জামালপুর মুক্ত দিবস আজ
জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুর মুক্ত দিবস ১০ ডিসেম্বর। জামালপুর মহকুমা শহরে ঘাঁটি গাড়া পাকিস্তানী ৩১ বালুচ রেজিমেন্ট একাত্তরের এই দিনে আত্মসমর্পণ করে।
জামালপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম খোকা দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘মিত্রবাহিনীর সহযোগিতায় আমরা পাকবাহিনীর পতন ঘটিয়ে জামালপুরকে হানাদারমুক্ত করতে সক্ষম হই।’
তিনি বলেন, জামালপুরে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় বদি কোম্পানি, আলম কোম্পানি, জালাল কোম্পানিসহ মুক্তিযোদ্ধের বেশকটি কোম্পানি। ৯ ডিসেম্বর রাতে তারা একত্রিত হয়ে হানাদারবাহিনীর বিরুদ্ধে চূড়ান্ত যুদ্ধে অংশ নেয়।
আঞ্চলিক অধিনায়ক ইউসুফ আলীর নির্দেশে বীরপ্রতীক মুন্সী জহুরুল হক ৯ ডিসেম্বর রাতে জামালপুর প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই) পাকসেনা ক্যাম্পের কমান্ডিং অফিসার কর্নেল সুলতান খানের কাছে আত্মসমর্পণপত্র নিয়ে যান। ওই আত্মসমর্পণপত্র পেয়ে সুলতান খান তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠেন। জহুরুল হককে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে তার শরীরে টাইমবোমা বেঁধে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে ফেলে দেয় পাকসেনারা। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ।
৯ ডিসেম্বর প্রায় রাতভর যুদ্ধের পর সকালে পাকিস্তানী সেনাদের মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা যায়। জীবিত সেনারা প্রাণভয়ে দিগ্বিদিক ছোটাছুটি করে পালাতে চেষ্টা করে। এই যুদ্ধে ২৩৫ জন পাকসেনা নিহত, ২৩ জন আহত এবং ৬১ জন পালাতে গিয়ে বন্দী হয়। ৩৭৬ জন আত্মসমর্পণ করে। এর পর উত্তোলন করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা।
জামালপুর মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জামালপুর জেলা ইউনিট। কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মাহবুবুল হক বাবুল চিশতী। অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত থাকবেন।