কেন্দ্রীয় কারাগারে লতিফ সিদ্দিকী
ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেয়ার মামলায় ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পনের পর লতিফ সিদ্দিকীকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ধানমন্ডি থানায় আত্মসমর্পণ করেন। পরে তাকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হলে বিচারক আতিকুর রহমান লতিফকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের এ আদেশের পর লতিফ সিদ্দিকীকে আদালতের হাজতখানা থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু কারাগারের পকেট গেট দিয়ে ঢুকতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তার দাবি ছিল, একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি অবশ্যই মূল গেট দিয়ে প্রবেশ করবেন। তাকে ভেতরে নিতে হলে কারাগারের মূল ফটক খুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমি এখনো এমপি। গত ৩০ বছর আমি পকেট গেইট দিয়ে ইন বা আউট হইনি।
কারা কর্মকর্তারা জানান, ইস্পাতের তৈরি মূল ফটকের গায়ে লাগোয়া ছোট আকারের ‘পকেট ফটক’ দিয়েই তারা আসামি ও কয়েদিদের আনা নেওয়া করেন। প্রিজন ভ্যান ও গাড়ি ঢোকানোর দরকার হলে অথবা বিশেষ প্রয়োজনে মূল ফটক খোলা হয়।
এটা নিয়ে পুলিশ ও লতিফ সিদ্দিকীর মধ্যে প্রায় ২০ মিনিট কথা-বার্তা চলে। পুলিশ সদস্য ও কারা কর্মকর্তারা বিষয়টি লতিফ সিদ্দিকীকে বোঝানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
প্রায় ২০ মিনিট কারাফটকের সামনে অবস্থান করার পর প্রধান ফটক খোলা হলে সেখান দিয়েই কারাভ্যন্তরে প্রবেশ করেন লতিফ সিদ্দিকী।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর সাথে জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইর্য়ক সফরকালে গত ২৮ সেপ্টেম্বর একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সেসময়কার (বর্তমানে সাবেক) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী লতিফ সিদ্দিকী বলেন, আমি কিন্তু হজ আর তাবলিগ জামাতের ঘোরতর বিরোধী। আমি জামায়াতে ইসলামীরও বিরোধী। তবে তার চেয়েও হজ ও তাবলিগ জামাতের বেশি বিরোধী। এ হজে যে কত ম্যানপাওয়ার নষ্ট হয়। হজের জন্য ২০ লাখ লোক আজ সৌদি আরবে গিয়েছে। এদের কোনও কাম নাই। এদের কোনও প্রডাকশন নাই। শুধু রিডাকশন দিচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তাবলিগ জামাত প্রতি বছর ২০ লাখ লোকের জমায়েত করে। নিজেদের তো কোনও কাজ নেই। সারা দেশের গাড়িঘোড়া তারা বন্ধ করে দেয়।
এই বক্তব্যের পর মন্ত্রিসভা থেকে বহিষ্কার ও শাস্তির দাবি উঠে।
নানান সমালোচনার মধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয় লতিফ সিদ্দিকীকে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের পদ থেকেও তাকে বাদ দেওয়া হয় এবং তার প্রাথমিক সদস্যপদ স্থগিত করা হয়।
তার বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে সারাদেশে ১৮টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ১১টি মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
দেশে ফিরবেন না ও কানাডায় থেকে যাবেন এমন গুঞ্জনের মধ্যে তিনি ভারতের কলকাতায় আসেন। গত ২৩ নভেম্বর রোববার তিনি আকস্মিকভাবেই ঢাকায় আসেন।