‘ডুপ্লিকেট খালেদা জিয়া’র বিয়ে ১৮ ডিসেম্বর
২০০১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপি নেতৃত্বাধীন তৎকালীন চারদলীয় জোটের জনসভা। যেখানে প্রধান অতিথির ভাষণ দেন তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া। জনসভা মঞ্চের পাশেই ৬ বছরের এক শিশুকে ঘিরে নেতাকর্মীদের উল্লাস-উদ্দীপনার স্লোগান। হাতে ধানের শীষ, পরনে হালকা গোলাপী শাড়ি, মাথাভরা চুল ও চোখে সানগ্লাস। সবকিছু মিলে খালেদা জিয়ার ডুপ্লিকেট।
ডুপ্লিকেট খালেদাকে নিয়ে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উল্লাসে মেতেছিলেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের চোখও এড়ায়নি। ফটোসাংবাদিকরা ছুটলেন খালেদারূপী ওই শিশুকন্যার ছবি তুলতে। ক্লিক ক্লিক শব্দে ছবি তুললেন যে যার মতো করে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও আসছে ওই শিশুর মুখ থেকে। এক প্রশ্নের উত্তরে সেদিন সে বলেছিল ‘আমার মার্কাও ধানের শীষ।’
খালেদারূপী (ডুপ্লিকেট খালেদা জিয়া) ওই শিশুটির নাম আল জাবাল ই নূর ঐশী। সেই ঐশী এখন রাজধানীর মানিকনগরে অবস্থিত বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজির অনার্সের ছাত্রী। আগামী ১৮ ডিসেম্বর তার বিয়ে। বর ডাক্তার, নাম মোহাম্মদ জুম্মান শুভ।
ঐশীর বাবা মো. আবুল কালাম আজাদ একজন রেডিমেড গার্মেন্টস ব্যবসায়ী ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক। বাসা রাজধানীর গেন্ডারিয়ায়।
তিনি বলেন, তখন (২০০১ সাল) আমি ছিলাম যুবদলের গুলিস্তান ইউনিটের সভাপতি। আওয়ামী লীগ সরকারবিরোধী আন্দোলন ছিল চাঙ্গা। ঢাকার মধ্যে নেত্রীর জনসভা বা অন্যান্য কর্মসূচিতে আমি যেতাম, সঙ্গে নিতাম ঐশীকে। নেত্রী যে ধরনের শাড়ি-চশমা পরেন, সেভাবে তাকে সাজিয়ে নিয়ে যেতাম। সবকিছু মিলিয়ে ঐশীকে নেত্রীর মতোই দেখা যেত। অনেকে তাকে বলত, ‘ডুপ্লিকেট খালেদা।’
তিনি বলেন, ঐশীকে নিয়ে তখন সাংবাদিকদেরও বেশ আগ্রহ ছিল। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া ঐশীর ছবি প্রকাশিত হতো দেশী-বিদেশী পত্রিকায়।
তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ২০০১ সালের ১০ মার্চ মিন্টো রোডের বাসায় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে। সেখানেও ঐশীকে দেখা গেছে (ছবিতে) খালেদারূপে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে খালেদারূপী ঐশীর ঘনিষ্ঠ অবস্থায় কথোপকথনের ছবি পরদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। খালেদা জিয়া পরেছেন হালকা ঘিয়ে (অফ হোয়াইট) রংয়ের শাড়ি আর ঐশীর গায়ে বেগুনী রংয়ের শাড়ি। এ দিন খালেদা জিয়ার চোখে সানগ্লাস ছিল না। তবে সানগ্লাস ছিল ডুপ্লিকেট খালেদার চোখে।
ঐশীর বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন, আগামী ১৮ ডিসেম্বর পুরানা পল্টনের আনন্দ ভবন কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে। বিয়েতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের পাশাপাশি নেত্রীকেও (খালেদা জিয়া) দাওয়াত দেওয়া হয়েছে।