পিয়নের হাতে বিচারক লাঞ্ছিত
ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : জেলার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক আহসান হাবিব লঞ্ছিত হয়েছেন রেকর্ড রুমের পিয়ন আমিনুল ইসলামের হাতে।
৩ নম্বর আমলি আদালতের বিচারকের কক্ষে রবিবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। তবে পিয়ন (এমএলএসএস) আমিনুল ইসলামের অভিযোগ, তাকে উল্টো মারধর করা হয়েছে। এ নিয়ে আদালতে ঘণ্টাখানেক বিচার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। ওই ঘটনার পর আদালতে আইনজীবীদের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অফিসিয়াল পোশাক ছাড়া অফিসে বিলম্বে উপস্থিত হয়ে দৈনিক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে চাইলে বিচারক আহসান হাবিব পিয়ন (এমএলএসএস) আমিনুল ইসলামকে বাধা দেন। আকস্মিক পিয়ন আমিনুল কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে বিচারককে আহত করেন। খবর পেয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এহসান আমিনুল ইসলাম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরে পিয়ন আমিনুলকে পুলিশে সোপর্দ করতে চাইলে আদালতের কর্মচারী ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ তাৎক্ষণিক তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসেন। এরপর চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এহসান আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে বিচারকগণ দুপুর ১২টার দিকে জরুরি বৈঠকে বসেন।
অনাকাঙ্খিত ওই ঘটনায় আদালতে ঘণ্টাখানেক বিচার কার্যক্রম বন্ধ থাকে। চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে বিচারকদের মাঝে।
বিচারকদের বৈঠক শেষে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক আহসান হাবিব উপস্থিত সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, ‘আদালতে কর্মচারীদের উপস্থিতির সময় সকাল ৯টা। কিন্তু রেকর্ড রুমের এমএলএসএস আমিনুল ইসলাম পৌনে ১০টায় আমার কক্ষে এসে হাজিরা খাতায় সই করতে চান। এ সময় তার বিলম্ব এবং অফিসিয়াল ড্রেস না পরার কারণ জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠেন। বলেন, ড্রেস পড়ে অফিসে আসতে হবে কোনো আইনে আছে।’
তিনি বলেন, ‘ওই সময় আমিনুলকে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বললে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে চেয়ারে বসা অবস্থায় কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে ফেলে দেন। মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তিনি আমার গলা চেপে ধরেন। তাৎক্ষণিক খবর পেয়ে চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এহসান আমিনুল ইসলাম আমাকে উদ্ধার করেন।’
ওই ঘটনার পর আদালত এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি ধামাচাপা দিতে আদালতের কর্মচারী ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ উল্টো ফন্দি আটছেন বলে বিচারকদের অভিযোগ।
তবে পিয়ন আমিনুল অভিযোগ করেন বলেন, ‘হাজিরা খাতায় সই করতে গেলে ম্যাজিস্ট্রেট তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে তাকে মারধর করে রুম থেকে বের করে দেওয়া হয়।’