জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্র করে : প্রধানমন্ত্রী
সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, এ ব্যাপারে হাইকোর্ট রায় দিয়েছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে তিনি বিএনপি’র জন্ম দিয়েছিলেন। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারী দ্বারা গঠিত দলওতো অবৈধ হয়ে যায়।’
প্রধানমন্ত্রী আজ দশম জাতীয় সংসদের ৪র্থ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এ সব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, মার্শাল ল’ জারি করে ক্ষমতায় আসা এটা আবার কোন ধরনের গণতন্ত্র। তিনি বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বর্তমান সরকার সম্পর্কে দেয়া গতকালের বক্তব্য প্রসঙ্গে বলেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একটি সরকারকে তিনি কিভাবে একদলীয় সরকার বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন আওয়ামী লীগ নাকি মুক্তিযুদ্ধের দল নয়, তাহলে মুক্তিযুদ্ধ কারা করেছে? সে সময় কি বিএনপি’র জন্ম হয়েছিল? আমি অবাক হবো না যদি তিনি কখনো বলে বসেন যে- নিজামী, কামারুজ্জামান এরাই মুক্তিযুদ্ধ করেছিল। উনি এটা বলতেই পারেন। কারণ আসলামবেগ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ঢাকায় ছিলেন। তার লেখা চিঠি এ পার্লামেন্টে অনেকবার পঠিত হয়েছে। সেই চিঠিতে তিনি জিয়াকে তার কাজের জন্য সাবাশ দিয়েছিলেন। জিয়া পরিবারকে তারা যে সুন্দরভাবে রেখেছে, ওই চিঠিতে তাও উল্লেখ ছিল। জানজুয়া মারা যাওয়ার পর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন কোন ব্যথায় ব্যথিত হয়ে?’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ’৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ যদি মুক্তিযুদ্ধের দল না হয়, তাহলে কি আল-বদর, আল-শামস আর রাজাকার যাদের নিয়ে উনি জোট গঠন করেছেন তারাই কি মুক্তিযুদ্ধের দল। অসত্য কথা বলে মানুষকে বিভ্রান্ত করার বিচার জনগণ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, উনি এখন যা বলছেন, যাদেরকে আমরা মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত করেছিলাম ওই পাকিস্তানীরাও এ ধরনের কথা কখনও বলে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘উনাদের আন্দোলন নাকি মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার আদায়ের জন্য, অথচ মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়ার জন্য তার দল বিএনপি ও জামায়াত শত শত মানুষকে হত্যা করেছে। উনি এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। যারা এতিমের টাকা মেরে খায় তারা আবার কি অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে? আর উনারা যে ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলছেন, অথচ উনাদের অর্থমন্ত্রী এ সংসদেই বলেছিলেন দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন হওয়া ভালো নয়। কারণ স্বয়ংসম্পন্ন হলে বিদেশী সাহায্য পাওয়া যায় না।’
বিএনপি চেয়ারপার্সনের র্যাব বাতিল করার দাবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী এখন র্যাব বাতিলের কথা বলছেন, অথচ ক্ষমতা থাকাকালে র্যাবকে দিয়ে তিনি কত মানুষকে হত্যা করিয়েছেন, তার কোন হিসাব নেই।
প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে বলেন, দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্নতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশ এখন শ্রীলংকায় চাল রফতানি করছে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়েছে, ৫ কোটি মানুষ নিম্নবিত্ত থেকে মধ্য বিত্তে ওঠে এসেছে, ১ কোটির ওপরে মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, কোন মানুষ যাতে বেকার না থাকে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন ভাতা চালু করার মাধ্যমে দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, স্বাস্থ্যসেবা মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া হয়েছে, বাংলাদেশ এখন অর্থনীতির শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে। জাতীয় তথ্য বাতায়ন খোলা হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব।
শেখ হাসিনা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে এবং বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হবে, এটাই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।