বঙ্গবন্ধুর খুনীরা এখনো খেতাবধারী
স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের দুজনের নাম এখনো রয়েছে খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায়।
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যানুযায়ী, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় ফাঁসির রায় হওয়া দুইজন আসামি মেজর শরীফুল হকের (মেজর ডালিম) নাম রয়েছে বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায়। অন্যদিকে, হাবিলদার মোসলেম উদ্দিনের নাম রয়েছে বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায়।
এ দিকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য জাতীয় সামরিক জাদুঘরে গেলে দেখো যায়, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বসূচক সম্মানে ভূষিত সেনাবাহিনীর সদস্যের তালিকায় মেজর শরীফুল হকের (ডালিমের) অবস্থান বীরউত্তম খেতাবপ্রাপ্তদের ১৮ নম্বরে (বি.এ. ১০১৭০) রয়েছে। অন্যদিকে, বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকায় নাম পাওয়া যায় হাবিলদার মোসলেম উদ্দিনের। তালিকায় তার নম্বর দেওয়া আছে ৩৯৩৭১৯৩।
এ তালিকাটি ১৫ ডিসেম্বর ১৯৭৩ সালের গেজট অনুযায়ী তৈরি করা হয়।
এ প্রসঙ্গে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এমনটি যদি হয়ে থাকে অবশ্যই তাদের খেতাব বাতিল করা হবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টারা কেন এতদিন বিষয়টি নজরে আনেনি তা খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি আমি প্রধানমন্ত্রীর নজরে নিব। আশাকরি খুব শিগগির সরকারি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাদের খেতাব বাতিল করা হবে।’
এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুল মজিদ ভূইয়া তার ব্যক্তিগত অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, ‘যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার নায়ককে হত্যা করেছেন। তাদের খেতাব বাতিল করা উচিত। তারা হয়তো দেশ স্বাধীনতার জন্য সম্মান পেয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার মাধ্যমে বিলীন হয়েছে।’
তবে এ সব বিষয়ে কথা বলতে রাজি নন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও মুক্তিযোদ্ধা নেতারা। বিষয়টি জানতে চেয়ে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার প্রধান কৌঁসুলি ও বর্তমান আইনমন্ত্রীকে ফোন করা হলে তিনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘এভাবে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না। আপনি ডিফেন্স মিনিস্টারকে (প্রধানমন্ত্রী) ফোন দিন। সেনাবাহিনীর বিষয়ে আমি কিছু বলার এখতিয়ার রাখি না।’
একই বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় সংসদের সাবেক ডেপুটি স্পিকার ও বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন (অব.) শওকত আলী ব্যস্ততার দোহাই দিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যান।