পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বিশ্বে বিরল ঘটনা: প্রধানমন্ত্রী

PM-Hasina-1পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বিশ্বের ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ১৭ বছর পূর্তি উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। আগামীকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠেয় শান্তিচুক্তির ১৭ বছর উপলক্ষে পার্বত্য জেলাগুলোর জনগণ ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের সংঘাতময় পরিস্থিতি নিরসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর কোনো তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা ছাড়াই পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক জাতীয় কমিটি ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির মধ্যে ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।

তিনি বলেন, এই চুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জাতিগত হানাহানি বন্ধ হয়। অনগ্রসর ও অনুন্নত পার্বত্য অঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত হয় শান্তি। দেশের অখ-তা ও জাতীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার লক্ষ্যে একটি মহান পদক্ষেপ হিসেবে সর্বমহলে প্রশংসিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির জন্য ইউনেস্কো শান্তি পুরস্কার অর্জন এই চুক্তির আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রতীক।

পঁচাত্তর পরবর্তী সরকারগুলো পার্বত্য অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার পরিবর্তে নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য বাঙালি-পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছিল, এ অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুন, রাহাজানি, অত্যাচার-অবিচার, ভূমি জবরদখল এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপব্যবহার এ অঞ্চলকে আরো অস্থিতিশীল করে তোলে।

শেখ হাসিনা দাবি করেন, তার সরকার ১৯৯৬ সালে সরকার গঠনের পর বিবদমান সব পক্ষের সাথে ফলপ্রসূ আলোচনা করে সবাইকে শান্তির পথে ফিরিয়ে আনেন এবং শান্তিচুক্তি সম্পাদিত হয়। সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে ঐতিহাসিক এই চুক্তির বিরোধিতা করে পার্বত্য অঞ্চলকে পুনরায় অস্থিতিশীল করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের এ হীন উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

তিনি বলেন, আমরা পার্বত্য চুক্তির আলোকে এ অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ গঠন করি। আমাদের সরকার এ অঞ্চলের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ, মোবাইল নেটওয়ার্কসহ সব খাতের উন্নয়নে অনেক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। উপজাতি, নৃগোষ্ঠী ও ক্ষুদ্র জাতিসত্তার নিজস্ব ভাষা ও সংস্কৃতি সমুন্নত রাখার নানামুখী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভূমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী পার্বত্য শান্তিচুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়নে সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের সর্বত্র শান্তি বজায় রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend