলায় পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নিয়ে পাকহানাদাদের পরাজিত করে টাঙ্গাইলকে শত্রুমুক্ত করেন।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend