ঢামেক থেকেই ডাস্টবিনে ফেলা হয় নবজাতকের লাশ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের ডাস্টবিন থেকে উদ্ধার হওয়া নবজাতকের লাশটি খোদ ওই হাসপাতাল থেকেই ময়লার সঙ্গে ফেলে দেওয়া হয়েছে। সোমবার সকালে উদ্ধার হওয়া ওই নবজাতকের লাশটি কীভাবে ময়লার সঙ্গে ডাস্টবিনে গেল— এ নিয়ে তদন্তে নেমেছে হাসপাতাল প্রশাসন।
দ্য রিপোর্টের অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢামেকের ১০৬ নম্বর প্রসূতি ওয়ার্ড থেকেই এই নবজাতকের লাশটি ফেলে দেওয়া হয়।
হাসপাতালের নিচতলার পরিচ্ছন্নকর্মী সুমন বলেন, সকাল ৯টার দিকে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ময়লার বিন নিয়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনের ডাস্টবিনে ফেলতে যান। সেখানে ময়লা ফেলে চলে আসার সময় উপস্থিত ডিএসসিসির পরিচ্ছন্নকর্মীরা ময়লার সঙ্গে ওই নবজাতকের মৃতদেহটি দেখতে পায়।
সুমন জানায়, হয়ত রবিবার রাতে ১০৬ নম্বর ওয়ার্ডে থাকা বিনের মধ্যে ময়লার সঙ্গে শিশুটিকে কেউ ফেলে দেয়।
ঘটনাস্থলে থাকা ঢাকা দিক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নকর্মী কাওসার আহমেদ ও নূরুল আফসার দ্য রিপোর্টকে জানান, হাসপাতাল থেকে সুমনের নিয়ে আসা ময়লার সঙ্গে ওই নবজাতকের লাশটি পাওয়া গেছে। এরপর পুলিশকে খবর দিলে তারা উদ্ধার করে নিয়ে যায়। তারা বলেন, ‘প্রায় দিনই এখানে নবজাতকের লাশ পাওয়া যায়।’
১০৬ নম্বর প্রসূতি বিভাগটি প্রশাসনিক ব্লকের অধীনে। এই ব্লকটির ওয়ার্ড মাস্টার আব্দুল আজিজ সরকার দ্য রিপোর্টকে বলেন, আমরা খবর পেয়ে নবজাতকের লাশ উদ্ধার করেছি। পরে মর্গ থেকে নিয়ে এসে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওয়ার্ড মাস্টার আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা পরিচ্ছন্নকর্মীর কাছ থেকে মালা নামের একজনের নাম জানতে পেরেছি। যে এর আগেও হাসপাতাল থেকে এভাবে নবজাতকের লাশ ফেলতে গিয়ে পরিচ্ছন্নকর্মীদের হাতে মার খেয়েছিল। এখন সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে কিনা— তা জানার জন্য তাকে খোঁজা হচ্ছে। তবে সন্ধ্যা নাগাদ তাকে হাসপাতালে খুঁজে পাওয়া যায়নি। মালা মানসিক রোগী। তাকে সামান্য টাকা দিলেই সে ময়লা-আবর্জনা ফেলার কাজ করে দেয় বলে অভিযোগ পেয়েছি।
ওয়ার্ড মাস্টার বলেন, ‘নবজাতকের লাশটি কোন ওয়ার্ড থেকে কারা ফেলে দেয় তার তদন্ত চলছে। তবে এর জন্য কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি।’
এদিকে হাসপাতালের দোতলায় থাকা আরেকটি প্রসূতি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, নবজাতকের লাশ ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া খুবই জঘন্য কাজ। কোনো পরিবার যদি দাফন-কাফনের সামর্থ্য না রাখেন তাহলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দিয়ে গেলে মর্গের মাধ্যমে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামে পাঠালে তারাই দাফন করে দেবে। তারপরও কেন এই ঘটনা ঘটছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের খুঁজে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. মো. মুশফিকুর রহমান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘হাসপাতালের সামনের ডাস্টবিন থেকে নবজাতকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় প্রাথমিকভাবে ওয়ার্ড-সংশ্লিষ্টরা তদন্ত করছেন। এখনো কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে মঙ্গলবার এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করার চিন্তা করা হচ্ছে।’