ধনাঢ্যদের বিয়ে করে সম্পদ হাতিয়ে নেয়াই যার পেশা!
নাম তার আইরিন। মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের সরকারি কলোনির ১৭ নম্বর ভবনে পরিবারের সঙ্গে থাকেন। বিয়ে করেছেন একাধিকবার। কিন্তুৃ তারপরও নিজেকে অবিবাহিত দাবি করে একের পর এক বিয়ে করে যাচ্ছেন তিনি। টার্গেট করেন ধনাঢ্য কোন ব্যক্তিকে। পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন। এক পর্যায়ে সোনা-গয়না আর নগদ টাকা নিয়ে কেটে পড়েন। তার ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়েছেন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এক মার্কিন নাগরিক। এছাড়া আরও দু’ব্যক্তির সঙ্গেও একই কায়দায় প্রতারণা করেছেন।
আইরিন একাই নয়, তার পিতা স্কুল শিক্ষক আবদুল হাই ও ভগ্নিপতি দেলোয়ারও এই প্রতারণার সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রতারণার শিকার মার্কিন নাগরিক শরফুদ্দিন আহমেদ জানান, ২০০৫ সালে আইরিন আক্তারের ভগ্নিপতি দেলোয়ারের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পরপরই দেলোয়ার তাকে তার শ্যালিকার সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মায়ের মৃত্যুশয্যার কথা শুনে জুন মাসে শরফুদ্দিন আহমেদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসেন। এ সময় তড়িঘড়ি করে ওই বছরের পয়লা আগস্ট আইরিন আক্তারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। শরফুদ্দিন আহমেদ জানান, বিয়ের সময় আইরিন নিজেকে অবিবাহিতা দাবি করেছিলেন। বিয়ের কাবিননামাতেও তা লেখা রয়েছে। বিয়ের দুই দিন পর তিনি আমেরিকায় চলে যান। তিন মাস পর পিতার মৃত্যুর সংবাদে আবার দেশে আসেন এবং দীর্ঘ সময় বাংলাদেশে অবস্থান করেন। এ সময় আইরিন আক্তার সুকৌশলে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি হস্তগত করে নেয়ার চেষ্টা করেন।
আইরিন আক্তারের চাপের এক পর্যায়ে তার নামে ২০ লাখ টাকার ডিপোজিট করে দেন তিনি। শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, এক পর্যায়ে তিনি জানতে পারেন গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে পড়ার সময় বরিশালের মুলাদি থানাধীন বশির উদ্দিনের ছেলে জনৈক ইব্রাহীম খলিলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছিল। ২০০২ সালের ১১ই অক্টোবর সেই বিয়ে হয়। শরফুদ্দিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে আইরিনের সঙ্গে তার তর্ক-বিতর্ক হলে গত বছরের ৯ই মার্চ সে বাসা থেকে প্রচুর স্বর্ণালঙ্কার, নগদ টাকা ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রাদি নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায়। এ বিষয়ে তিনি তেজগাঁও থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং ৬২৮) করেন।
শরফুদ্দিন বলেন, কিছুদিন পর আইরিন তার কাছে সব স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা ফেরত দেয়ার শর্তে তার মণিপুরিপাড়ার বাসায় আসেন। এ সময় তিনি আইরিন আক্তারের কাছে একটি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর নেন। কিন্তু বাসায় কয়েক দিন থাকার পর আবারও বড় একটি লাগেজে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যান। শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, গত বছরের ২০শে আগস্ট জনৈক মোহসিন মিয়া ওরফে সোহাগ ও তার অভিভাবক তার বাসায় আসে। তারা জানায়, আইরিন আক্তার তাকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রচুর স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করেছে। বিষয়টি আইরিন স্বীকার করলে তিনি ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী সোহাগকে তার পাওনা ফেরত দেন। শরফুদ্দিন আহমেদ জানান, আইরিনের প্রতারণা বিষয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তিনি দু’টি পৃথক মামলা করেছেন।