রাতে দেহ ব্যবসায়ী দিনে ছাত্রী
বাংলাদেশে অন্যান্য পেশার মতো দেহ ব্যবসাও যেন নারীদের একটা পেশায় পরিণত হয়ে গেছে। সার্টিফিকেট প্রদর্শনের মাধ্যমে অন্য চাকুরী জোগাড় করে মেয়েরা। তবে এই পেশায় সার্টিফিকেট দরকার নেই। দরকার নিজেকে অন্যের ভোগ্য পণ্যে পরিণত করার অদম্য সাহস। আর এই পেশায় যারা বড় ব্যবসায়ী তাদের থাকে সরকারী লাইসেন্স। কি নির্মম পরিহাস! কোন কোন গুণীজন আবার মন্তব্য করে থাকেন পতিতা আছে বলেই সমাজ টিকে আছে!
তবে সবাই যে স্বেচ্ছায় এই পেশায় আসে তা না ।কেউ কেউ ট্র্যাপে পড়েও এই মরণফাঁদে আটকে যায়। যেখানে যাবার অনেক প্রশস্ত পথ উন্মুক্ত থাকলেও ফেরার জন্য সরু গলিও খুঁজে পায় না ভুক্তভোগীরা।
বর্তমানে এই ভয়ানক দেহ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে বাংলাদেশের সরকারী বেসরকারী কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। আমাদের সবার ঘরের আশে পাশেই থাকে নানা লেবাসে পতিতালয়। ছাত্রী, চাকুরে,এনজিও কর্মীর ছদ্মবেশে চলছে পতিতাবৃত্তি। এই সমাজে বাস করছি আমরা। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যোগসাজস ও রহস্যজনক নীরবতার সুযোগে রাজধানী ঢাকার ৪৯টি থানার প্রায় পৌনে ১শ স্পটে ৪ শতাধিক হোটেল ও ২ সহস্রাধিক বাসা-বাড়ী ও ফ্ল্যাটে চলছে জমজমাট দেহ ব্যবসা।আর এর সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা। আর এদের খদ্দের হচ্ছে চাকুরে, পেশাজীবি, ছাত্র সহ সব শ্রেনীর পুরুষ।
বারিধারা বনানী ও গুলশান এলাকার দেড় শতাধিক গেষ্ট হাউজে রাতের বেলায় চলে মদ জুয়া ও দেহ ব্যবসা। কাজ হাসিলের জন্য এখানে আয়োজন করা হয় ওম্মা ওম্মা নাইট, থার্সডে নাইট ও ককটেল পার্টি। এসব পার্টিতে দেশী-বিদেশী কলগার্লরা অংশ নেয়। এছাড়া ৪ শতাধিক হোটেলের পাশাপাশি ২ সহস্রাধিক রেস্তরা, বিউটি পার্লার, ম্যাসেজ পার্লার, ক্লাব, বার, রেষ্ট হাউজ, ফ্ল্যাট ও বাসাবাড়ীতে চলছে দেহ ব্যবসা। জানা যায়, নগরীর ৮৫ ভাগ আবাসিক হোটেলে প্রতিদিন প্রায় ৫ হাজার নারী গণিকাবৃত্তিতে রত।বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীরাও এখন দেহ ব্যবসায় নেমে গেছে।
মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের ফ্ল্যাট বাসাগুলোতে পতিতা বৃত্তি বেশী চলে।তাছাড়া বিভিন্ন পাঁচ তারকা হোটেলে মনোরঞ্জনের কাজে ব্যস্ত থাকে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীরা তাদের খদ্দেরকে নিয়ে। গুলশান, নিকেতন, ধানমণ্ডি, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় এইরকম প্রায় ১৯ টি ফ্ল্যাট বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে আরেকটি গ্রুপ আছে এসকর্ট (চাহিদামত খদ্দেরের সুবিধাজনক স্থানে) সার্ভিস দিয়ে থাকে।মিনি পতিতালয় গুলোতে দেহ ব্যবসার পাশাপাশি মাদকদ্রব্যের ব্যবহারও হয় ব্যাপক। হোটেলের আসরে বাংলা মদ থেকে শুরু করে দামী গ্রীন লেবেল, হুইস্কি রয়াল সেলুট ও জীন ভোদকাসহ সবই থাকে। সাধারণ মানুষের চোখে ফাঁকি দিতে হোটেল নাইট এ্যাংগেল থেকে কোক, পেপসী ও আরসি কোলার খালি বোতলে মদ কিনে নিয়ে যায় খদ্দররা।
এসব অনাচার চলতে থাকলে সমাজের প্রতিটি ঘরে থাকবে পতিত ভাই, পতিত স্বামী, পতিত পিতা; যাদেরকে পুরুষ হওয়ায় আপাত দৃষ্টিতে কেউ যৌনকর্মীদের মতো পতিত না বললেও আসলেই তারা দেহ ব্যবসায়ীদের মতোই সমাজের পতিত প্রাণী ।তাই সামাজিক অবক্ষয় সৃষ্টিকারী এসবকাজে লাইসেন্স না দিয়ে বর্তমান পতিতাদের সঠিক পুনর্বাসনের মাধ্যমে যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেয়া জরুরী পরিবার ও সমাজে সুষ্ঠু বন্ধন ও বিশ্বাস টিকে রাখার জন্য।