কিংস কাপে শেখ জামাল চ্যাম্পিয়ন
‘একটু লাইনে থাকুন। ইনজুরি সময়ের খেলা চলছে। এখনই শেষ…’—বাক্যটি শেষ করার আগেই রেফারির লম্বা বাঁশি। ফোনের অপরপ্রান্তে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের সভাপতি মনজুর কাদের উচ্ছ্বসিত ‘খেলা শেষ। আমরা চ্যাম্পিয়ন। আমার স্বপ্ন পূরণ হলো।’ সত্যিই স্বপ্ন পূরণ হলো শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের। গত ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় আইএফএ শিল্ডের ফাইনালে উঠেও রেফারির বিমাতাসূলভ আচরণে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি শেখ জামাল। শিল্ডের সেই শোক ভুলতে এবার ভুটানের কিংস কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পণ করেছিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলটি। মঙ্গলবার থিম্পুতে সে স্বপ্ন পূরণ করেছে বাংলাদেশের দলটি। ফাইনালে ভারতের অন্যতম সেরা ক্লাব পুনে এফসিকে ১-০ গোলে হারিয়ে ভুটানের ঐতিহ্যবাহী এ টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে মারুফুল হকের দল।
২৫ মিনিটে ইয়াসিন খানের গোলে এগিয়ে যাওয়া এবং বাকি সময় ওই গোল ধরে রেখে ভুটানের মাটিতে বাংলাদেশ ফুটবলের সাফল্যের চিত্রও আঁকল শেখ জামালের সেনানিরা। দুই ক্লাবের আড়ালে লড়াইটা ছিল বাংলাদেশ-ভারতেরও। জয়টা শুধু শেখ জামালেরই নয়, ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশেরও। বিজয়ের মাসের প্রথম দুই দিন দুটোয় বিজয়ের মালা গাঁথল দেশের প্রথম তিন খেলা। সোমবার ওয়ানডে ক্রিকেটে জিম্বাবুয়েকে ধবলধোলাই, ঢাকায় হকিতে চাইনিজ তাইপেকে ধরাশায়ী, মঙ্গলবার বিকেলে হকিতে থাইল্যান্ডকে চুরমারের পর সন্ধ্যায় ফুটবলে শেখ জামালের থিম্পু জয়।
ধানমন্ডি ক্লাব নাম পাল্টিয়ে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব হিসেবে নতুন পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর অনেক সাফল্য পেলেও তারা মুখিয়ে ছিল দেশের বাইরে থেকে একটি ট্রফি উড়িয়ে আনার। ফেব্রুয়ারিতে কলকাতায় শেখ জামালের স্বপ্নের তরীটা তীরে ডুবিয়ে দিয়েছিলেন রেফারি। দ্বিতীয় মিশনেই সফল তারা। কিংস কাপের ট্রফি উঁচিয়েই বীরবেশে ঢাকায় ফিরবে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলটি।
দেশের বাইরে থেকে আগে ট্রফি এনেছে দেশের দুই জনপ্রিয় দল মোহামেডান-আবাহনী। ট্রফি এনেছে মুক্তিযোদ্ধা এবং আরামবাগও। এবার তাদের সঙ্গে যোগ হয়েছে শেখ জামালের নাম। ১৯৮০ সালে নেপালের আনফা কাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল আরামবাগ। তার ২ বছর পর ভারতের আশিশ-জব্বার স্মৃতি টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হযেছিল মোহামেডান। ১৯৯১ সালে আবাহনী জিতেছিল ভারতের নাগজি ট্রফি, ১৯৯৩ সালে চার্মস কাপ। মুক্তিযোদ্ধা জিতেছিল ম্যাগডোনাস কাপ।