আনুষ্ঠানিকভাবে আফগান যুদ্ধ ‘শেষ’ করল ন্যাটো
তালেবানবিরোধী দীর্ঘ ১৩ বছরের যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সমাপ্তির ঘোষণা দিল ন্যাটো ও মার্কিন সেনাবাহিনী।
যুক্তরাষ্ট্রে ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের তালেবান-আক্রমণের পর তদানীন্তন আফগান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ করে আসছিল ন্যাটো ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথবাহিনী।
পূর্বনির্ধারিত ২৮ ডিসেম্বরের মধ্যে যে যুদ্ধের অবসান হওয়ার কথা, তার আনুষ্ঠানিক দুটো ঘোষণার প্রথমটা এলো সোমবার। খবর এনডিটিভির।
এতে বলা হয়, ন্যাটো ও মার্কিন যৌথবাহিনী আফগানিস্তানে তাদের সামরিক যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছে।
তবে সামরিক এই যৌথবাহিনীর কমান্ডার জেনারেল জন এফ ক্যাম্পবেল বলেছেন, স্থানীয় সেনাদের প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতা করার জন্য এরপরও কিছু সেনা রয়ে যাবে আফগানিস্তানে।
ক্যাম্পবেল বলেছেন, ‘আফগান নিরাপত্তাবাহিনীই এখন যথেষ্ট। নেতৃত্বে কিছুটা বদল আনতে হবে তাদের। এবং সেটা তারা করছেও।’
খবরে বলা হয়, তালেবান ঠিক যে সময় হামলা-আক্রমণ বাড়িয়েছে সে সময়ই ন্যাটোর অভিযান শেষ হলো।
এমনকি সোমবারও দেশটিতে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। কান্দাহার প্রদেশের একটি পুলিশ স্টেশনে হামলার সময় তিন আত্মঘাতী হামলাকারী নিহত হয়েছে। প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র সামিম আখপক বলেছেন, ওই হামলায় হতাহতের সংখ্যাটি তাৎক্ষণিকভাবে অস্পষ্ট।
চলতি বছরে তালেবানবিরোধী যুদ্ধে অন্তত চার হাজার ৬৩৪ জন নিহত হয়েছে। গত বছরের তুলনায় যা সাড়ে ছয় শতাংশ বেশি। ২০১৩ সালে নিহত হয়েছিল চার হাজার ৩৫০ জন।
আফগান যুদ্ধে ২০০১ সাল থেকে এ পর্যন্ত অন্তত সাড়ে তিন হাজার বিদেশি সেনা নিহত হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজার ২১০ জন মার্কিন সৈনিক।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সম্প্রতি তালেবান ও আল কায়েদা যোদ্ধাদের ওপর অভিযানের অনুমতি দিয়েছেন তার সেনাবাহিনীকে। ফলে আসছে বছরেও আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর অভিযান অব্যাহত থাকছে।
২০১১ সালে আফগানিস্তানে মোতায়েন ন্যাটো সদস্যের সংখ্যা ছিল এক লাখ ৪০ হাজার। বর্তমানে রয়েছে ১৫ হাজার। ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দেশটিতে ১৩ হাজার সদস্য থাকবে। এর মধ্যে ১০ হাজার আটশই মার্কিন সেনা।
এমনকি, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ন্যাটো কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আগামী বছরের প্রথম তিন মাসের পর নতুন এক হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে আফগানিস্তানে।
তবে ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ দেশটিতে মার্কিন সেনার সংখ্যা কমে দাঁড়াবে সাড়ে পাঁচ হাজারে।
২০১৬ সালের শেষ নাগাদ আফগানিস্তান থেকে সব সেনাই প্রত্যাহার করে নেবে যুক্তরাষ্ট্র।