খালেদার দুর্নীতি মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১৭ ডিসেম্বর
দিনভর হট্টগোলের মধ্যেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।
পুরান ঢাকার বকশীবাজার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায় সোমবার মামলার বাদী ও দুদকের উপ-পরিচালক হারুনুর রশীদের আংশিক সাক্ষ্য নেন। অবশিষ্ট সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৭ ডিসেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়েছে।
সাক্ষ্যদানের সময় বিচারককে মামলার এজাহার পড়ে শোনান বাদী। সাক্ষ্য চলাকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এজলাসের সামনে হট্টগোল করতে থাকেন। বাদীকে উদ্দেশ করে তারা বলতে থাকেন, ‘তুই দুর্নীতিবাজ, তুই দুদকের দালাল।’
বিচারক এক পর্যায়ে আইনজীবীদের হট্টগোলের কারণে সাক্ষ্যগ্রহণ মুলতবি ঘোষণা করে পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
এর আগে সোমবার সকালে খালেদা জিয়ার আইনজীবী এ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মেজবা সাক্ষ্য পেছানোর জন্য আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, ন্যায়বিচার ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কায় বিচারিক আদালত পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে এবং তা শুনানির জন্য রয়েছে। সময়ের আবেদনে আরও বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়া নিরাপত্তার কারণে আদালতে আসতে পারেননি।
আসামিপক্ষে সময় আবেদনে শুনানি করেন, সাবেক এ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহাব উদ্দিন খোকন, সাবেক ঢাকা বারের সভাপতি জয়নুল আবেদনসহ প্রমুখ।
অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল সাক্ষ্য নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত আসামিপক্ষের আবেদন নামঞ্জুর করে বাদীকে সাক্ষ্য দিতে বলেন। খালেদা জিয়া যেন পরবর্তী সময়ে আদালতে হাজির হতে পারেন এ জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে আদালত যথাযথ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এ বছরের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার অর্থ লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার অপর আসামিরা হলেন— খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
অপরদিকে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন— মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।