আজ ৯ ডিসেম্বর নকলা মুক্ত দিবস
আজ ৯ ডিসেম্বর নকলা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে বীরমুক্তিযোদ্ধারা নিজেদের জীবন বাজি রেখে মরনপণ যোদ্ধ করে পাক হানাদার বাহিনকে শোচনীয় ভাবে পরাজিত করে অবরূদ্ধ নকলাকে হানাদার মুক্ত করেছিল।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবর রহমান জানায় ,নকলাকে মুক্ত করার জন্য বিভিন্ন কোম্পানীর হানাদার বাহিনীর সাথে যোদ্ধ করে টিকতে পারে নাই। পিছু হটতে বাধ্য হয়। অবশেষে ৬ ডিসেম্বর তারিখে ১১নং সেক্টরের কোম্পানী কমান্ডার হাজী জালমামুদ কলেজের প্রয়াত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে টু আই সি কমান্ডার আব্দুর রশিদ সিকিউরিটি অফিসার নকলা পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক একলিম শাহ্ কোরত কমান্ডার জুলহাস আলী ফকির প্লাটুন কমান্ডার যথাক্রমে নূরুল ইসলাম হীরা, আঃ আজিজ এবং আশ্রাব আলীসহ ১২৫ জন মুক্তিযোদ্ধা সুদূঢ় ভারত থেকে নকলাকে মুক্ত করার উদ্দেশ্যে বের হয় এবং তীক্ষè বুুদ্ধিমত্তা হক চৌধুরী তার বাহিনীকে নকলার চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘিরে ফেলে। টের পেয়ে হানাদার পিছু হটতে থাকে। তারা ৯ তারিখ ভোরে ময়মনসিংহের দিকে যাত্রা করলে পথিমধ্যে আত্মসমপর্ণ করতে বাধ্য হয়।
এমতাবস্থায় নকলা এলাকা পাক হানাদার মুক্ত করার মাধ্যমেই শেরপুরের নকলা উপজেলা পাকহানাদারদের হাত থেকে দখলদার মুক্ত হয়। হক কোম্পানী ১ শত ৩০ জন বদরকে আটকে ফেলে। তাদের মধ্যে ১ শত ১৭জন বদর তাদের কমান্ডার জামাল এবং মজিবর দাড়োগার নেতৃত্বে আতœ সমর্পণ করে। টু আইসি কমান্ডার আব্দুর রশিদ এবং কোয়ত কমান্ডার জুলহাস জানায়, তারা ১ শত ১৭টি অস্ত এবং যথেষ্ট পরিমানে গোলা-বারুদ জমা দিয়েছিল।বদরদের নকলা থানায় আটকে রাখা হয়। ৯ ডি¯ম্বর সকাল ১১ ঘটিকার সময় পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আনুষ্ঠানিকভাবে লাল সবুজে ঘেরা স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা হয়।
এ সময় লেঃ আবুতাহের মিত্র বাহিনীর অফিসার মেজর রানা শিং তৎকালীন ইপিআর ওয়ারলেজ অপারেটর মরহুম ফরহাদ চেয়ারম্যান,ল্যাফটেনেন্ট কামাল,প্লাটুন কমান্ডার এ বি সিদ্দিক, নালিতাবাড়ির গুজাকুড়ার প্লাটুন কমান্ডার জমির উদ্দিন, মুক্তিযুদ্ধের গোয়েন্দার কাজে দায়িত্ব প্রাপ্ত নালিতাবাড়ীর আবুল হাশেম সহ সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং গিয়াস কোম্পানী সহ মুক্তিকামী হাজার জনতার ঢল নামে। এ দিকে দিনটি পালন উপলক্ষ্যে মুক্ত দিবস উদযাপন কমিটি নামে একটি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। যার কমান্ডার ছিলেন গোলাম রব্বানী।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন সময়ে যারা শহীদ হয়েছিলেন তারা হলেন কাজাই কাটার যথাক্রমে- রমিছ উদ্দিন, সুলতান, কুর্শাবাদাগৈড়ের যথাক্রমে ওয়াহেদ আলী, হাসমত আলী, হযরত আলী, শাহেদ আলী ফকির, কবুতর মারীর আজিজুল হক বানের্শ্বদীর আনোয়ারুল হক, ধুকুড়িয়ার শশী, দুলাল উদ্দিন, নারায়নখোলার মঞ্জু, উরফার জমশেদ আলী, আব্দুর রশিদ, ২নং নকলার ইয়াদ আলী, সুরুজ্জামান, কিংকরপুরের আকবর আলী, গৌড়দারের ইদ্রিস আলী, দনাকুশা জামালপুর উদ্দিন লয়খার সুরুজ্জামান (মুক্তিযুদ্ধা সংসদ থেকে প্রাপ্ত তথ্য)।