তিনি অর্থমন্ত্রীর ভগ্নিপতি, তাই…
অধ্যাপক আতফুল হাই শিবলী দুই মেয়াদে টানা ৬ বছর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য ছিলেন। গত ৬ ডিসেম্বর দ্বিতীয়বারের মতো ইউজিসিতে তার মেয়াদ শেষ হয়। এখন তৃতীয়বারের মতো আবারও তাকে সদস্য নিয়োগ দেওয়ার সুপারিশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী।
ইউজিসিতে দায়িত্ব পালনের সময় আতফুল হাইয়ের বিরুদ্ধে প্রভাব-বলয় তৈরি করে দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
ইউজিসি সূত্রে জানা গেছে, আতফুল হাই অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভগ্নিপতি হওয়ায় প্রতিষ্ঠানটিতে আলাদা প্রভাব তৈরি করতে সক্ষম হন। এরই ধারাবাহিকতায় দ্বিতীয়বার নিয়োগ পান। এখন আবার তৃতীয়বার নিয়োগে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইতোমধ্যে ইউজিসির চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরী অর্থমন্ত্রীর এই ভগ্নিপতিকে তৃতীয়বারের মতো নিয়োগ দেওয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আতফুল হাইকে তৃতীয়বারের মতো ইউজিসি সদস্য নিয়োগে কোনো আইনি জটিলতা তৈরি হবে কিনা তা জানতে চেয়ে আইন মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, আতফুল হাইকে তৃতীয়বারের মতো নিয়োগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে সবুজ সংকেত পাওয়া যাচ্ছে না। কিন্তু তারপরও আতফুল হাইয়ের পক্ষ নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান।
সূত্র জানায়, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসির কর্মকর্তারাও আতফুলকে তৃতীয়বারের মতো সদস্য হিসেবে দেখতে চান না। তবে অর্থমন্ত্রীর ভগ্নিপতি হওয়ায় আতফুল হাইকে ইউজিসিতে রাখতে বিশেষ আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান।
এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, আগামী বছরের জুন মাসে এ কে আজাদের মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে। তিনি নিজেও দ্বিতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ পেতে এবং প্রভাব ধরে রাখতে আতফুল হাইয়ের মতো ক্ষমতাধরকে পাশে রাখতে চান।
ইউজিসির আরেক সদস্য অধ্যাপক মুহিবুর রহমান ২ অক্টোবর মেয়াদ পূর্ণ করেন। তাকেও দ্বিতীয়বারের মতো নিয়োগ দানের চেষ্টা চলছে।
এই বিষয়ে ইউজিসির চেয়ারম্যান এ কে আজাদ চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পড়েন—
ইউজিসির সদ্যবিদায়ী দুই সদস্যকে পুনরায় একই পদে বহালে আপনি সুপারিশ করতে পারেন কি?
আমি কি পারি, না পারি সেটা আপনার জানার দরকার কি?
গণমাধ্যম হিসেবে জানতে চাই?
আপনার এগুলো জানার দরকার নাই।
মানুষের জানার অধিকার আছে?
আমি কোনো মন্তব্য করতে পারব না।
জানা গেছে, অর্থমন্ত্রীর ভগ্নিপতি হওয়াতেই আতফুল হাই শিবলীকে বার বার ইউজিসিতে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে?
বলেছি তো, এই সব বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে পারবো না। ইয়েস নো কিংবা হ্যাঁ না কিছুই বলতে পারব না।
প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসেবে বিষয়গুলো আপনার অধীনে। তাই আপনার কাছে আমরা জানতে চাইবো …
কোন মন্তব্য নাই। যা ইচ্ছা তাই লিখে দেন।
আমরা তা করতে চাই না
আপনারা তাই করছেন। মিডিয়া অনধিকার চর্চা করছে।
এটা ঠিক বলেননি
আমি বলেছি তো, আমি কোনো মন্তব্য করব না।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আতফুল হাই শিবলী নিজে বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেন। ইউজিসির কয়েকজন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি কয়েকটি তদন্ত কমিটিতে ছিলাম। এমন অভিযোগ কারো থাকতে পারে।’