মারদাঙ্গা পুলিশ
প্রকাশ্যে জনপথে নারী পথচারীকে চুলের মুঠি ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ; বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তীচ্ছু শিক্ষার্থীদের আন্দোলন পণ্ড করতে পুলিশ পরিদর্শক পেছন থেকে লাথি মারছেন তরুণী বিক্ষোভকারীকে; লাঠি হাতে পুলিশ সদস্যরা (পুরুষ) রুচিহীন মন্তব্য ছুড়ছেন নারী আন্দোলনকারীদের প্রতি- এ ধরনের দৃশ্য প্রায়ই চোখে পড়ে। এসবের চেয়ে ভয়াবহ ঘটনাও চোখে পড়ে। যাঁরা এমন করেন তাঁরা নিজেদের আইনের, শৃঙ্খলার রক্ষক দাবি করেই করেন; যদিও ঘটনাক্রম বলে তাঁরা কার্যত ‘আইন-রাক্ষস’। কারণ আইনকে ‘রক্ষা’র নাম করে ‘গলাধঃকরণ’ করছেন তাঁরা। প্রতিকার বা প্রতিরোধের কেউ নেই ভেবে পুলিশ ক্রমশ হয়ে উঠছে ‘পুলিশাসুর’।
সাম্প্রতিক এ রকম বেশ কিছু ঘটনাচিত্র বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশের বুট-লাঠির টার্গেট আন্দোলনরত নারীর শরীর। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, কোনো প্রতিকার না থাকায় বাড়ছে এ ধরনের ‘অসভ্যতা’।
বিচ্ছিন্ন হলেও এসব ঘটনা, আচরণ কালিমালিপ্ত করছে পুরো পুলিশ বাহিনীকেই। অথচ দৃষ্টান্তমূলক কোনো শাস্তির নজির এখনো স্থাপিত হয়নি। গণমাধ্যমে কোনো ঘটনার খবর এলে সাময়িক বরখাস্ত, বেতন কর্তন প্রভৃতি লঘু দণ্ডেই পার পেয়ে যায় অভব্য পুলিশ।
ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে রাস্তা পার হওয়ার ‘অপরাধে’ এক নারীকে এভাবেই ধরে আনে পুলিশ। – ফাইল ছবি
পুলিশের এ ধরনের আচরণ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বিচ্ছিন্ন কিছু বিব্রতকর ঘটনা ঘটেছে। তা অস্বীকার করার কিছু নেই। অনেক সময় পুলিশ সদস্যরা জমায়েত সরাতে গিয়ে ধৈর্য হারিয়ে এ ধরনের অঘটন ঘটিয়ে ফেলে। পরে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এসব ঘটনার জন্য পুরো বাহিনীকে দোষারোপ করা যাবে না।’
অপরাধ বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হাফিজুর রহমান কার্জন বলেন, অনেক ঘটনাতেই পুলিশ সদস্যদের আচরণ শুধু অমানবিক নয়, বরং বর্বর ও অসভ্য। দায়ী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিলে এ-জাতীয় ঘটনা কমে আসবে। পুলিশকে পুরোপুরি গণমুখী করতে বিস্তর প্রশিক্ষণ দরকার। পুলিশ বিভাগের সংস্কার জরুরি। তাদের যথাযথভাবে মানবাধিকারবিষয়ক প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয়বার ভর্তি পরীক্ষার সুযোগ চেয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গত রবিবার আকস্মিকভাবে চড়াও হয় পুলিশ। সে সময় অন্তত দুজন ছাত্রীকে পেছন থেকে লাথি মারেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হাবিল হোসেন। ওই ঘটনার ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে জনমনে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একজন প্রথম শ্রেণির পুলিশ কর্মকর্তার এ কাণ্ড বিস্মিত করেছে সবাইকে। অথচ শাহবাগ মোড়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে ওই মুহূর্তে বড় ধরনের কোনো উত্তেজনা ছিল না; ভাঙচুর-বিশৃঙ্খলার তেমন আশঙ্কাও ছিল না। ছবির ফ্রেমে সব ধরা না পড়লেও ওই সময় পুলিশের হাতে বেশ কজন তরুণী লাঞ্ছিত হয় বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইতিবাচক খবর এটুকুই যে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবির সূত্র ধরে পরিদর্শক হাবিল হোসেনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। এ কথা জানিয়েছেন পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার আবদুল বাতেন।
রাজধানীতে যত্রতত্র রাস্তা পারাপার বন্ধ করতে পুলিশ গত মাসের শেষ সপ্তাহে বিশেষ অভিযানে নামে। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের একটি ঘটনায় পুরো বিষয়টি সমালোচনার মুখে পড়ে। তানিয়া নামের এক নারীকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয় পুলিশের হাত কামড়ে দেওয়ার অভিযোগে। পরে গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়- রাস্তা পার হতে উদ্যত ওই নারীকে পুলিশ চরম অবমাননাকর উপায়ে চুলের মুঠি ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল প্রকাশ্যে। তানিয়ার শাস্তি হলেও দৃষ্টিকটু, অবমাননাকর ওই ঘটনার কোনো তদন্ত হয়নি।
রাজশাহীতে গত সোমবার কলেজছাত্রীদের বিক্ষোভ মিছিল ছত্রভঙ্গ করতে গিয়ে পুলিশ চরম অশোভন আচরণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। ওই ঘটনার বেশ কিছু আলোকচিত্রেও দেখা গেছে পুলিশের ‘অপকর্মের দৃশ্য’। শিক্ষার্থীরা জানান, তাঁদের ওপর হামলার নেতৃত্বে ছিলেন নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নূর হোসেন খন্দকার এবং নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আবদুল মজিদ। তাঁদের নেতৃত্বে অন্তত ১৫ জন পুলিশ সদস্য সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠিচার্জে অংশ নেয়। কয়েকজন গোয়েন্দা পুলিশকে বন্দুক তাক করে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতেও দেখা গেছে।
সম্প্রতি বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে। পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চলে যাওয়ার সুযোগ না দিয়ে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে। নারী পুলিশ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রীদের ওপর লাঠি নিয়ে হামলে পড়ে পুরুষ পুলিশ সদস্যরা।
পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনের ওই ঘটনার তদন্ত শুরু হলেও সঠিক বিচারের ব্যাপারে সন্দিহান শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট অন্যরা। কোতোয়ালি থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেন তাঁর নেতৃত্বে ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনা অস্বীকার করেছেন।
গত ২৭ অক্টোবর ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজ হোস্টেলে সিট বরাদ্দে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনা নিয়ে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। সেখানেও পুলিশের আচরণ ছিল চরম আপত্তিকর। ছাত্রীদের হল ত্যাগে বাধ্য করতে মহিলা পুলিশের পাশাপাশি পুরুষ পুলিশ সদস্যরাও চড়াও হয়। কলাপসিবল গেট খুলে ভেতরে ঢুকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, গুঁতিয়ে আহত করা হয় মেয়েদের।
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, পুলিশ সদস্যরা সম্প্রতি যেসব ন্যক্কারজনক ঘটনার জন্ম দিয়েছে তা সুশিক্ষায় শিক্ষিত কারো পক্ষে সম্ভব নয়। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অনেক সময় নির্মম আচরণ করলেও তা কেন সভ্যতার পরিপন্থী হবে না? এগুলো তো রাজনৈতিক অথবা কোনো জঙ্গি অন্দোলন ছিল না। সাধারণ শিক্ষার্থী ও নারীদের হটাতে গিয়ে পুলিশ অন্য কোনো কৌশল নয়, অসভ্যতাকেই কেন অবলম্বন করবে? এটা কাম্য হতে পারে না। পুলিশে নিয়োগের আগে ছয় মাসব্যাপী প্রশিক্ষণের মূল বিষয় আচরণ ও মানবাধিকার। কিন্তু পুলিশ সদস্যরা হরহামেশা এ শিক্ষা থেকে বিচ্যুত হয়।
ছাত্রছাত্রীদের ওপর লাঠিপেটা ও নির্যাতনের ভয়ংকর এক ঘটনা ঘটেছিল চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হলে এক ন্যক্কারজনক অভিযান পরিচালনা করেছিল পুলিশ। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন চালায় তারা। ওই ঘটনার পর দীর্ঘদিন পুলিশের আচরণ যথেষ্ট সহনশীল ছিল। সাম্প্রতিক সময়ে তেল-গ্যাস রক্ষা আন্দোলন ও তোবা গার্মেন্ট কারখানার শ্রমিকদের আন্দোলন বানচাল করতে কিছু পুলিশ সদস্যের ‘অশোভন’ আচরণ আবারও তাদের আলোচনায় নিয়ে আসে। গত দুই সপ্তাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রীদের প্রতি পুলিশের আচরণ নতুন সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী অ্যাডভোকেট এলিনা খান কালের কণ্ঠকে বলেন, পুলিশের দায়িত্ব মানবাধিকার রক্ষা ও নাগরিকদের নিরাপত্তা দেওয়া। কিন্তু নাগরিকরা বরং পুলিশের হাতে নানাভাবে নাজেহাল হচ্ছে। পুলিশ প্রকাশ্য স্থানে নারীদের যেভাবে অসম্মান করছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ঘটনা ঘটলেও দায়ী ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে না। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা থাকলে এরকম ঘটনা কমতে বাধ্য।
পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পুলিশের আচরণের বিচ্যুতির ঘটনাগুলো আমলে নেওয়া হয় ব্যাপক প্রতিক্রিয়া ও সমালোচনা দেখা দিলে। সামাজিক চাপ সৃষ্টি হলে তৎক্ষণাৎ সাময়িক বরখাস্ত করে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বেতন কর্তনের মতো লঘু দণ্ডে পার পেয়ে যায় দায়ী পুলিশ সদস্য। আরো জানা গেছে, পুলিশের হাতে লাঞ্ছিত কোনো আন্দোলনকর্মী অভিযোগ নিয়ে যান না গ্রেপ্তারের ভয়ে। আর এ কারণেই পার পেয়ে যায় দায়ী পুলিশ। ২০১২ সালে জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে তাদের মনস্তত্ত্ববিদ দিয়ে আচরণ (কন্ডাক্ট) শেখানোর সিদ্ধান্ত নেন পুলিশ কর্মকর্তারা। এরপর বিভিন্ন সময় প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়। পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন সময় তাদের আচরণ সংযত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানে না অনেক সদস্যই। এটা ব্যক্তির সমস্যা বলে মনে করেন পুলিশ কর্মকর্তারা। সামগ্রিকভাবে পুলিশ সদস্যদের আচরণ আগের চেয়ে অনেক উন্নত ও মানবিক হয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কোনো পুলিশ সদস্যের আচরণ নিয়ে অভিযোগ এলে বরাবরই তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর পুলিশ বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এমন আচরণের কোনো ছবি প্রকাশ পেলে তা বিশ্লেষণ করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো প্রকার শিথিলতার নজির নেই।’ শাহবাগে সংঘটিত ঘটনাটি তদন্তাধীন আছে বলে তিনি জানান।
আহত শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে আমাদের রাজশাহী অফিস থেকে রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের তিন ছাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে সোমবার দুপুরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জের নেতৃত্বে ছিলেন দুই ওসি। একজন নগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নূর হোসেন খন্দকার এবং অন্যজন নগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আবদুল মজিদ। পুলিশের বেপরোয়া লাঠিচার্জে টিকতে না পেরে শিক্ষার্থীরা স্থান ত্যাগ করে। সে সময় কয়েকজন গোয়েন্দা পুলিশকে বন্দুক তাক করে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া করতেও দেখা গেছে।
ঘটনা অস্বীকার করে ওসি নূর হোসেন খন্দকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের একটি অংশ গাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিয়ে ও হালকা লাঠিচার্জ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কেউ আহত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্যই এ কাজ করতে হয়েছে।’
বরিশাল অফিস থেকে রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, বরিশাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) ছাত্রীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি। মঙ্গলবার জমা দেওয়ার সময় শেষ হয়েছে। তদন্ত কমিটি অভিযুক্তদের শনাক্ত করার কথা স্বীকার করে জানায়, আরো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দুই দিন সময়ের প্রয়োজন। তবে হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা এ নিয়ে নানা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। কোতোয়ালি থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেনের উপস্থিতিতে ছাত্রীদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। ছবিতে তা স্পষ্ট হলেও হামলার কথা অস্বীকার করে তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ছাত্রীরা সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের ধাওয়া করে। তখন ছাত্রীরা রাস্তায় পড়ে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছে। তাদের ওপর লাঠিচার্জের প্রশ্নই ওঠে না।
তদন্ত কমিটির প্রধান বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপকমিশনার (সদর) শোয়েব আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শী, শিক্ষক ও পুলিশের হাতে আটক ১৪ শিক্ষার্থীসহ ২৭ জনের সাক্ষ্য নিয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সদস্যদের সাক্ষ্যও নেওয়া হয়েছে।
আইএইচটির ছাত্রী হৈমন্তি শুকলা বলেন, ‘আইওয়াশ করার জন্য তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাই প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে না। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিলাম। কিন্তু পুলিশ এসে ছাত্রীদের লাথি মারতে থাকে; আর বন্ধুক দিয়ে পেটাতে থাকে। মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি দেখে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের সহজেই চিহ্নিত করা সম্ভব ছিল। কিন্তু পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তারা তা না করে তাদের বাঁচাতে তদন্তের নামে সময় পার করছেন।’
আইএইচটির অধ্যক্ষ ডা. কুমুদ রঞ্জন বালা বলেন, ছাত্রীদের ওপর পুরুষ পুলিশ সদস্যরা লাঠিচার্জ করেছে। আর এ ঘটনা ঘটেছে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে।
ময়মনসিংহ নার্সিং কলেজের ঘটনায় দায়ী কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক নিয়ামুল কবীর সজল। পাঁচজন আহত শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। অথচ ২৭ অক্টোবরের ওই ঘটনা রীতিমতো অস্বীকার করেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
ওসি ফজলুল করিম বলেন, ‘পুলিশ ওই দিন সেখানে কোনো বাড়াবাড়ি করেনি। কাউকে নির্যাতনও করেনি।’