অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ছে
লাইফ-স্টাইলের ব্যাপক পরিবর্তনের ফলে অল্প বয়সী মেয়েদের মধ্যে ব্রেস্ট ক্যানসারের প্রবণতা বাড়ছে। সম্প্রতি কলকাতার অ্যাপোলো গ্লেনেগেলস হাসপাতাল ও ব্রেস্ট ইমেজিং সোসাইটি অফ ইন্ডিয়ার যৌথ উদ্যোগে দুই দিনব্যাপী এক জাতীয় সম্মেলনে ব্রেস্ট ক্যানসার সংক্রান্ত নানান তথ্যা জানা গেল। কলকাতার জনপ্রিয় দৈনিক এইসময়ে এ বিষয় নিয়ে সবিস্তারে জানিয়েছেন অ্যাপোলো হাসপাতালের কনসালট্যান্ট ব্রেস্ট রেডিওলজিস্ট ডা. সুমা চক্রবর্তী।
আমাদের দেশে শুধু স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ৭০ হাজারেরও বেশি মহিলা মারা গিয়েছেন ২০১২ সালে। গত দু`বছরে সংখ্যাটা আরও বেড়েছে। ব্যাপারটা যথেষ্ট অ্যালার্মিং হলেও ভয় পাবেন না। কেননা অনেক বার শোনা আর কমবেশি প্রত্যেকেরই জানা কথাটা মনে করিয়ে দিচ্ছি। অন্যান্য অসুখের মতো ব্রেস্ট ক্যানসারও শুরুতে ধরা পড়লে রোগীকে আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব। তবে প্রাইমারি স্টেজে ক্যানসার নির্ণয়ের জন্য সবার আগে প্রয়োজন জন-সচেতনতা। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি চিকিৎসকদেরও সচেতন হতে হবে। অথচ কয়েক বছর আগেও ছবিটা ছিল অন্যরকম। এ দেশের মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি অনেক কম ছিল। আর এখন ইউরোপ, আমেরিকার থেকেও অনেক বেশি সংখ্যক ভারতীয় মহিলা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হচ্ছেন। সচেতনতার অভাবে মৃত্যুও হচ্ছে অনেক বেশি। সমস্ত ক্যানসারে আক্রান্তদের মধ্যে ২৫ থেকে ৩১ শতাংশ মহিলা স্তন ক্যানসারে ভুগছেন। কলকাতার এই হার ২৬ শতাংশ। সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় জানা গিয়েছে, কয়েক দশক আগে ৫০ উত্তীর্ণ মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের ঝুঁকি ছিল ৬৫ থেকে ৭০ শতাংশ আর ৫০ বছরের নিচে এই হার ছিল ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ। কিন্তু বদলে যাওয়া খাদ্যাভ্যাস, স্মোকিং, সেকেন্ডারি লাইফ-স্টাইল, ওভার ওয়েট ইত্যাদি কয়েকটি কারণে চাইল্ড বিয়ারিং এজে অর্থাৎ ৪০ বছরের কম বয়সী মহিলাদের মধ্যেও ব্রেস্ট ক্যানসারের ঝুঁকি ভীষণ ভাবে বাড়ছে। ব্রেস্ট ক্যানসারের রোগীদের ৫০ শতাংশের বয়স ২৫ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে। তাই এ ব্যাপারে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে এখন থেকেই। যাঁদের পরিবারে স্তন ক্যানসারের ইতিহাস আছে, তাঁদের ২০ বছর পেরোলেই নিয়মিত সেল্ফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন করা জরুরি। একই সঙ্গে স্তনের যেকোনো রকম সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। সংকোচ করে রোগ গোপন করলে পরবর্তীকালে সমস্যা উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকবে। আরো একটা কথা জেনে রাখা ভালো যে ব্রেস্টের কোনো লাম্প বা টিউমার মানেই যে ক্যানসার, তা কিন্তু নয়। সফ্ট টিস্যু বিনাইন ডিজিজ হলে সামান্য চিকিৎসাতে তা সেরে ওঠে। যাই হোক না কেন সেল্ফ মেডিকেশন বা সংকোচ করে রোগ জটিল করে তুলবেন না। ভালো থাকুন।