খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলা পূর্বপরিকল্পিত: মির্জা ফখরুল
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত বলে অভিযোগ করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আদালতে হাজিরা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুপুরে বিএনপি, ছাত্রলীগ ও পুলিশের মধ্যকার সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে দলের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
ফখরুল বলেন, এ ‘অবৈধ’ সরকারের প্রধানমন্ত্রী গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে ফেরার পর এ ঘটনা ঘটেছে। তারা চেয়েছিল খালেদা জিয়ার গাড়িতে হামলা করতে। কিন্তু জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানে তারা সফল হয়নি। কিন্তু এটা সবার কাছে স্পষ্ট, এ হামলা পূর্বপরিকল্পিত।
তিনি বলেন, সরকারের আসলে কোনো নৈতিক ভিত্তি নেই বিধায় তারা ভিন্নমতের লোকজনকে দমন-নিপীড়ন করছে। গণআন্দোলন দমাতে তারা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে।
এই আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সরকারকে এ ধরনের আচরণ থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, সরকারের এমন কার্যকলাপে কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার তাদের ওপরই বর্তাবে।
ফখরুল বলেন, মূল পরিকল্পনা ছিল দেশনেত্রীর গাড়িবহরে হামলা। আপনারা দেখেছেন তার গাড়িবহর সেখানে পৌঁছানোর পাঁচ মিনিট আগে থেকেই আক্রমণ শুরু হয়।
তবে জনগণের ‘স্বতঃস্ফূর্ত অবস্থানের’ কারণে সরকার সমর্থকদের ওই ‘আক্রমণ’ সফল হয়নি বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, পরে জনগণের ওপর আক্রমণ চালিয়ে ছয় শতাধিক মানুষকে তারা আহত করেছে।
মঙ্গলবার রাতে গাজীপুরে খালেদা জিয়ার জনসভার প্রস্তুতি নেওয়ার সময়ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
দুই দুর্নীতির মামলার শুনানির দিন থাকায় বেলা ১১টা ২৬ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপারস খালেদা জিয়া গুলশানের বাসা থেকে আদালতের পথে রওনা হন। তার আসার খবরে বিএনপি ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সকাল থেকেই বকশীবাজার থেকে ফজলে রাব্বি হল পর্যন্ত রাস্তা আটকে মিছিল শুরু করে। এই মিছিলের মধ্যেই বকশী বাজার মোড়ে হঠাৎ শুরু হয় সংঘর্ষ।
এ সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ কর্মীদের মধ্যে বৃষ্টির মতো ঢিল ছোড়াছুড়ি চলে। সড়ক দ্বীপের গাছ ও বেড়া ভেঙে লাঠি বানিয়ে দুই পক্ষ মারামারিতে লিপ্ত হয়। পরে পুলিশ লাঠিপেটা করে এবং ফাঁকা গুলি ও টিয়ার শেল ছুড়ে তাদের সরিয়ে দেয়।
এরই ফাঁকে খালেদা জিয়ার গাড়ি বহর ওই এলাকা পার হয়ে আদালতে যায়। এ সময় বিএনপির একদল কর্মীকে লাঠি হাতে গাড়ির সামনে সামনে এগোতে দেখা যায়। তাকে নিরাপত্তা দিতে সামনে পেছনে পুলিশের গাড়িও ছিল। শুনানি শেষে ঘণ্টাখানেক পর ওই পথ দিয়েই নির্বিঘ্নে গুলশানে ফেরেন বিএনপি চেয়ারপারসন।