গুজবে কান দেবেন না : জমির উদ্দিন
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের বক্তব্যকে ‘গুজব’ বলে আখ্যায়িত করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার বলেছেন, ‘গুজবে কান দেবেন না। খালেদা জিয়াকে নিয়ে ষড়যন্ত্র করে রাজনীতি থেকে সড়ানোর চেষ্টা হলেও তা বাস্তবায়ন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘দুই নেত্রীকে মাইনাসের চিন্তা আগেও হয়েছিল। এখন এক নেত্রী আরেক নেত্রীকে সরিয়ে দেওয়ার চিন্তা হিটলার-মুসলিনের চিন্তা হবে। আমি বলতে চাই, গুজব গুজবই। এই গুজব যদি সত্য হয় যারা বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন। ইতিহাস কখনো তাদের ক্ষমা করবে না।’
জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে সোমবার সন্ধ্যায় পূর্ব পাকিস্তানের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী এবং বাংলাদেশে সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আতাউর রহমান খানের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনায় সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। আতাউর রহমান ফাউন্ডেশন এ আলোচনার আয়োজন করে।
জমির উদ্দিন সরকার আতাউর রহমানের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত জীবনের ওপর বিশদ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আতাউর রহমান ছিলেন একজন সৎ মানুষ এবং যোগ্যলোক। এমন গণতন্ত্র মনা মানুষ খুব বিরল। তিনি সব সময় ভাবতেন শিক্ষিত মানুষদের কীভাবে সংসদে নিয়ে আসা যায়। ৭৯ সালের নির্বাচনে বিজ্ঞ লোক নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু এখন পাচ্ছি না।’
সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির বলেন, ‘শিশুদের পাঠ্যপুস্তকে একজনের ইতিহাস ছাড়া কিছু নেই। এক ব্যক্তির ইতিহাসের শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। জন্মের পর থেকে জাতির জনকের নাম শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। একটি শিশু জাতির জনক, বঙ্গবন্ধু, শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে কী বুঝে।’
মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর মতো নেতা আমরা দেখেছি। কিন্তু তাদের নিয়ে খুব একটা আলোচনা হয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা এর আগেও অবশ্য শুনেছি, এক নেতার এক দেশ, এক দলের শাসন।’
মুক্তিযুদ্ধ কী কোনো আদালতের নির্দেশে হয়েছিল— এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘তখন আদালত চলতো পাকিস্তান সরকারের নির্দেশে। আদালত রায় দিয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ষোষণা অমুক দিয়েছেন। এখন আদালত ডিসাইড করে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা কে দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ডেমোক্রেসি কোন পর্যায়ে গেছে। সত্যিকার অর্থে কোনো ডেমোক্রেসি নেই। বিনাভোটে নির্বাচিত ১৫৪ জনকে নিয়ে সংসদ গঠন করা হয়। এখানে ডেমোক্রেসি নেই ইলেক্টোক্রেসি আছে। সংসদে বিরোধী দল নেই। বিরোধী দল ছাড়া গণতন্ত্র রক্ষা হয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসের অবক্ষয় সমাজের মানুষের কাছে তুলে ধরতে হবে। সরকার যাই করুক না কেন, আমাদের বসে থাকলে চলবে না। নতুন প্রজন্মের জন্য কিছু লিখে যেতে হবে।’
বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সহ-সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন— বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. দেওয়ান সালাউদ্দিন, সাংবাদিক আমানুল্লাহ কবির, এ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম, এ্যাডভোকেট সাইদুর রহমান প্রমুখ।
এ ছাড়া আতাউর রহমান খানের ছেলে ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমানও বক্তব্য দেন।