অভিনেতা খলিলের জীবনাবসান

KHALILচিরদিনের জন্য না ফেরার দেশে চলে গেলেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের নন্দিত অভিনেতা খলিলউল্লাহ খান। রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে রবিবার সকাল ১১টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
গত ২ ডিসেম্বর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হন অভিনেতা খলিল। হাসপাতালের সিসিউ বিভাগে ডা. খালেদ মহসিনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন বর্ষীয়ান এই অভিনেতা।
চিত্রনায়ক আলমগীর তার পরিবারের পক্ষ থেকে জানান, এফডিসিতে রবিবার বিকেল ৩টায় প্রথম জানাজা, বাদ আছর মোহাম্মদপুরের নুরজাহান রোড মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর মোহাম্মপুর কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।
এদিকে অভিনেতা খলিলের মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে চলচ্চিত্র অঙ্গনে। খলিলের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে স্কয়ার হাসপাতালে আসেন অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। তিনি বলেন, তার সঙ্গে আমার সম্পর্কটা আত্মার। তার মৃত্যুতে আমার আত্মার একটা অংশ যেন ছিঁড়ে গেল। আমি খুবই মর্মাহত। এখন এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারছি না।’
প্রসঙ্গত, দীর্ঘদিন ধরেই শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন অভিনেতা খলিল। চলতি বছরের মে মাসে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রবীণ এই অভিনেতার চিকিৎসার সকল ব্যয় বহনের দায়িত্ব নেন। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১২ এর আজীবন সম্মাননায় ভূষিত হন তিনি।
অভিনয়ে খলিলের ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল টিভি নাটক দিয়ে। তবে চলচ্চিত্র অভিনেতা হিসেবেই পেয়েছেন মানুষের বিপুল ভালোবাসা।
৫৪ বছরের ক্যারিয়ারে প্রায় ৮০০ সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। ১৯৫৯ সালে জহির রায়হান পরিচালিত ‘সোনার কাজল’ সিনেমায় প্রথম অভিনয় করেন। খলিল অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলোর মধ্যে রয়েছে পুনম কি রাত, ভাওয়াল সন্ন্যাসী, উলঝান, সমাপ্তি, তানসেন, নদের চাঁদ, পাগলা রাজা, বেঈমান, অলঙ্কার, মিন্টু আমার নাম, ফকির মজনুশাহ, কন্যাবদল, মেঘের পরে মেঘ, আয়না, মধুমতি, ওয়াদা, ভাই ভাই, বিনি সুতার মালা, মাটির পুতুল, সুখে থাকো, অভিযান, কার বউ, কথা কও, দিদার, আওয়াজ, নবাব ইত্যাদি।
১৯৬৬ সালে এস এম পারভেজ পরিচালিত ‘বেগানা’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে ‘ভাওয়াল সন্ন্যাসী’ সিনেমার মাধ্যমে পরিচালক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সিপাহী ও এই ঘর এই সংসার নামে দুটি সিনেমা প্রযোজনা করেছেন খলিল।
শহীদুল্লাহ কায়সারের উপন্যাস অবলম্বনে আবদুল্লাহ আল মামুনের পরিচালনা ধারাবাহিক নাটক ‘সংশপ্তক’ এর মিয়ার বেটা চরিত্রে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসিত হন তিনি। বিটিভিতে প্রচার হয়েছিল সংশপ্তক নাটকটি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন এই অভিনেতা।

WP2Social Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
Send this to a friend