২৬ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতিকে তলব
এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ বাবদ সরকারি নির্ধারিত চেয়ে অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে আদালতের দেওয়া আদেশ না মানায় ২৬টি স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ৬ জানুয়ারি তাদেরকে সশরীরে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি আবু তাহের মো সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রবিবার এ আদেশ দেন।
এর আগে ১০ নভেম্বর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে ফরম পূরণ বাবদ অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধের নির্দেশ দেন একই আদালত।
একই সঙ্গে এই অতিরিক্ত ফি আদায় করাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছিল।
শিক্ষা সচিব, সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ২৬ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যানকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল।
পাশাপাশি বাড়তি ফি আদায় বন্ধে কি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তার অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিল করতে বোর্ড চেয়ারম্যানদেরকে বলা হয়েছে।
দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় ‘আট গুণ বাড়তি ফি আদায়’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনটি নজরে নিয়ে স্বপ্রণোদিত হয়ে আদালত এ আদেশ দেন। এছাড়া যুগান্তরের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে তার প্রতিদেন আদালতে দাখিল করতে বলা হয়।
যুগান্তরের পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী এহসানুর রহমান প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করলে আদালত এ আদেশ দিয়েছেন বলে তিনি জানান।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর উত্তরা ফায়দাবাদের দ্য চাইল্ড ল্যাবরেটরি স্কুলের ছাত্রী মাহফুজার কাছে স্কুল কর্তৃপক্ষ ফরম পূরণ বাবদ চেয়েছে ১১ হাজার টাকা। কিন্তু তাদের অসচ্ছল পরিবারের পক্ষে এই অর্থসংস্থান সম্ভব নয়। তাই নালিশ জানাতে এসেছে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে।
ফরম পূরণে বোর্ড নির্ধারিত ফি সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু এর বাইরেও বড় অংকের ফি আদায় করায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। অনেকে অভিযোগ করেছেন, চাহিদা মতো অর্থ না দিতে চাইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করছেন। তারা এর প্রতিকার চান।
রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরম পূরণের টাকার সঙ্গে ৩ মাসের বেতন, সেশন, কোচিং, মডেল টেস্ট ফি ইত্যাদি মিলিয়ে মণিপুর হাইস্কুলে সাড়ে ৯ হাজার টাকা, মিরপুর জান্নাত একাডেমি হাইস্কুলে ৭ হাজার ৭০০, আলিমউদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ হাজার ৯০০, ভিকারুন নিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে সাড়ে ৪ হাজার টাকা, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫ হাজার, খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল হাইস্কুলে ৫ হাজার ৯০০, মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৫ হাজার, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৪ হাজার ৭৯০, রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে ৬ হাজার ৬৫২, রামপুরা একরামুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৫০০, মগবাজার নজরুল শিক্ষালয়ে ৮ হাজার, বাসাবোর কদমতলা স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৯ হাজার, সদরঘাটের পোগোজ স্কুলে ৬ হাজার, হাটখোলার মিতালী বিদ্যাপীঠ স্কুলে সাড়ে ৬ হাজার, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ৮ হাজার, শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৭০০, রামপুরা একরামুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে ৬ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। এর বাইরে এসব স্কুলের পরীক্ষার্থীরা ফরম পূরণ বাবদ বিভাগ ভেদে ১ হাজার ৫৮০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৬৭০ টাকা বাড়তি দিচ্ছে।